শাহাবাগের আন্দোলন যখন শুরু হয় তখন তার ফোকাস ছিল যুদ্ধাপরাধীদের ফাসি। অনেকেই সেই ফোকাসকে সরাতে চেস্টা করেছেন অনেকবার। শাহাবাগের বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর ছিল - বাংলা পরীক্ষার সময় আমরা বাংলা পরীক্ষা দিব। অন্য বিষয়ে পরে দেখব। খুব ভাল লেগেছিল উত্তরটা।
আজকে প্রায় একমাসের কাছাকাছি হলো আন্দোলনের। কেন জানি মনে হচ্ছে ব্যাপারটা পরীক্ষা দেয়ার মত সহজ বা সাদাসিধে ব্যাপার হিসাবে দেখার মূল্য আমরা গোটা জাতি দিচ্ছি - পারস্পরিক ঘৃণা, সন্দেহ, অসহিষ্ণুতা আর সহিংসতা দিয়ে। গত কয়দিনের শাহাবাগের কর্মসূচীর আমি কোন অর্থ খুজে পাচ্ছি না। এত বড় বড় সমাবেশ করছি, শ্লোগান দিচ্ছি, জ্বালাময়ী বক্তব্য দিচ্ছি, বলছি শাহাবাগ সরকারের থেকে শক্তিশালী। কিন্তু প্রায় প্রতিদিনের এত প্রাণ নাশের, সহিংসতার প্রতিকারের কোন দিকনির্দেশনা দিচ্ছি না।
এই বিপুল জনসমর্থন নিয়ে শাহাবাগের নেতারা - যাদের আমরা বঙ্গবন্ধুর সাথেও কেউ কেউ তুলনা করছি - তারা কি সাধারন মানুষের কথা ভাবছেন? আজকে তাদের ডাকে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত কোটি জনতা - কিন্তু সেই কোটি জনতাকে দেয়া দিকনির্দেশনা কই। সমাবেশ, মহাসমাবেশ সবই তো করছি, যেখানে আসতে বলছেন আসছি - কিন্তু এসে কি করব? কিভাবে বাচাবো দেশকে আর নিজেদেরকে?
শাহাবাগের পরীক্ষা শেষ কখন হবে? পরীক্ষা তো নির্দিস্ট সময়ে শেষ হয়। এর শেষ কই। আর কেন যেন মনে হয় - এটা পরীক্ষা না - যুদ্ধ। এখানে প্রয়োজন সবদিক লক্ষ্য রেখে দেয়া দিকনির্দেশনা, সাহসী আর বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত।
আমি জানি না শাহাবাগের নেতৃত্ত্ব এবিষয়ে নজর দিবে কি না? না কি এখনও তারা বাংলা পরীক্ষাতেই আটকে থাকবে?
টেলিভিশনের ফুটেজগুলো দেখুন - কোথাও কিন্তু অল্প সংখক মানুষ নেই। কোন মিছিলই কিন্তু মাত্র দশ/বিশ জনের না। এদের বয়সের দিকে তাকান - এরা ৭১ এর অনেক পরে জন্মেছে। এরা বাংলাদেশী। এত লোক পরিকল্পিত খুনি হতে পারে না।
আমাদের মতের সাথে না মিলতে পারে এদের মত। এদের মৃত্যুকে সমর্থন কিন্তু সংখালঘুদের উপরের আক্রমনকে সমর্থনের মতই। সরকার বা শাহাবাগ - যদি উভয়কেই ধরি সাধারন মানুষের অভিভাবক - তাহলে আপনাদের আরও সক্রিয় ভুমিকা প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।