আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারও বলছি ইভটিজিং সহ অশ্লীলতাকে উৎসাহ নয়



গত ১০ ডিসেম্বর ২০১০ দিবাগত রাতে আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ভারতের শিল্পী শাহরুখ খানের লাইভ কনসার্ট অনুষ্ঠানে অশ্লীল নাচ-গানের আয়োজনের পর আমরা বলেছিলাম ইভটিজিংকে উৎসাহ নয়। আমরা বলেছিলাম, "ইভটিজিংয়ের ক্রমবর্ধমান এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে যেখানে তা রোধে দেশের প্রধান কর্তব্য হলো এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ইভটিজিংসহ এ জাতীয় আপত্তিকর ঘটনাবলীর কার্যকারণসমূহ দেশ থেকে উচ্ছেদে সচেষ্ট হওয়া। কিন্তু তা না করে সরকার কর্তৃক ইভটিজিংয়ের ব্যাপারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্মতি বা উস্কানিমূলক অনুসৃত ভূমিকা, গোটা জাতিকে আলোড়িত ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। " মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে ওই ধরনের অশ্লীল অনুষ্ঠানকে আমরা "এদেশের সমাজ দেহের দুষ্টক্ষত ইভটিজিংকে আরো উস্কিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার লক্ষ্যে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নদিকে ফিরাবার ষড়যন্ত্র বলেছিলাম, তেমনি এ ঘটনাকে সরকারের ছত্রছায়ায় এদেশ থেকে ইসলামী শিক্ষা সংস্কৃতি নির্মূলের মূল ষড়যন্ত্রের আরেকটি অংশ বলেও মনে করেছিলাম। " ওই অনুষ্ঠানে অবিবাহিত একজন নারীকে তার হবু স্বামীর হাততালির মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের সামনে শাহরুখ খান "চুমু" দিয়ে এটিই হয়তো বুঝাতে চেয়েছিল, ইভটিজিং বন্ধ হবে ঠিক এভাবে, অর্থাৎ তোমাদের মেয়ে, নারী, সন্তানদেরকে পর পুরুষের হাতে তুলে দাও, বখাটেরা যখন তাদেরকে এধরনের প্রকাশ্য "চুমু" দিবে, শাড়ি ও ওড়না ধরে টান দিবে, শিষ দিবে তখন তোমরা শাহরুখ খানের "চুমু" খাওয়া নারী ও তার হবু স্বামীর মতো বলো "Thank You"! অর্থাৎ ইভটিজিংকে আর ভূল মনে করোনা।

ওসব "হাততালি ও Thank You" দেয়ার মতো ঘটনা, প্রতিবাদের নয়। এটা প্রচার করাই ছিল হয়তো আয়োজকদের উদ্দেশ্য। সেই অনুষ্ঠানের দুষ্ট ক্ষত এখনো নির্মূল না হতেই ভারতীয় শিল্পীদের দ্বারা আগামী কাল জাতীয় ষ্টেডিয়ামে আরেকটি অশ্লীল নৃত্যানুষ্ঠান আয়োজন, মূলতঃ দেশবাসীর প্রতিবাদকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শনেরই নামান্তর। এখন সচেতন জনগণ যারা চান এদেশ থেকে ইভটিজিং এর মতো সামাজিক অনাচার বন্ধ হোক তাদের সবারই এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। আমরা আবারো বলতে চাই, সরকার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জানা উচিত, একটি জাতির আসল পতন তার রণাঙ্গনে ঘটে না, ঘটে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পরাজয়ে।

আমাদের মুসলিম ঐতিহ্যবাহী এদেশে এমনিতেই এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে ভারতীয় অপসংস্কৃতির ষড়যন্ত্রমূলক আগ্রাসন নেপথ্যে সক্রিয় রয়েছে, যার পরিণতিতে আজ আমাদের স্বকীয়তা এক নাজুক অবস্থার সম্মুখীন, এছাড়া ভৌগোলিক সীমান্তের ন্যায় আমাদের সাংস্কৃতিক সীমান্তও সম্পূর্ণ উন্মুক্ত, এই পরিস্থিতিতে আমরা এহেন অপসংস্কৃতিকে যদি নির্লজ্জের মতো এভাবে স্বাগত জানাতে থাকি, তাহলে এটা যে, সার্বিক দিক থেকে আমাদের জন্যে দ্রুত আত্মহননের কাজ করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পৃথিবীর ছোটবড় সকল জাতিই নিজ জীবনবোধ কেন্দ্রিক কৃষ্টি-সংস্কৃতি লালন করতে যত্নবান, সেক্ষেত্রে আমাদের কি হলো যে, আমরা তার পরোয়া না করে বিদেশী অপসংস্কৃতিকে এভাবে স্বাগত জানিয়ে নিজেদের আত্মঘাতী পথে ঠেলে দিচ্ছি? দেশ জাতি ধর্মের ইচ্ছা বিরোধী বিজাতীয় অপসংস্কৃতির দুর্গন্ধে এবং তার অকল্যাণকারিতায় জাতি যেখানে অতিষ্ঠ সেক্ষেত্রে প্রাণঘাতি ব্যাধি এইডসবাহীরূপে পরিচিত ভারতীয় এরকম অপসংস্কৃতির অনুষ্ঠান আয়োজনের আমরা শুধু নিন্দাই করি না, কঠিন ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এসব অপসংস্কৃতি বন্ধ করার জোর দাবী জানাচ্ছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.