“ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে সারা ঢাকা শহরের সৈর্ন্দয্য বৃদ্ধির নামে কোটি কোটি টাকা ঢালা হয়েছে, যা যান্ত্রিক ও অস্থায়ী । কিন্তু প্রকৃত ও স্থায়ী সৈন্দর্য্য বৃদ্ধির দিকে কেউ নজর দেয়নি অবহেলিত ফার্মগেট পার্কটি তার প্রমাণ। ” ফার্মগেট পার্কের বর্তমান অবস্থা সর্ম্পকে এ রকমই ক্ষোভ ঝরে পড়ল একটি বেসরবারী প্রতিষ্ঠানের চাকুরীজীবি ফার্মগেট এলাকার আবাসিক নুসরাত জাহানের কন্ঠে। নুসরাত জাহানের অভিযোগ কতটুকু সত্য বা মিথ্যা আামরা সে বিতর্কে যাচ্ছি না তবে ফার্মগেট পার্কের অবস্থা যে খুবই নাজুক ও এতে কোন সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকা বসবাসের অযোগ্য নগরীর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসছে এটি কোন নতুন খবর নয়।
গত কয়েক বছর পূর্বেও এ অবস্থান ছিল কিছুটা পেছনে। ক্রমাগত নিম্নমুখী প্রবণতার যতগুলো কারণ রয়েছে তারমধ্যে অন্যতম কারণ হল নগরীর সুযোগ সুবিধা এবং আশঙ্কাজনকভাবে গাছের পরিমাণ কমে যাওয়া । যদিও বর্তমান সরকার রাজধানীর সৈর্ন্দয়্য বৃদ্ধির জণ্য নানা মুখী পদক্ষেপ গ্রহন করছে। কিন্ত তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল । রাজধানীর মানুষের জন্য মুক্তভাবে শ্বাস গ্রহন, সবুজের দিকে তাকিয়ে চোখের বিশ্রাাম দেওয়ার জন্য অথবা সৈন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য রাজধানীতে যতগুলোপার্ক রয়েছে তারমধ্যে অন্যতম হল ফার্মগেট পার্ক।
কিন্তু দিনে দিনে অবহেলার কারণে এই পাকটি বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। যা ফার্মগেট এলাকাবাসীর জন্য রীতমত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যে পার্কটি কিছুদিন আগেও সবুজের সমারোহ দিয়ে ফার্মগেট এলাকার সৈর্ন্দয্য বৃদ্ধি¢ করেছিল এবং এই এলাকা বাসীর মুক্তরায়ু সেবনের একমসাত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত ছিল সেটি এখন গাছপালা বিহীন ন্যাড়া একটি খালা মাঠে পরিণত হয়েছে। যেখানে মনের আনন্দে ক্রিকেট খেলছে একঝাক তরুণ। পার্কের বড় বড় গাছগুলো তো বটেই ছোট গাছ এমনকি ফুলগাছও অদৃশ্য হয়ে গেছে ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ কয়েকটি গাছ মরে গেলে সেগুলো কেটে ফেলে সিটি কর্পোরেশন । কিন্তু একই সাথে ঐ সুয়োগে বড় বড় অন্যান্য গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বিলীন হয়ে গেছে পার্কের সৈর্ন্দয্য। এছাড়া পার্কের মধ্যে দর্শনার্থী বা ভ্রমণকরীদের বসার জন্য সিমেন্টের তৈরী বেঞ্চগুলো ভেঙ্গে বসার জন্য একেবারে অনুউপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কয়েকটি মোটামুটি ভাল রয়েছে সেগুলোতে বাদামের খোসা , ঝালমুড়ির প্যাকেট, কাকের বিষ্ঠা, সিগারেটের প্যাকেট ইত্যাদি ময়লা আর্বজনাতে পরিপূর্ণ।
ফলে তৈরী হয়েছে একধরণের বোটকা গন্ধের। অতএব সেখানেও বসারও কোন পরিবেশ নেই। পার্কের মধে যে টিএন্ডটির বোর্ড রয়েছে সেটিট ভেঙ্গে পড়ায় একাংশ কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে। যততত্র ময়লা আর্বজনা ফেলে পুরো পার্কটি এবেবারে আদর্শ ডাষ্টবিনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। যা নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভের সীমা নেই।
তাইতো সেজান পয়েন্টর কাপড়ের ব্যবসাহী জিহাদুল ইসলাম বললেন , “কতৃপক্ষ তো পার্কটি সংস্কারের জন্য কোন উদ্যোগ তো নেয়ই না বরং যে অবস্থায় আছে সেটি ধরে রাখারও কোন চেষ্টা নেই, অথচ প্রতিবার নির্বাচনের পূর্বে সব প্রার্থীর ইশতেহারে ফার্মগেট পার্কের আধুনিকায়নে প্রতিশ্র“ুতি দিয়ে গতানুগতিক নিয়মে তা পরবর্তীতে ভুলে যান। ”
ফার্মগেট পার্কে বসার জন্য যে ছাতা সহ বেঞ্চছিল সেখানে বেঞ্চের কোন অস্থিত্ব নেই। কয়েকটি ছাতারও দন্ড পড়ে আছে কিন্তু কোন ছাউনি নেই। পার্কের ভেতরে কয়েকটি পরিবার অস্থায়ী খূপড়ি ঘর নির্মাণ করেও বসবাস করছে। যাদের নিরাপত্তা ও ঘর তৈরীর অনুমতি নিতে এবং বসবাসের জন্য প্রভাবশালীদের নিকট প্রতিনিয়ত চাঁদা পরিশোধ করতে হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
এছাড়া ভাসমান মানুষ এবং পার্কের আশেপাশে কোন পাবলিক টয়লেট না থাকার কারণে পথচারীরা মলমুত্র ত্যাগকরার জন্য পার্কটিকেই বেছে নেয়। যে কারণে পার্কের পরিবেশ একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ভেঙ্গে গেছে পার্কের সীমানাও । এলাকা বাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে ফার্মগেট পার্কের এমন বেহালদশার কারণে সেখানে কেউ বেড়াতে আসেন না । ফলে পার্কটি হয়ে উঠেছে ভাসমান মানুষ, মাদক সেবন ও বিক্রয় কেন্দ্রের অন্যতম স্পট।
সন্ধ্যার পরই পুরো পার্কটি চলে যায় মাদকসেবীদের দখলে। যারা রাত হলেই নামে ছিনতাইয়ে। মাদকসেবী ও বিক্রয়কারীদের সাথে যোগ হয়েছে দেহ পসারণীদের মেলা। আর এদের সমর্থনে এলাকার প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও সব জেনে রহস্যময় ভূমিকা পালন করছে বলে অভিয়োগ করেছেন অনেকে।
পরিস্থিতি এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে আপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে ফার্মগেট পার্ক। দিনের বেলা এর তেমন কোন চিহ্ন না থাকলেও রাত নামলেই প্রতিদিন ফিরে পায় তার আসল রূপ। একারণে জানাশোনা মানুষেরা সন্ধ্যার পর যথা সম্ভয় এড়িয়ে চলেন পার্কটি।
ফার্মগেট পার্কের এই করুণ দশার জন্য সিটির কর্রোরেশনের অবহেলাকেই দায়ী করেছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ ফার্মগেট এলাকার একমাত্র পার্কটি সংস্কারে কোর উদ্যোগই নেয় না সিটি কর্পোরেশণ।
তা না হলে পার্কটি কোন ভাবেই এমন অবষ। থাতে পরে থাকতে পারে না।
#....................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।