আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আগের সংবাদ পরের সংবাদ»



12thanniversary inner ঘর-মন-জানালা ভয়ংকর এক রাতে | তারিখ: ০৪-১২-২০১০ * ০ মন্তব্য * প্রিন্ট * ShareThis « আগের সংবাদ পরের সংবাদ» পায়ের ওপর দিয়ে কী যেন একটা সুড়ুত করে চলে গেল। কেমন যেন ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভূতি। সাপ নয় তো! ভয়ে লাফিয়ে সোফার ওপর উঠতেই দেখলাম আয়েশ করে দুটি টিকটিকি ড্যাব ড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, ভাবখানা এমন যেন আমায় বলছে, কিরে, কেমন ভয় পাইয়ে দিলাম দেখলি! তাই তো, এত বড় বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলায় সাপই বা আসবে কোত্থেকে? সেদিন রাতে বাসায় কেউ ছিল না। সকাল ১০টায় সাহেব রওনা হয়েছেন চট্টগ্রামের উদ্দেশে। রাত বাজে তখন ১১টা।

আরাম করে বসে চুপচাপ টেলিভিশন দেখছিলাম। টিকটিকিটা ভয় ধরিয়ে দিল। ঘরের সব আলো নেভানো। একটু একটু ভয় পাচ্ছি। তার পরও সাহস জোগাতে ভাবলাম একটা রাতই তো।

জেগেই কাটিয়ে দেওয়া যাবে। ভোর হতেই আমার ছেলে চলে আসবে খুলনা থেকে। সোফায় শুয়ে মনোযোগ দিয়ে আবার টেলিভিশন দেখতে লাগলাম। প্রিয় নায়ক টম ক্রুজের ‘মিশন ইমপসিবল’ চলছিল। আশপাশের বাড়িগুলোর সব আলো নেভানো।

গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে সব। জেগে আছি শুধু আমি। মাঝে মাঝে সেই নীরবতা ভঙ্গ করে ঝড়ের শব্দ ভেসে আসছে। পাশের জানালায় বিশাল এক নারকেলগাছের পাতা বাতাসের ঝাপটায় ছটফট করছে। সাঁই সাঁই শব্দে যেন বুকের হূৎপিণ্ড দুমড়ে-মুচড়ে একাকার হয়ে যেতে চায়।

হঠাৎ মনে হলো কে যেন আলতো হাতে আমার মাথায় হাত বোলাচ্ছে। অনেকটা সুড়সুড়ির মতো। লাফিয়ে উঠলাম, এদিক-সেদিক তাকাতেই দেখলাম বেশ বড়সড় একটা তেলাপোকা। এমন করে করেই ঘড়ির কাঁটা কখন যেন তিনটা ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ওর ফোন এল—‘রাত জেগো না, ঘুমিয়ে পড়ো, ভয়ের কিছু নেই।

কোনো সমস্যা হলে দারোয়ানকে ফোন দিয়ো। আমি সব বুঝিয়ে বলে এসেছি। ’ টেলিভিশন দেখতেও কেন জানি ভালো লাগছিল না। একটু যেন ঘুম ঘুম লাগছে। একটা লেখা লিখছিলাম, সেটাই শেষ করব ভাবছি।

এক কাপ কফির জন্য রান্নাঘরে ঢুকলাম। আলো জ্বালাতেই চমকে উঠলাম। একি! এত রক্ত! রক্ত এল কোত্থেকে? ভয়ানক এক চিৎকার দিয়ে ছিটকে বেরিয়ে এলাম রান্নাঘর থেকে। হাত-পা ঠকঠক করে কাঁপতে লাগল। গলা দিয়ে বেরোতে লাগল পশুর মতো গোঁ গোঁ শব্দ।

শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত নিচে নেমে গেল। ধপ করে মেঝেতে বসে পড়লাম। হিম হিম শীতেও ঘেমে আমি চুপসে একাকার। কেমন করে ইন্টারকমে হাত দিলাম জানি না। দারোয়ান এসে ভয় পেয়ে গেল।

তবুও সাহস করে পরীক্ষা করে দেখল ডিপফ্রিজ থেকে নামানো বাটা মেহেদির রঙে মেঝের অনেকটা জায়গাজুড়ে রক্তের মতো লাল হয়ে আছে। তা দেখে দারোয়ানের মুখে হাসি ফুটল। ততক্ষণে নকশা করা হাতটা চোখের সামনে মেলে ধরতেই সব পরিষ্কার হয়ে গেল আমার কাছে। মনে হলো ওই নকশা করা হাতও আমায় বিদ্রূপ করছে। জিনাত নাজিয়া নাখালপাড়া, ঢাকা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।