আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংবাদ বিভ্রান্তির আরো দুইটি সূত্র

কবিতা/ গল্প/ উপন্যাস/ প্রবন্ধ/ অন্যান্য

‘‘ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে’’ মেধাবী যুবকের এইচএসসি পাসের গল্পটি আমি আগেও কয়েকটি লেখায় উল্লেখ্য করেছিলাম। সংবাদ প্রকাশ নিয়ে পাঠক বিভ্রান্তির দুইটি সূত্র নিয়ে সম্প্রতি একটি লেখা আমার ব্লগে প্রকাশের পর আমার পরিচিত এক ব্যক্তি সংবাদ বিভ্রান্তির কয়েকটি গল্পের উপাদান দিয়েছে। এর সাথে যোগ হয়েছে নতুন কিছু অভিজ্ঞতাও। আর এসব অভিজ্ঞতার ভেতরে আমার ‘‘ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে’’ মেধাবী যুবকের এইচএসসি পাসের গল্পটি মনে পড়েছে। গল্পটি ছিল এরূপ : ওনি অনেক বড় মাপের শিক্ষিত ব্যক্তি।

এসএসসি ও এইচএসসিতে বোর্ডের মেধা তালিকায় র্শীর্ষে ছিলেন। তারপর বিদেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে দেশে ফিরেছেন। একদিন বিকেলে কক্সবাজার জেলার পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ দৌলত ময়দানে বেশ কয়েকজন তরুনের সাথে বসে তার সাথে আমার পরিচয়। ভদ্রলোক এখন ব্যবসা করেন। শুনে ভালো লাগলো, যা হোক মেধাবী হওয়ার পর চাকুরীর পেছনে না ঘুরে তিনি ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন।

কিন্তু আড্ডার ফাঁকে একজন তাকে প্রশ্ন করলেন, ‘‘ভাই আপনি এইচএসসি কোন কলেজ থেকে পাস করেছেন?’’ তিনি উত্তর দিলেন- ‘‘ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে’’। উপস্থিত সকলেই এক সঙ্গে হেসে উঠলেন। সাথে তিনিও হাসলেন। স্বাভাবিকভাবে আমরা একটি প্রবাদ সকলেই জানি। প্রবাদ রয়েছে ‘বোকারা তিন বার হাসেন’।

সংবাদ প্রকাশের বিভ্রান্তি নিয়ে সেই বোকাদের দলভূক্ত মানুষ আমি চিহ্নিত করতে পারি। আমি নাম উল্লেখ্য করে পরিচিত করে দিতে পারি সেই বড় মাপের শিক্ষিত এবং অভিজ্ঞদের। যারা ‘‘ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে’’ মেধাবী যুবকের এইচএসসি পাসের মতো যোগ্য। তারা এ যোগ্যতা প্রমাণ দিচ্ছে পাঠক বিভ্রান্তিমুলক সংবাদ পরিবেশন এবং কপি-পেস্ট সূত্রের প্রয়োগের মাধ্যমে। আর তার সাথে প্রচলিত ধারণা লালনটি সূত্রটিও প্রয়োগ করছেন তারা।

এর বাইরে ভুল তথ্যের প্রয়োগ সূত্র, বনোয়াট গল্প সূত্র দেখা গেছে। আমি নিজেইও এ বিভ্রান্তির কবলে পড়েছিলাম ২০০১ সালের শুরুতে। তখন কক্সবাজার শহরে নতুন একটি দৈনিক পত্রিকা বের হচ্ছে। পত্রিকা বাজারে আসার আগে থেকে আমি ওখানে কাজ করি। বলতে গেলে ওই পত্রিকাটির জন্ম আমার হাত ধরে।

পত্রিকা বাজারে আসার মাসখানিক পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হয়। তফসিল ঘোষণার পর উখিয়া থেকে ওই পত্রিকার প্রতিনিধি একটি সংবাদ লেখে পাঠায়। সংবাদটি বলা হয়, একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী কানের খত দিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন। ওই সংবাদটি পরিবেশন না করার পক্ষে আমি সম্পাদককে বললাম। কিন্তু কার কথা কে শুনে।

সম্পাদক প্রবীন মানুষ। তিনি অনেক অভিজ্ঞ। আমার মতো নবীনের কথা তিনি মানতে রাজী নন। পরেদিন প্রথম পৃষ্ঠায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরেই জানা গেলে সত্যটি।

ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী কানে খত দেয়া তো দূূরের কথা মনোনয়ন পত্রও প্রত্যাহার করেননি তিনি। ফলে সংবাদ প্রকাশের দিন ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদি হয়ে আদালতে পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর জের ধরে আমি ওই পত্রিকার চাকুরী ছেড়ে দিয়েছিলাম। যদিও পরে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে সমঝোতা করে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এমনকি ওই নির্বাচনে কানের খত দিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছে বলে সংবাদে উল্লেখ্য করা প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এটিকে বানোয়াট গল্প বলে আমার কাছে বিশ্বাস হয়েছিল। এর আগে একটি সংবাদ বিভ্রান্তির গল্প আমার জানা আছে। যদিও তখন এ পেশার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল। ১৯৯৫ সালের মাঝা-মাঝি কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকার একটি কপি আমি দেখেছিলাম ২০০৩ সালে দিকে। নানা কারণে এক দম্পতির সাথে আমার পরিচয়।

পরিচয়ের সূত্র ধরে ১৯৯৫ সালের পত্রিকার কপিটি তাদের একজন আমাকে দেখিছেন ২০০৩ সালে। ওই পত্রিকার একটি সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘গৃহ শিক্ষকের হাত ধরে গৃহনীর পালায়ন’। আমার পরিচিত দম্পতিটি ছিল ওই সংবাদের নায়ক-নায়িকা। সংবাদে গৃহ শিক্ষক অথবা গৃহনীর পালায়নের তথ্যটি একেকারে ভুল এবং বানানো। মুলত নায়ক ছিলেন একজন লাইব্রেরীর মালিক এবং নায়িকা ছিল কলেজ ছাত্রী।

আর এ সূত্রটি নাম দিয়েছি ভুল তথ্য প্রয়োগ। পাঠকের জন্য : ব্লগে লেখা আড়ের দুইটি সূত্রের সাথে আরো দুইটি সূত্র যোগ করা হল পাঠকের জন্য। তার সাথে ৩১ জুলাই প্রশাসনের আরো একটি অনুষ্ঠানের কথা বলতে চাই। অনুষ্ঠানে সাংবাদিক হিসেবে অনেকেই আমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নিয়েছেন। এ সংবাদটি ১ আগস্ট কক্সবাজারের একটি অনলাইন ছাড়া আর কোন পত্রিকায় চোখে পড়েনি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.