আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখনও তালিকা তৈরি হয়নি ভাষাসৈনিকদের!



ভাষা আন্দোলনের ৫৮ বছর পার হয়ে গেলেও আজও তৈরী হয়নি ভাষঅ শহীদদের তালিকা। আমাদের সব সরকার ক্ষমতায় এসে হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা ভাব দেখালেও আমাদের এই মহৎ অর্জন টাকে পরিপূর্ণভাপবে উপস্থাপন করতে পারেনি। একথাই অনেক আপেক্ষের সাথে দৈনিক আমারদেশ'কে বলেছেন ভাষা আন্দোলনের সৈনিক বাহাউদ্দিন চৌধুরী: ভাষা আন্দোলনের সময় বাংলাভাষার প্রতিযোগিতা ছিল উর্দুভাষার সঙ্গে। বাংলাভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, একে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলাম। আকাশ সংস্কৃতির বদৌলতে উর্দুর বদলে এখন হিন্দি ভাষার আগ্রাসন।

প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে আমার মনে নানা প্রত্যাশার জন্ম হয়। পরে সেগুলো হতাশায় পরিণত হয়। আকাশ সংস্কৃতির কল্যাণে যেভাবে হিন্দি ও অন্যান্য বিদেশি ভাষার আগ্রাসন হচ্ছে, তা রোধ করতে বাংলাভাষার চর্চা, ব্যবহার বাড়াতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, শুধু ফেব্রুয়ারি মাসেই বাংলাভাষা নিয়ে আবেগ-উচ্ছ্বাস থাকে। সারা বছর তা থাকে না।

এক মাসের জন্য ‘বাংলা ভাষাপ্রেমিক’, ‘বাঙালি’ হয়ে তো লাভ নেই। দেশে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়ছে। সেখানে ঠিকমত বাংলা পড়ানো-শেখানো হচ্ছে না। ভাষা আন্দোলনের পর আশা করেছিলাম, শিক্ষা এবং জীবনের প্রতি স্তরে বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠা পাবে। ঊনষাট বছরেও তা পায়নি।

সচিবালয়সহ উচ্চ আদালতে বাংলাভাষা ব্যবহারের পরিবর্তে ইংরেজি ব্যবহৃত হচ্ছে। সচিবালয়ে বাংলায় নথিপত্র লিখতে সরকার নির্দেশ দিয়েছে, সেটা মানা হচ্ছে না। উচ্চ আদালতের বিচারপতি এবাদুল হক বছর কয়েক আগে বাংলাভাষায় বিচারের রায় লিখেছিলেন। অন্যরা সেটা অনুসরণ করেননি। বিচারপতিরা ইংরেজিতে রায় লিখছেন।

এ বিষয়ে সরকারকে নজর দিতে হবে। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা পড়ে, তারা বাড়িতেও অভিভাবকের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলে। মানে পরিবারেও বাংলাভাষার চর্চা হচ্ছে না। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বইপড়া কর্মসূচি চালু করেছেন। এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

আমি বলব, ‘বাংলাভাষার বই পড়ুন’ কর্মসূচিরও যেন উদ্যোগ নেয়া হয়। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারিতে তরুণ প্রাণ আত্মাহুতি দিয়ে বাংলাভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে প্রতিষ্ঠা হয়েছে বাংলা একাডেমীর। এ প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে আয়োজন করছে একুশে বইমেলার। মেলা উপলক্ষে বাংলাভাষায় অনেক বই প্রকাশিত হচ্ছে।

এ মেলায় আগে কলকাতার লেখকদের বই বেশি বিক্রি হতো। কয়েক বছর ধরে দেশের লেখকদের সৃজনশীল বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এগুলো ভাষা আন্দোলনেরই অর্জন। এছাড়া একুশ ফেব্রুয়ারি সারা পৃথিবীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। বাংলাভাষাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার স্বীকৃতি দেয়ার জন্য সরকার প্রস্তাব দিয়েছে।

এখন ইউরোপ, আমেরিকায় বাংলা ভাষাভাষী অনেক মানুষ বাস করছে। তারা সেখান থেকে বাংলায় পত্রিকা, বই প্রকাশ করছেন। ভাষাচর্চা করছেন। এগুলোও ভাষা আন্দোলনেরই অর্জন। লেখক : ভাষাসৈনিক, ভাষা আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.