বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থ গভর্নর!
ঢাকা: গত চার বছরে ব্যাংকিং খাত শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০৯ সালের মে মাসের ২ তারিখে ১০ম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন ড. আতিউর রহমান। এপ্রিলে চার বছর পূর্ণ হচ্ছে তার। দায়িত্ব গ্রহণ করার পর গত চার বছরে অনেকবারই প্রশ্ন এসেছে ব্যাংকিং খাতের তদারকির বিষয়টি নিয়ে। যার দায় কোনোভাবেই তিনি এড়াতে পারেন না।
এর মধ্যে সরকার আবার নতুন করে তাকে আরও এক বছরের জন্য নিয়োগ দিতে চাইছে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান গভর্নর দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যাংকিং তথা সামগ্রিক অর্থনৈতিক খাত কেটেছে নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে। ব্যাংক খাতের ওপর বিগত চার বছরে রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক নেতৃত্ব ও গোষ্ঠীগত প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সময় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীনসহ সব ধরনের ব্যাংকের সুশাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়েছে। তৈরি হয়েছে হলমার্ক কেলেঙ্কারির মতো আলোচিত ঋণ কেলেঙ্কারি।
তাদের মতে, ব্যাংকগুলো অধিক মাত্রায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে ঝুঁকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা শক্ত হাতে আটকাতে পারেনি। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যর্থতা, যার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল দায়িত্ব ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ, তদারকি। তবে বর্তমানে তাতে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়েছে। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কৃষি, এসএমই এবং অর্ন্তভুক্তিমূলক অর্থনীতি নিয়ে কাজ করছে।
ফলে জনবল সংকট এবং সার্বিক সক্ষমতায় তদারকিতে এগিয়ে আসতে পারেনি। ”
তিনি বলেন, “সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অনিয়ম এবং দুর্নীতির ধরন পাল্টেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ায় এখানে সফল হতে পারেনি। ”
সূত্র মতে, আতিউর রহমানের মেয়াদে হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেসটিনির প্রতারণা, ব্যাংকের পরিচালকের পদ শুন্য হওয়া, নতুন ব্যাংকের অনুমোদন, ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট, বাংলাদেশ ব্যাংক-অর্থমন্ত্রণালয় টানাপোড়েন, ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম- বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর, ব্যাংকিং খাতে মূলধন ঘাটতি, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি ছিল সামগ্রিক অর্থনীতির আলোচনার কেন্দ্র।
এর ফলে অর্থনীতি মোকাবেলা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
সূত্র বলছে, বর্তমান সরকার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ব্যাংকিং বিভাগ তৈরি করে বিশেষত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সমান্তরাল নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে অনেকটা। এসব ব্যাংকের পরিচালনায় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতিও গত চার বছরে অনেকটাই নাজুক হয়ে পড়েছে।
সূত্র বলছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে এর আগে কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়েছিল।
কিন্তু এখন এর পুরো কর্তৃত্ব চলে গেছে সরকারের ব্যাংকিং বিভাগের হাতে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সর্বশেষ দেওয়া তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, এই ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী নিয়োগ থেকে শুরু করে পরিচালকমণ্ডলীর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের তেমন কিছু করণীয় নেই। যেন নিধিরাম সর্দারের ভূমিকায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
অপরদিকে, গভর্নরের অনীহার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। আর এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত মুদ্রানীতিও অনেকাংশে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান দু’টি মূলনীতি হলো- স্থিতিশীল মুদ্রানীতি পরিচালনা ও ব্যাংক খাতের ওপর তদারকি-নজরদারির ভিত্তিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। বর্তমান গভর্নরের মেয়াদে এসব ক্ষেত্রে তেমন অর্জন চোখে পড়েনি। এ সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আইন ভেঙে শেয়ারবাজারে ঢুকে পড়ে। কিন্তু রাজনৈতিক ও গোষ্ঠীগত প্রভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ কাজে ব্যাংকগুলোকে যথাসময়ে নিবৃত্ত করতে পারেনি, বরং নির্লিপ্ত থেকেছে।
মূলত, মূল দায়িত্বের দিকে খেয়াল ছিল না গভর্নরের।
এ সময় তিনি মানবিক ব্যাংক আর অর্ন্তভুক্তিমূলক অর্থনীতির নামে দৌড়ঝাঁপ করেছেন। তবে সেখানে সফল হতে পারেন নি। কৃষি আর ক্ষুদ্র ঋণের পক্ষে অবস্থান নিয়েও শতভাগ সফলতা এ দুই খাতে দেখাতে পারেন নি আতিউর রহমান। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর একাধিকবার নানা অনুষ্ঠানে জানান, ‘আমি ব্যাংকিং সেবা অধিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। ব্যাংকিং খাতকে মানবিক করতে চেষ্টা করছে।
এরইমধ্যে ব্যাংকিং খাতের চেহারা পাল্টে গেছে অনেকটা।
সূত্র জানায়, শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর আইনি সীমার (আমানত ও মূলধন মিলে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ) অধিক ও ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ ছিল বর্তমান গভর্নরের আর্থিক খাতে সবচেয়ে আলোচিত-সমলোচিত বিষয়। ২০০৯ সালের মধ্যভাগে এসে ব্যাংকগুলোকে শেয়ারে বিনিয়োগ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েও এসইসি ও ডিএসইর চাপে তা কার্যকর করতে পারেন নি তিনি। যা তার ব্যর্থতার পাল্লাকে ভারি করেছে অনেকখানি।
