আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তিপণের টাকা হস্তান্তর যেকোনো সময় মুক্তি পাচ্ছেন জাহানমণির ২৬ নাবিক



যেভাবেই হউক তারা তুক্তি পেয়েছেন। এখন তারা যেন সুন্দর ও সুস্থ্য ভাবে দেশে ফিরে আসেন সেই কমনা করি। একই সাথে সবার কাছে অনুরোধ তাদের জন্য দোয়া করুন। দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজ জাহানমণির ২৫ নাবিকসহ ২৬ বাংলাদেশির মুক্তির জন্য সোমালিয়ার জলদস্যুদের দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা (মার্কিন ডলার) হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে এই টাকা জলদস্যুদের হাতে পৌঁছেছে।

সোমালিয়ায় গারাকাদ বন্দরে জলদস্যুদের আস্তানায় ৩ মাস যাবৎ বন্দি নাবিকসহ জাহাজটি আগামীকাল অথবা পরদিন সোমবারের মধ্যে যে কোন সময় মুক্তি পেতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে জাহাজ মালিক প্রতিষ্ঠান ব্রেভ রয়েল শিপিং ম্যানেজমেন্ট (বিডি) লিমিটেডের একটি সূত্র। এদিকে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল আজ বিকেলে তার দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আশা প্রকাশ করেছেন, তারা রবি অথবা সোমবার মুক্তি পাচ্ছেন । প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক মেহেরুল করিম বলেছেন, সব প্রক্রিয়াই শেষ, নাবিকদের মুক্তির ব্যাপারটি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আশা করছি আগামীকাল থেকে পরদিন সোমবারের মধ্যে তারা ছাড়া পাবেন। মুক্তিপণ নিয়ে কথা বলতে তিনি রাজি হননি।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আটক ২৬ জন বেঁচে আছেন এবং সুস্থ্য আছেন তা প্রমাণ করতে জলদস্যুরা তাদের তিনটি গ্রুপ ছবি পাঠায় জাহান মণির মালিক পক্ষের কাছে। এদিকে মুক্তিপণের টাকার পরিমাণ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য জানাগেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, জলদস্যুদের ৪০ লাখ মার্কিন ডলার দেয়া হয়েছে। তবে মালিকপক্ষ জানিয়েছে তারা ৭ লাখ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দিয়েছেন। সূত্র জানায়, লন্ডনভিত্তিক মধ্যস্থতাকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা হস্তান্তর করা হয়।

জাহানমণির ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠান-আন্তর্জাতিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী "লয়েন্ডস" মুক্তিপণের টাকার বিশাল একটি অংশ দিয়েছেন। সূত্র মতে, শুধুমাত্র লন্ডন ছাড়া সব দেশেই ব্যাংক থেকে মোটা অংকের অর্থ উত্তোলন কালে কারণ উল্লেখ করতে হয়। মুক্তিপণের এই বিশাল অর্থ আইনি জটিলতা এড়াতে লন্ডনের একটি অন্তর্জাতিক ব্যাংক থেকে উত্তোলন কারা হয়েছে। পরে তা বিশেষ ব্যবস্থায় প্যাকেট করে হেলিকপ্টার থেকে জাহাজে ফেলা হয়। তবে জাহাজটি কয়েকদিন আগেই সোমালিয়ার গারাকাদ বন্দরে থেকে ৮/১০ কিঃ মিঃ দূরে অন্য একটি বন্দরে চলে যায়।

সেখানে মুক্তিপণ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে মাত্র ৩ মাসের মাথায় দ্রুত সময়ে জাহানমণি উদ্ধার এবং নাবিকদের মুক্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার ব্যাপারটি সর্বত্র এখন আলোচিত হচ্ছে। কারণ এই পর্যন্ত সোমালিয়ার জলদস্যূদের হাতে যে সকল বিদেশী জাহাজ হাইজ্যাক হয়েছে তার একেকটির উদ্ধার করতে সময় লেগেছে ৯ মাস থেকে ২বছর পর্যন্ত। কিন্তু জাহান মণির ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম ঘটছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রেভ রয়েল শিপিং ম্যানেজমেন্ট (বিডি) কর্তৃপক্ষ জানান, সরকারের সার্বিক কুটনৈতিক তৎপরতা এবং নাবিক পরিবারের সহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়েছে।

জানাগেছে, মুক্তির পাওয়ার পর পর জাহানমনির নাবিকদের নিয়ে জাহাজটি ওমান কিংবা দুবাইয়ের যে কোন একটি বন্দরে ভিড়বে। সেখান থেকে বিমানেই দেশে ফিরবেন নাবিকরা। এজন্য ভিসা সংক্রান্ত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ব্রেভ রয়েল শিপিং মুক্তির পর সোমালিয়া থেকে ওমান বন্দরে যেতে ৫দিন অথবা দুবাইয়ের বন্দরে পৌছতে নাবিকদের ৮ দিন সময় লাগতে পারে। প্রসঙ্গতঃ গত ৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে পণ্য নিয়ে স্যুয়েজ খাল হয়ে গ্রিস যাওয়ার পথে ৪৩ হাজার টনের বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজটি ভারতের কোচিন বন্দরের নিকটবর্তী লাক্ষাদ্বীপের কাছে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি জাহান মণি।

জলদস্যুরা প্রথমে ৯০ লাখ মার্কিন ডলার মুক্তপণ দাবি করেছিল। মুক্তিপণ পাওয়ার পরই নাবিকদের মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে দস্যূরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.