সত্য প্রকাশে সংকোচহীন
চারিদিকে যুদ্ধের থমথমে পরিবেশ। পাক হানাদের আক্রমণের ভয়ে তটস্থ লোকজন। এই বুঝি এলো হানাদার বাহিনী। কখন যে কাকে বুলেটের আঘাতে হত্যা করে, আবার উঠিয়ে নিয়ে যায় গ্রামের কোন নারীকে। আতঙ্কেই দিন কাটে দেশের মানুষদের।
এরকম এক মুহুর্তেই হারিয়ে যায় ১৮ বছরের যুবতী আলতার ছাগলটি। কোথায় যে গেল, এই দুষ্টটি ছাগল ছানা? ওহ!, দেশের যে পরিস্থিতি এর মধ্যে কি বাইওে যাওয়া যায়? এদিকেতো নেই, ওদিকে গেল নাকি? ধুর ছাই! এখন কোথায় খুঁজি? হয়রান হয়ে আদরের সঙ্গী ছাগলটাকে খুঁজতে থাকে আলতা। হঠাত বুটের মচমচ আওয়াজ শব্দ শুনতে পায় সে। দৌড় দেয় রাস্তার পাশের ঝোঁপের আড়ালে। ধাক্কা খায় অচেনা এক যুবকের সঙ্গে।
চিতকার দিয়ে ওঠে আলতা। যুবক মুখ চেপে ধরে। পাক বাহিনী রাস্তা দিয়ে চলে যায়। পরিচয় ঘটে যুবক কফিলের সঙ্গে। সে মুক্তিযোদ্ধা।
অনেক কথা হয়। দেশের কথা, ভাললাগার গল্প সঙ্গে পরিণতির সূত্রপাত। কিন্তু দেশের অস্থির এ অবস্থায় আলতাকে ঘরে রাখা সমীচিন মনে করেনা তার বাবা-মা। বিয়ে দেয় শান্তি-কমিটির চেয়ারম্যান গোলজারের সঙ্গে। গোলজার কিছুদিন ঘর করার পর আলতাকে তুলে দেয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে।
ব্যারাকে একের পর এক ধর্ষিত হতে থাকে আলতা। এভাবে এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী।
এটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন জলসিঁড়ি’র সহ-সাধারণ সম্পাদক ‘মৃদুল মাহমুদ’র রচনা ও নির্দেশনায় পরিবেশিত নাটক ‘জননী ও জন্মভুমিশ্চ’ এর একটি দৃশ্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে চলছিল সাংস্কৃতিক মেলা ২০১১।
চোখ-ধাঁধাঁনো ও বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করে জলসিঁড়ি।
এতে প্রতিদিন নাটক ও সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রদর্শনী হয়। ৬ ফেব্র“য়ারী থেকে শুরু হয়ে মেলা চলে ১৪ ফেব্র“য়ারী পর্যন্ত। এতে ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। ‘সবচেয়ে বড় আয়োজন সাংস্কৃতিক মেলা ছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও ইসুর সাথে সঙ্গতি রেখে আমরা চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকি। ’ বলছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কান্তি রায়।
অত্যন্ত আন্তরিক ও আনন্দমুখর পরিবেশেই আয়োজনগুলো হয়ে থাকে জানালেন তিনি। ‘নাটক এমন একটি শিল্প যা আমাদের সামনে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। ভালো মানের নাটক আমাদের মধ্যে উন্নত বোধের জন্ম দেয়। ’ বলছিলেন তিনি।
এমন আয়োজন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত সবাই।
‘সমাজের নানা অসঙ্গতি নাটকের মাধ্যমে ফুটে ওঠে। ভাল নাটক সুন্দরকে উপভোগ করতে শেখায়। আমাদের ইতিবাচক চিন্তা করতে শেখায়। ’ এমনটা মন্তব্য জলসিঁড়ির সদস্য ফারজানা আফরোজ রিয়ার। শিক্ষার্থীরে মাঝে সৃজনশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই আমাদের সকল প্রচেষ্টা।
যোগ করেন অপর সদস্য ফারহানা ইভা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।