জানা গেছে, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ সংশোধনে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল।
কিন্তু বর্তমান সংসদে এই আইনটি আর অনুমোদন করা হয়নি। তবে তা চলতি অধিবেশনে পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে নতুন ব্যাংক স্থাপনের সম্পূর্ণ আইনি কর্তৃত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে থাকলেও সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ একমত না হলেও সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিয়েছে। অনুমোদন দিতে হয়েছে ৯টি নতুন বাণিজ্যিক ব্যাংক।
যার সবগুলোর পরিচালনায় মহাজোট সরকারের প্রভাবশালী সাংসদ বা নেতারা রয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রীর টানাপোড়েন:
হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ২৭ আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে। চিঠিতে তিনি পর্ষদে দায়ী করেন। একই সঙ্গে আরেকটি চিঠি দিয়ে সোনালী ব্যাংকের এমডিকে দায়ী ৩১ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করতে বলেন। তবে অর্থমন্ত্রী ২৯ আগষ্ট এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এটি করতে পারে না।
হলমার্ক কেলেঙ্কারি কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আগে নজরে আসেনি। ’ অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি দূর্বলতার কথা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও অধিক সংখ্যক মানুষকে ব্যাংকিং সেবার মধ্যে আনতে পেরেছে। ১০ টাকায় কৃষকের ব্যাংক হিসাব খোলা, কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে (এসএমই) ঋণ বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রবল উৎসাহ ছিল।
আলোচিত ব্যর্থতার কয়েকটি নজির- হলমার্ক কেলেঙ্কারি:
ব্যাংকিং খাতে আলোচিত বিষয় ছিল সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা থেকে হলমার্ক গ্রুপের জালিয়াতির মাধ্যমে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা। সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখায় ভুয়া ঋণপত্র বিলের মাধ্যমে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় হলমার্ক। এ ঘটনার সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তা ছাড়াও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজন জড়িত থাকার বিষয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার নামও উঠে আসে অভিযোগের তালিকায়। দুদক তাকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে।
আলোচিত এ ঘটনায় বাদ যাননি সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ূন কবিরও। এ ঘটনার পর নানা সমস্যার মুখে পড়ে দেশের ব্যাংকিং খাত। ঋণপত্র খুলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অতি সতর্কতার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে আসে। শুধু এ ঘটনা নয়, হলমার্কসহ ব্যাংকিং খাতে দুই বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি বেরিয়ে আসে। নজরদারি দূর্বলতার কারণে এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।
রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের অনিয়ম ও পরিচালক:
হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর একে একে জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক এবং বিশেষায়িত আরও কয়েকটি ব্যাংকের অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে। অন্যদিকে, এসব ঘটনার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের ২৯ পরিচালকের পদ শুন্য হয়। তিন মাস পরিচালক শুন্য থাকার পর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে আবারও সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালক নিয়োগ করে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর এক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন তোলেন নি।
নতুন ব্যাংক:
বিদায়ী বছরে আলোচিত ছিল ৯ ব্যাংকের অনুমোদন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ব্যাংকের আবেদন করেন। এপ্রিলে দেশীয় মালিকানায় ৬টি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মালিকানায় ৩টি সহ মোট ৯টি ব্যাংকের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যদি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ বিশ্ব ব্যাংক এর বিপক্ষে ছিল। কিন্তু অর্থমন্ত্রী একাধিকার বলেন, ‘নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে বিসর্জন দিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য সহজেই হাসিল করে নিলো।
’
ব্যাংকিং খাত:
বর্তমান গভর্নরের মেয়াদে তারল্য সংকট ছিলো দৃশ্যমান। বেড়ে যান ব্যাংকের সুদের হার। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সদ্য বিদায়ী সভাপতি একে আজাদ তার মেয়াদের পুরো সময়টাই বলতে থাকেন তারল্য সংকটে তারা ঋণ পাচ্ছেন না। তারল্য সংকট মেটাতে ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংকিং কলমানি বাজারের দারস্থ হয়। প্রতিদিন কলমানি বাজারে গড়ে লেনদেন হয় ছয় হাজার কোটি টাকা।
মূল্যস্ফীতি:
বিগত চার বছর ধরেই মূল্যস্ফীতির কষাঘাতে জর্জরিত ছিল সাধারণ মানুষ। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চিড়ে চেপ্টা সাধারণ মানুষ। টানা দুই বছর জিনিসপত্রের দাম ছিল দুই অংকে। এরপর সামান্য কমতে থাকলেও খাদ্য বহিভূর্ত পণ্যের মূল্যস্ফীতি এখনও দুই অংকে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হলেও এক্ষেত্রে যেন পুরো ব্যর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর ফলে মানুষের সঞ্চয় ভেঙে দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করতে হচ্ছে। হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিদিন চলতে।
পোস্টটি পুরোটাই কপি পেস্ট...
লিংকু ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।