ঢাকার পাশাপাশি সারা দেশের সব বিদ্যুৎ গ্রাহক আসন্ন রমজানে সেহরি ও ইফতারসহ পিক আওয়ারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এ প্রতিশ্রুতি দেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রতিটি জোনের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি পৃথকভাবে তদারক করা হবে। একই স্থানে ইফতার ও সেহরির সময় দুবার লোডশেডিং করা হবে না। যতদূর সম্ভব সেহরি ও ইফতারকে লোডশেডিংয়ের আওতামুক্ত রাখা হবে।
সচিবালয়ে রমজানে বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠকের পর ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রমজানে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে থাকছে হটলাইন ও বিদ্যুৎ বিভাগের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। গ্রাহক চাইলেই হটলাইনের নম্বরে ফোন করে নিজের এলাকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পর্কে অভিযোগ করতে পারবেন। তবে পিক আওয়ারে পানির পাম্প, আয়রন না চালানো ও এসির লোড সীমিত রেখে অন্যদের বিদ্যুৎ পেতে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রমজানে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সিএনজি স্টেশনে গ্যাস বিপণন বন্ধ রাখা হবে।
এতে বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বাড়বে। এছাড়া রমজানে আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সন্ধ্যায় ও গভীর রাতে শিল্প কারখানা আংশিক বন্ধ রাখা হবে। এ সময় শিল্প কারখানা বন্ধ থাকছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলো তদারকি করবে।
উপদেষ্টা বলেন, কোনো কারণে রমজানে বিদ্যুৎ চলে গেলেই তা লোডশেডিং নয়।
এটাকে কারিগরি ত্রুটি মনে করতে হবে। গত রমজানে পরিস্থিতি অনেক ভালো ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবারো আমরা সবাই মিলে রমজানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। ’
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশে বিদ্যুৎ উত্পাদন ছিল সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। এখন তা সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। গ্যাসের উত্পাদন ১ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে বেড়ে ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।
অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বিদ্যুত খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী রমজানে দিনে সাড়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট, সন্ধ্যায় (৬টা থেকে রাত ১১টা) সাড়ে ছয় হাজার ও সেহরির সময় ৬ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য তেল-গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘আমরা অন্যান্য সময় চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বিদ্যুৎ উত্পাদন করে থাকি। কিন্তু রমজানে সর্বোচ্চ উত্পাদনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
’ তিনি আরো বলেন, এখন অনেক মসজিদেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহার হয়। নামাজের পরপরই এসি বন্ধ রাখার পাশাপাশি পানির পাম্প, আয়রন ব্যবহার না করার আহ্বান জানান তিনি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন একটু সাশ্রয়ী হলেই আরেকজন বিদ্যুৎ পাবেন। এসি যদি চালাতেই হয়, তাহলে যেন ২৪ ডিগ্রির উপরে রাখা হয়। তাতেও বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সপ্তাহে এলাকাভিত্তিক শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার নিয়ম কঠোরভাবে প্রতিপালন করা হবে। তবে রমজানে দোকান বন্ধের বিষয়ে দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অন্যবার রমজানে যেভাবে দোকান বন্ধ রাখা হয়, এবারো ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও রেলওয়ে সচিব এবং পেট্রোবাংলা, পিডিবি ও আরইবি চেয়ারম্যান।
সূত্র : বনিক বার্তা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।