(১)
কতদিন ধরে শ্বশুড়বাড়ী যাওয়া হয়না, সেই যে কবে গিয়েছিলাম, এটা নিয়ে রাহেলার সাথে কম মুখ কালা কালি হয়নি, ওকে কোন ভাবেই বুঝাতে পারি না যে অফিসে অনেক কাজ থাকে, দুই,. তিন দিনের ছুটি দিতে চায় না, অথচ ওর একই কথা অফিসের সব কাজই তো তুমি কর, অফিসের আর কোন লোক নাই। তুমি আমাকে ভুল বুঝাইতাছ,,
তারপর অনেক দিন কোন কথা নেই. চলে মান –অভিমান.. আমি সেধে কিছু বলি না, চলুক না এভাবে। এক সময় ঠিক হয়, আবার মান অভিমান চলে...
যাক অনেক দিন পর একটা সুযোগ পাওয়া গেছে..। এবার শ্বশুড় বাড়ী যাওয়া যাবে। রাহেলা খুব খুশি হবে।
: রাহেলাকে ফোন দিতে যাব, দেখি ওই আমাকে ফোন দিল, আমি ওর কল রিভিস করলাম।
: হ্যালো,
: হে. হ্যালো. কেমন আছো
: ভালো, তুমি কেমন আছো.
: ভালো, তারপর বাড়ির সব খবর কি, ভালো নাকি.
: বাড়ির খরব তো তোমার দরকার নাই, তুমি তোমার অফিসের খবর নিয়াই থাক।
: এভাবে বলছ কেন, আমি বাড়ির খবর নেই না,
: হু। নেও তো, না নেওয়ার মতো।
: তুমি কি আমার সাথে ঝগড়া করার জন্য ফোন দিয়েছ নাকি.
: রাহেলা আর কোন কথা বলে না,
: কি হলো কথা বলছ না কেন।
:: কি কথা বলব তোমাকে ,বলেও তো কোন লাভ নাই,
: তারপর ও বলো না, শুনি
: না মানে, মা ফোন করেছিল। বাবার শরীরটা নাকি বেশি ভালো না.
: তাই নাকি..
:: হু। শুনলাম তোমাদের অফিস নাকি কয়েকদিন বন্ধ থাকবে।
: রাহেলার কথায় আমার অবাক হবার কথা না, আমি অবাক ও হইনি, ও খবর রাখে কবে অফিস বন্ধ,না খোলা। হু।
তুমি ঠিকই বলেছ। কিছুদিন বন্ধ পাওয়া যাবে।
:: বন্ধে কি বাড়িত আসবা নাকি শহরেই ঘুরঘর করবা.
: রাহেলাকে খেপাতে ইচ্ছা করল, কিন্তু ও একবার খেপে গেলে ফোন কেটে দিবে, তারপর ফোন বন্ধ করে দিবে, সারাদিনেও ফোন ওপেন করবে না. তাই আপাতত খেপানোর ইচ্ছাটা ধমন করলাম। হু। আসবো, টিকেট কাটা হয়ে গেছে।
অফিস শেষ করেই গাড়িতে উঠব.। তুমি কাপড়-চোপড় গুছাইয়া রাখ।
:: আমি সব কিছু গুছাইয়া রেখেছি. ।
:: রাহেলাকে না দেখে ও জহির বুঝতে পারল,ওর চোখ দিয়ে পানি এসে গেছে। এই এক ধরনের মেয়ে সামান্য খুশিতে ও চোখে পানি এসে যায়।
আর এখন তো অনেক দিন পর বাবার বাড়ি যাবে। বিরাট খুশির খবর, । রাহেলা এখন তার মাকে ফোন করে বলবে, তোমাদের জামাই আসতাছে, তোমার জামাই কিন্তু এটা খেতে পছন্দ করে, ওটা খেতে পছন্দ করে,।
(২)
:: দুপুর বেলা খবরটা শুনেই মাথাটা চক্কর দিয়া উঠল, নিজের টেবিল গিয়ে থ হয়ে বসে রইলাম, এটা কোন কথা হলো নাকি, সতের তারিখে নাকি ২.০০টা পযর্ন্ত অফিস করতে হবে, অফিস সার্কুলার জারি হয়ে গেছে। কেউ যদি সেদিন অফিসে না আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনীক ব্যবস্থা নিবে।
আর সেদিন কোন ছুটিও দেওয়া হবে না, তাই ছুটির আবেদন করেও কোন লাভ হবে না।
:: নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম দেশের সরকার এত মাথা মোটা হলে হয় নাকি, একবার ঘোষনা দিল সতের তারিখে ঢাকা শহর বন্ধ, সবার যার যার মতো বাড়ি যাবার জন্য পরিকল্পনা করেছে। আবার এখন বলছে দুইটা পযর্ন্ত অফিস করতে হবে..। উফ অসহ্য।
: রাহেলাকে কিভাবে বলি আসতে পারবো না, তারপরও বলার জন্য ফোন হাতে নিলাম, দেখি হাত হালকা হালকা কাপছে, তার মানে আমি কি রাহেলাকে ভয় পাচ্ছি নাকি।
:: হ্যালো, রাহেলা...
:: হে বলো, অফিস থেকে কি বাহির হইছ নাকি।
:: না বলতে গিয়ে দেখি আমার মুখে কথা জড়াইয়া গেল।
:: তোমার কথা তো বুঝা যাচ্ছে না।
:: না মানে, মানে, বলছিলাম কি.
:: এত মানে মানে করছ কেন, সরাসরি বলো, রাহেলার কন্ঠে হাসির ছোয়া... কিন্তু আসতে পারবো না শুনলে , আল্লাহই জানে কি হয়।
:;; না মানে, আমি তো বাড়িতে আসতে পারবো না. আমাদের ছুটি বাতিল হয়ে গেছে।
:: রাহেলা মনে হয় প্রথম একটু অবাক হলো, অবাকবোধ কাটিয়ে বলল, তুমি ফাতলামু করছ নাকি।
:: এতে ফাতলামু করার কি আছে. যা সত্যি তাই বলছি।
:: তার মানে তুমি বাড়িতে আসতেছ না।
:: এর মধ্যে কিভাবে আসি বলো, আমার কন্ঠে করুনার সুর এতে যদি ওর মনটা একটু গলে, জানি তাতে কাজ হবে না।
:: মানে তুমি আসতেছ না, ..
: তুমিই বলো..
:: হু।
আমার বাবার শরীর খারাপ তো তাই এত গরিমসি। তোমার কোন আত্নীয়ের শরীর খারাপ হলে তো দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া আইসা পরতা।
:: লক্ষী, একটু বুঝার চেষ্টা কর, আমার অবস্থাটা।
:: আর লক্ষী, পক্ষী বলতে হবে না। যা বুঝার বুঝে গেছি।
বলেই রাহেলা ফোন কেটে দিলো. এবং সাথে সাথে বন্ধ করে দিলো, শত চেষ্টা করে ও আর লাইনে পাওয়া গেল না,
::: আল্লাহই জানে, রাহেলা জেদের বসে কি না, কি করে ফেলে, .. আমার চিন্তার রেখা অন্যদিকে মোড় নিলো.. রাহেলা থাকবে তো.. । । । । ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।