আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখনও এমন হয় !

আসুন প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করি . এখনও এমন হয় ! শাড়ি, শাখা পরে ললাটে সিঁদুর লাগিয়ে মাদ্রাসা ছাত্র মিল্টন অভিনব বেশে সাত বছর ধরে ত্রলাকায় ঘুরছে। মিল্টনের দাবি, তার ওপর “মা কালী” ভর করেছে। টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের ২৬ বছরের যুবক আব্দুল মজিদ মিল্টন আরও দাবি করছে ‘ভক্তরা আমার পূজা করে। পূজার সময় যে নৈবেদ্য, ভোগ দেয় তার ঘ্রান শুকেঁই আমার ক্ষুদা মিটে যায়। শ্মশান-মন্দিরে গেলে ভক্তরা মাতৃজ্ঞানে আমাকে সন্মান করে।

’ ষড়যন্ত্র ত্রর শিকার হয়ে তার এ অবস্থা জানিয়ে মিল্টন বলে, বিশেষ মহলটির কারনে আমি ত্র আবস্থা থেকে মুক্ত হতে পারছিনা। ফিরতে পারছিনা সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে। মিল্টনের নানি মল্লিকা বেগম(৮০) ও এলাকার অনেকেই মিল্টনকে মা কালী করে রাখার ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা: আবদুল বাসিত মিল্টনের ঘটনা শুনে ত্রকে মানসিক বৈকাল্য বলে অভিমত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাকে সুস্থ করতে বিশেষজ্ঞ মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন।

মিল্টনের “ মা কালী” বেশ ধারনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে নিতে গিয়ে চাঞ্চাল্যকর কিছু কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। মিল্টনের বাবা ও মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনায় মানসিক আঘাত পেয়েই সে উদ্ভট আচরন করছে। জানা যায়, গোপালপুরের ডাকুরী গ্রামের মতিয়ার রহমানের সংঙ্গে নুড়ুর চর কান্ডজি আটা গ্রামের মৃত আবদুল জব্বার মাষ্টারের মেয়ে সুরাইয়া বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ত্রকমাত্র সন্তান আবদুল মজিদ মিল্টন। মিল্টনের ছয় বছর বয়সে স্ত্রী সুরাইয়াকে তালাক দেন মতিয়ার রহমান ত্রবং অন্যত্র বিয়ে করেন।

মিল্টনকে নিয়ে মা সুরাইয়া বেগম বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। চার বছর পর মিল্টনের মামারা ঘাটাইল উপজেলার চৈথট গ্রামের বিপত্মীক আরাফান মাষ্টারের সঙ্গে মা সুরাইয়া বেগমের দ্বিতীয় বিয়ে দেন। এ সময় মিল্টন বিমর্ষ হয়ে পড়ে। মামারা প্রথমে মিল্টনকে স্থানীয় হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। পরে তাকে ভর্তি কারা হয় ঘাটাইলের খিলগাতি দাখিল মাদ্রাসায়।

ত্রখানে সে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়েছে। সব সময় মিল্টল চাইত তার মা দ্বিতীয় স্বামীকে তালাক দিয়ে ফিরে আসুক। এ কথা সে বার বার মাকে বলেছে। সুরাইয়ার দ্বিতীয় স্বামী আরাফান মাষ্টারের ছেলে জুলফিকার, তার স্ত্রী সাবিনা, মেয়ে কহিনুর ও আমিনাও চাচ্ছিল যে সুরাইয়া আরাফান মাষ্টারকে তালাক দিয়ে তার বাবার বাড়ি ফিরে যাক। কিন্তু সারাইয়া এতে রাজি হয়নি।

তারা ঘাটাইলের কদমতলী ১৮ দানা পারসীর কবিরাজ গনেশ চন্দ্র পালকে দিয়ে মিল্টনের ওপর অলৌকিক শক্তি প্রয়োগ করে বলে লোক মুখে জানা গেছে। সে এর পর খেকেই সাত বছর ধরে নিজেকে “কালী” ভেবে আচরন করছে। সে নিজেকে কালী ভেবে শাড়ি-ব্লাউজ পরে ললাটে সিদুঁর ত্রবং দুই হাতে শাখা পরে। গ্রামবাসী ত্রই ঘটানাকে পাগলামো ভাবত। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তার এই আচরনে পরিবর্তন না আসায় তারা এখন মিল্টনের আচরনকে রহস্যজনক মনে করছে।

