গত বিশ্বকাপে যদি বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে পারে, তবে এই বিশ্বকাপেতো আরো ভাল করার কথা। এখন বাংলাদেশের সবকিছুতে এক ধরনের বাতিকগ্রস্থতা থাকে। এই দেশে যখন তখন এখানে সেখানে মৃগী রোগীর মত ঘটনা ঘটে। বহু ব্যাপারেই একটি যন্ত্রণাদায়ক অস্বাভাবীকতা বিরাজমান থাকে। এখানে তাই প্রত্যাশা, ভালবাসার ব্যাপারটিতে কৃত্রিম প্রভোকশন বিরাজমান।
সম্ভবত বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাপারগুলোতে একধরনের ভন্ডামী বেরেই চলছে। এই ভন্ডামী ও দলীয় বিবেচনা ১৬ কোটি মানুষের একমাত্র আশা ভরসা ও প্রত্যাশার জায়গাতে শেষ পর্যন্ত লজ্জাজনক কালিমা লেপন করল। আজকে ইমরুল কায়েসের আউটটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান এই রকম দায়ীত্ব জ্ঞানহীন ভাবে খেলতে পারে! ইংল্যান্ডের সাথে একটু ভাল ব্যাট করে যখন কোন প্রয়োজন নেই তখন অতি আগ্রহের সাথে দুরান নিতে গিয়ে দায়ীত্বহীনভাবে আউট হয়ে দলকে বিপদগ্রস্ত করে পরাজয় ডংকা বাজিয়ে চলে যাওয়া এই ব্যাটসম্যানকে ম্যাচ শেষে যখন ম্যান অব দি ম্যাচ ঘোষনা করা হল তখনই আমার হৃদয়টা কেমন জানি ব্যাথায় চিন চিন করে উঠল। আয়ারল্যান্ডের সাথে ম্যাচ জেতার নায়ক শফিউলকে যখন এই ম্যাচেও ম্যান অব দি ম্যাচ পুরস্কার দেয়া হলনা।
তখন আমার কাছে কেমন জানি অস্বাভাবীক মনে হল। শফিউল ছিল সেই ম্যাচের সংকট থেকে উত্তরণের নায়ক। যখন অনেক দর্শকরা বাংলাদেশের পরাজয় নিশ্চিত মনে করে চলে যাচ্ছিল একে একে সে পর্যায়ে নায়কের ভূমিকায় অতি সহজভাবে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে আসা সেই সফল নাবিক বল ও ব্যাট হাতে সমান সফল শফিউলকে ম্যান অব দি ম্যাচ না দিয়ে ক্রিকেটকে অপমান করা হয়েছিল। অপমান করা হয়েছিল স্বভাবসুলভ খেলার ন্যাচারাল ব্যাপারটিকে। অপমান করা হয়েছে দায়ীত্ব ও সাহসের ব্যাপারটিকে।
আর তাই আজকের ম্যাচে দেখা গেল আত্মসমার্পানের অসাধারণ দৃশ্যবলী। ইমরুল কায়েস মনে হল চোখদুটো ড্রেসিং রুমে রেখে মাঠে ব্যাট করতে গিয়েছিল। শাহরিয়ার নাফিস তার সেই ঐতিহ্যবাহী ইনসাইডএজ আউট। তারপর দৃষ্টি নন্দন শৈল্পিক আসা যাওয়া। এই আসা যাওয়ার মাঝে যা আছে তা হল বেদনায় ও লজ্জায় নুয়ে পড়া ১৮ কোটি মানুষ।
আমরা খেলা চাই, আর তাই খেলায় জয় পরাজয় থাকবেই। কিন্তু যখন টাইগার টাইটেল যুক্ত দলটি লড়াতো দূরের কথা ইদূরের মত আসা যাওয়া করতে থাকে। তখন নভোজাট সিডুর মত বাংলাদেশ বিদ্বেষী নড়ে চড়ে বসে, ঠোঠের কোণে চিকন হাসি তীক্ষ্ণ হয় তার। মুখ দিয়ে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশের মানুষকে অপমানের ভাষাগুলো তুবরীর মত ফুটতে থাকে। তখনই আমরা অপমানিত, ব্যাথিত হই।
কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলোয়াড়দের মধ্যেতো প্রতিভার কোন অভাব নেই। ইংল্যান্ড অষ্ট্রোলিয়ার ক্রিকেট ভাষ্যকারতো সকাল বিকাল তাই বলতে বলতে গলদঘর্ম হয়। কিন্তু তারপরেও কি যেন তার খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে পারছেনা, কোথায় যেন একটি অস্বাভাবিক ক্ষত বিদ্যমান। শুধু ক্রিকেট নয় সব ব্যাপারেই। আর তাই বাংলাদেশকে নিয়ে যে স্বপ্নই দেখা হয়।
তীরে আসার আগেই সে স্বপ্ন ছিনতাই হয়। একবার নয় বারবারই...... হ্যা বারবার এরকম হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।