পিলখানায় ইতিহাসের বর্বরতম ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ড’র দুই বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু এখনও শেষ হয়নি সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার কাজ। ইতিমধ্যে আসামিদের কেউ কেউ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন। আবার কেউ আত্মহত্যা করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিডিআর সপ্তাহের সময় বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া ঢাকার সাথে সাথে দেশের ৪০টি স্থানে বিদ্রোহ হয়। তবে কাপ্তাই, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম সদর, বরকল এমন কয়েকটি স্থাপনায় কোনো বিদ্রোহ হয়নি।
বিদ্রোহে অংশ নেওয়া জওয়ানদের ধরতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় শুরু হওয়া `অপারেশন রেবেল হান্ট` এর মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক হন ২ হাজার ১৯৩ জন। যার মধ্যে ৩৩৯ জন ঢাকায় এবং ১ হাজার ৮৫৪ জন ঢাকার বাইরে।
আটককৃতদের মধ্যে মারা যান ৬৯ জন।
এর মধ্যে ঢাকায় ২৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪০ জন। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৩ জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস এসব দীর্ঘ অসুস্থতার কারণেও ২৮ জন মারা গেছেন বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া হঠাৎ অসুস্থতায় তিন জন, সড়ক দুর্ঘটনায় চার জন, ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ২ জনের আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে। আর আত্মহত্যা করেছেন ৯ জন।
এদিকে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিডিআরে চাকরিরত অবস্থায় মোট ৩৫২ জন মারা যান। যাদের মধ্যে ১৪ জন ম্যালেরিয়ায় মারা গেছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০৭ জন-যা মোট মৃতসংখ্যার ৫৮ শতাংশ। আট বছরে আত্মহত্যা করেছেন চারজন, যা মোট মৃতসংখ্যার ১ দশমিক ১৪ শতাংশ।
তবে আটক অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে অনেককে নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠলেও বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছেন বর্তমান বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তিনটি অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে বিদ্রোহ পরবর্তী কাজ শুরু করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার করা, বিদ্রোহে যাঁরা তিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের যতটা সম্ভব তিপূরণ দেওয়া এবং বিডিআরের যে দায়িত্ব সেটা আবার পালন শুরু করা।
বিডিআর বিদ্রোহের পর বর্তমান পুর্নগঠিত বিজিবির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এসএমএস এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিজিবিতে সদস্য অন্তর্ভূক্ত করা হবে। এজন্য প্রতিটি জেলার জন্য আলাদা কোড নম্বর থাকবে।
কোড নম্বর অনুযায়ী বিজিবিতে নিয়োগ লাভে ইচ্ছুক প্রার্থীর পাঠানো প্রয়োজনীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে তার ফলাফল জানানো হবে। পাল্টে যাচ্ছে পরীার ধরনও।
বিডিআর বিদ্রোহের পর পিলখানার দরবার হল বন্ধ হয়ে গেছে। এটি ছিল বিডিআরের আয়ের একটি বড় উৎস। দরবার হল বন্ধ হয়ে গেলেও প্রতিমাসে এর বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৮০ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।