মিল্টন নিজেকে বলে, “ আমিই প্রকৃত কালী, আমি লম্বায় ৮ফুট, আমার ওজন ৯মন ১৫ কেজি, আমার শাড়ি ৬০ হাত দীর্ঘ, দেহে ২৫ ভরি সোনার অলঙ্কার আছে। ৫০০ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার বছর আগে আমার সৃষ্টি। আমি আমার ভক্তদের জন্য মঙ্গল কামানা করি। মিল্টন দাবি করে, কবিরাজ গনেজ চন্দ্র পালের ষড়যন্ত্রের কারনে আমি অসুস্থ। আমি কবিরাজ গনেজ চন্দ্র পালকে অনেক অনুরোধ করেছি আমাকে পুনরায় আব্দুল মাজিদ মিল্টন রুপে ফিরিয়ে আনার জন্য।

কিন্তু সে আরাফান মাষ্টার ও জূলফিকার গংয়ের ভয়ে আমাকে কালী রূপে বেঁধে রেখেছে। “ মিল্টনের নানি মল্লিকা বেগম বলেন, আমার নাতি মিল্টনকে যারা ষড়যন্ত্র করে ত্র অবস্থা করেছে আমি তাদের বিচার চাই। মিল্টনের মা সুরাইয়া বেগম জানান, আরাফান মাষ্টার এর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের পর কয়েক বছর তাদের ভালোই চলছিল। তিনি বলেন, সত ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে আমাকে হিংসা করতে থাকে ত্রবং ঘর ছাড়া করার ষরযন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা আমাকে তাদের বাবাকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাবার জন্য চাপ দেয়।

আমি রাজি না হওয়ায় তারা পারসী গ্রামের কবিরাজ গনেশ চন্দ্র পালকে দিয়ে আমার ছেলে মিল্টনকে তন্ত্রমন্ত্রের সাহায্যে “ মা কালী” রূপ দিয়েছে। আমি আমার ছেলেকে ভালো করে দেয়ার জন্য গনেশ কবিরাজের কাছে বার বার গিয়েছি। কবিরাজ বলেছেন আরাফান মাষ্টারের ছেলেমেয়ে ও মেয়ের জামাইদের কথামতো তুই তোর স্বামী আরফান মাষ্টারকে তালাক দিলেই তোর ছেলেকে ভালো করে দেব। গোপালপুর উপজেলার কাগুজি আটা গ্রামের বৃদ্ধ হাসান আলী বলেন, আরফান মাষ্টারের ভাতিজা খলিল মিলিটারি বলেছেন, মিল্টনের মা তার দ্বিতীয় স্বামীকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেলেই মিল্টন ভালো হয়ে যাবে। তার ওপর থেকে মা কালী চলে যাবে।

খলিল মিলিটারি গনেশ কবিরাজকে দিয়ে মিল্টনকে “মা কালী” করে রেখেছে। গনেশকে ধরলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। ত্র ব্যাপারে গনেশ কবিরাজ বলেন, আমি কবিরাজি করি কিন্তু মন্ত্রতন্ত্র কিছুই জানিনা। মিল্টনকে ভালো কারার জন্য তার মা সুরাইয়া বেগম কয়েকবার আমার কাছে ত্রসেছে। আমি তাকে তার সত ছেলেমেয়ে ও খলিল মিলিটারির সঙ্গে আপোস করার পরামর্শ দিয়েছি।

ত্রই আপোস হলেই মিল্টন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা: আব্দুল বাসিত মিল্টনের ঘটনা শুনে সুষ্ট চিকিৎসার মাধ্যমে ত্র রোগ সারানো সম্ভব বলে জানান। তিনি বলেন, “ গ্রাম্য কুসংস্কার প্রাধান্য দিয়ে যা করা হচ্ছে তাতে বিঞ্জানের কোনো সমর্থন নাই। ” বিশেষজ্ঞ মানসিক চিকিৎসকের চিকিৎসা নেওযার পরামর্শ দেন তিনি। সুত্র: জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল, ৩রা মার্চ, সকালের খবর।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.