আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'জাহান মণি'র মুক্তিপণ ২৮ কোটি টাকা.......সমকাল এর খবর



মুক্তিপণ হিসেবে ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৮ কোটি টাকা) হাতে পাওয়ার পর সোমালিয়ার জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজ 'জাহান মণি' তাদের জিম্মা থেকে ছেড়ে দিচ্ছে। রোববার মধ্যরাতে জাহাজটি মুক্ত হয়ে বাংলাদেশি নাবিকদের নিয়ে আরব আমিরাতের ফুজাইরাহ বন্দরের দিকে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। এ বন্দরে জাহাজটি আসতে লাগবে প্রায় ৫ দিন। ফুজাইরাহ বন্দরে এসে জাহান মণি থেকে মুক্ত হয়ে ২৬ বাংলাদেশি দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন। তাদের পরিবর্তে নতুন নাবিকরা জাহাজে আরোহণ করবেন।

এ ব্যাপারে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষের মুখপত্র ব্রেভরয়েল শিপিংয়ের মহাব্যবস্থাপক মেহেরুল করিম বলেন, 'সবকিছু ঠিক থাকলে জিম্মিসহ জাহান মণি জাহাজ রোববার মধ্যরাতে জলদস্যুরা ছেড়ে দেবে। তাদের দাবিমতো সবকিছু করা হয়েছে। জাহাজটি ছেড়ে দেওয়ার সিগন্যাল পেলেই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সব কিছু জানাব। ' তিনি বলেন, 'আমাদের সঙ্গে যেভাবে আলাপ-আলোচনা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে নিশ্চিত হয়েছি, জিম্মিসহ জাহান মণি মুক্ত হওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। তারপরও ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরই বলতে পারব সবকিছু কথামতো হয়েছে।

' গত ৫ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরের লাক্ষার দ্বীপ থেকে সোমালিয়ার জলদস্যুরা ২৫ বাংলাদেশি নাবিক ও এক নাবিকের স্ত্রীসহ জাহাজটি ছিনতাই করে। ৪৩ হাজার টন আকরিক খনিজ নিয়ে জাহাজটি ইন্দোনেশিয়া থেকে গ্রিস যাচ্ছিল। জাহাজ ও নাবিকদের মুক্তিপণ দাবি করে জলদস্যুরা মালিক পক্ষের কাছে জানিয়ে দেয়, ৯০ মিলিয়ন ডলার না পেলে জাহাজ ও নাবিকদের ছাড়বে না। এরপর দীর্ঘ দুই মাস ধরে চলে দরকষাকষি। ব্যাপক দরকষাকষির পর ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৮ কোটি টাকা) দিয়ে জিম্মি মুক্তির দফারফা হয় বলে দায়িত্বশীল সূত্র জানায়।

তবে এ ব্যাপারে জাহাজ মালিক বা জিম্মি পরিবারের কেউ মুখ খুলছেন না। এর আগে মালিক কর্তৃপক্ষ একবার ৩৫ কোটি টাকা এবং একবার ২৮ কোটি টাকা দিয়েই জিম্মিদের মুক্ত করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের কাছে উল্লেখ করেছিল। হেলিকপ্টারে মুক্তিপণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, অত্যন্ত গোপনীয়ভাবেই সবকিছু করা হয়েছে। মধ্যস্থতা করার জন্য জলদস্যুদের নিজস্ব কিছু লোক বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এসব লোক কোন এলাকায় কারা যাবেন, মুক্তিপণ কীভাবে আসবে, কার হাতে দেবে_ সব ব্যাপারে অভিজ্ঞ।

বাংলাদেশিদের ব্যাপারে পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে জাহাজ মালিকপক্ষ। তাদের পক্ষ থেকে মুক্তিপণের টাকা ইতিমধ্যে সোমালিয়ায় পেঁৗছানো হয়েছে। সোমালিয়া থেকে সিগন্যাল মতো হেলিকপ্টারে ডলার যাবে জলদস্যুদের হাতে। ইতিমধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। জাহাজ মালিকপক্ষ যাবে ফুজাইরাহ জানা গেছে, মুক্তিপণের টাকা নিয়ে রোববার মধ্যরাতে জাহান মণি ছেড়ে দেবে জলদস্যুরা।

এ জাহাজটি তেল নিতে নোঙর করবে ফুজাইরাহ বন্দরে। ওই বন্দরে নাবিকদের গ্রহণ করবেন ব্রেভরয়েল শিপিংয়ের কর্মকর্তা মেহেরুল করিম। জিম্মিদের নিয়েই তিনি সরাসরি দেশে আসবেন। আলোচিত সেই ২৬ জিম্মি 'জাহান মণি' জাহাজে স্ত্রী রোখসানা গুলজারসহ জিম্মি হয়ে আছেন চিফ ইঞ্জিনিয়ার মতিউল মাওলা। আরও জিম্মি হলেন ক্যাপ্টেন ফরিদ আহমেদ, চিফ অফিসার আবু নাছের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার, সেকেন্ড অফিসার জিএম নুর-ই আলম, থার্ড অফিসার মোঃ কামরুল হোসাইন, ডেক ক্যাডেট শরীফুল ইসলাম, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মাঈনউদ্দিন, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত কুমার মণ্ডল, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তারিকুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সাহাবু আলম, ইঞ্জিন ক্যাডেট শাহরিয়ার রাবি্ব, ডেক সারেং মুহাম্মদ রুহুল আমিন, সিম্যান মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন, সিম্যান মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সিম্যান আবদুল ফাতাহ, ত্রুক্র রবিউল ইসলাম, গ্রোসার ফখরুল ইসলাম, কিবরিয়া আহমেদ, ফায়ারম্যান মোঃ ইলিয়াছ, চিফ কুক মোঃ মশিউর রহমান, জেনারেল স্টুয়ার্ট জসিম উদ্দিন, ডেক ফাইটার মোঃ ইদ্রিস, ইঞ্জিন ফাইটার মোঃ মহিউদ্দিন, জুনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবুল হোসেন ও সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশার।

তারা সবাই সুস্থ আছেন জাহাজ মালিক সূত্রে জানা গেছে, জিম্মিরা সবাই সুস্থ আছেন। তারপরও মুক্ত হওয়ার পর তাদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। তবে জলদস্যুরা তাদের কারও কোনো ক্ষতি করেনি। একমাত্র খাওয়ার ব্যাপারে সমস্যা ছাড়া অন্য কোনো ঝুঁকিতে ছিলেন না জিম্মিরা। জিম্মি পরিবারগুলো এখন আর মুখ খুলছে না।

তাদের কোনো মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়েছে। http://www.samakal.com.bd/ সোমবার | ১৪ মার্চ ২০১১

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.