আমি বিদ্রোহী
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
গোয়েন্দা নজরদারিতে প্রথম আলো সম্পাদক
--------------------------------------------------------------------------------
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা : সাত বছর আগে ২১ আগস্ট বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনায় নেপথ্যে থেকে ইন্ধন দিয়েছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা ও তদন্ত সংস্থা এই অভিযোগের প্রমাণ পাচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
২১ আগস্ট ষড়যন্ত্রের হোতা জঙ্গি মাওলানা তাজউদ্দীনের সঙ্গে মতিউর রহমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যোগাযোগের হেতু অনুসন্ধান করতে গিয়ে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে প্রথম আলো সম্পাদকের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। এমনকি বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জঙ্গি তাজউদ্দীনকে পাকিস্তান পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও মতিউর রহমানের সহযোগিতা ছিল বলে সংশ্লিষ্টরা জানতে পেরেছেন।
গোয়েন্দাদের কাছে খবর আছে, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের বাংলাদেশি চর হিসেবে কাজ করছেন প্রথম আলো সম্পাদক।
তার গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি সূত্র জানায়, এই মামলায় গ্রেফতারকৃত সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা সালাম পিন্টুর জবানবন্দিতে মতিউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা জানা যায়। ভয়াবহ ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনার আগে ও পরে মতিউর রহমান জঙ্গি তাজউদ্দীনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে সালাম পিন্টুর কাছ থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানতে পারেন, তাজউদ্দিনকে পাকিস্তানে পালিয়ে যেতে মতিউর রহমান সহযোগিতা করেন। কারণ তাজউদ্দিন ধরা পড়লে মতিউর রহমান নিজে এই মামলায় ফেঁসে যাবেন এমন আশঙ্কা করছিলেন।
সূত্র জানিয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে মতিউর রহমানের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি চালানো হচ্ছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তার সম্পৃক্তার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আগে থেকেই সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছিল। স¤প্রতি নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, এটি এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় তাকে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সাবেক উপমন্ত্রী বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু গত বছরের ৩০ এপ্রিল সিআইডি কর্মকর্তাদের কাছে কার্যবিধির ১৬১ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, তার ছোট ভাই মামলার আসামি তাজউদ্দিনের সঙ্গে মতিউর রহমান বাচ্চুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ও আছে।
হামলার আগে ও পরে প্রথম আলো কার্যালয়ে তাজউদ্দীন ও মতিউর রহমান বাচ্চুর একাধিক বৈঠক হয়। জবানবন্দিতে আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, প্রথম আলোর একজন সাংবাদিকের কাছে তিনি প্রথম জানতে পারেন তাজউদ্দিন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে ধর্মীয় একটি দলের সঙ্গে মিলে বিএনপিকে সহায়তা করার জন্য নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাতে তৎকালীন ডিজিএফআইয়ের কিছু কর্মকর্তার প্রত্য মদদ আছে। মাওলানা তাজউদ্দিনকে যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়ে র্যাব খুঁজছে তা মতিউর রহমানের বরাত দিয়ে ওই সাংবাদিকের কাছ থেকে আব্দুস সালাম পিন্টু জানতে পারেন। এ ব্যাপারে তারা তাজউদ্দিনকে সতর্ক করেছেন।
আব্দুস সালাম পিন্টুকেও তারা সাবধানে থাকতে বলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের নির্দেশে ও প্রথম আলো সম্পাদকের পরামর্শ আর সহযোগিতায় ডিজিএফআই সদস্যরা জঙ্গি তাজউদ্দীনকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়।
সূত্রে জানা যায়, মাওলানা তাজউদ্দিন পাকিস্তানে লেখাপড়া করতে গেলে সেখানে মুফতি হান্নানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পাকিস্তান থেকে থেকে দেশে ফিরে মুফতি হান্নানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে বিভিন্ন গুপ্ত কাজে জড়িয়ে পড়ে তাজউদ্দিন। পরে দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিবর্তে অন্য শক্তিকে মতায় টিকিয়ে রাখতে প্রথম আলো সম্পাদকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় তাজউদ্দীনের।
জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত কাজ খুব শিগগিরই শেষ করার চেষ্টা করছি। মামলাটি যেহেতু স্পর্শকাতর তাই এর বেশি কিছু না বলাই ভালো। ’
দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রের নায়ক প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান দুনিয়া থেকেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন কি-না এই প্রশ্নই এখন বিভিন্ন মহলে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ২১৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০১১
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।