লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় নিপা ভাইরাসের কারণে মস্তিষ্কের প্রদাহ বা এনকেফালাইটিসে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা ২২ জনে দাঁড়ালো।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক তৌফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুর পৌনে দু’টায় মারা যান হাতীবান্ধার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের নাজির হোসেনের ছেলে মাহবুব হোসেন (১৮) এবং ভোরে মারা যায় একই গ্রামের জাহাঙ্গীরের মেয়ে সরনি (৪)।
আইইডিসিআরের মাঠ কর্মী আবুল হোসেন জানান, নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও চারজন ভর্তি রয়েছেন।
হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিমল কুমার বর্মন জানান, গড্ডিমারী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আলম (১৬) হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুক্রবার গভীর রাতে মারা যান।
তবে হাতিবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রমজান আলী মৃত্যুর খরব জানানে না বলে জানান।
হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়াম্যান বদিউজ্জামান ভেলু জানান, এনকেফালাইটিসের প্রার্দভাব দেখা দেওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয় শনিবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে উপজেলায় ১২টি মেডিকেল টিম বর্তমানে কাজ করছে। স্থানীয় মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হয় এজন্য কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।
হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘সর্দি, কাশি, মাথা ব্যথা আর জ্বর নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যে জ্বর বেড়ে যায়। এরপর শুরু হয় খিচনি। রোগীরা অজ্ঞান হয়ে যায়। ’
ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাদুড়ের কারণে খেজুরের রসের মাধ্যমে হাতীবান্ধা এলাকায় নিপাহ ভাইরাসজনিত এনকেফালাইটিসে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, হাতীবান্ধা এলাকায় এনকেফালাইটিসের কারণ নিপা ভাইরাস।
বাদুড় এই ভাইরাসের উৎস। ’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিপার মতো একাধিক ভাইরাসের কারণে এনকেফালাইটিস বা মস্তিষ্কের প্রদাহ হয়। এনকেফালাইটিসে তীব্র জ্বর, মাথা ব্যথার পাশাপাশি ঘাড় ও পিঠ শক্ত হয়ে যায়। বমির ভাব হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি আলো সহ্য করতে পারে না।
তীব্রতা বাড়লে হঠাৎ হৃৎক্রিয়া বন্ধ হতে পারে। মানুষ পাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।
মানুষের মধ্যে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায়। এরপর ১৯৯৯ সালে সিঙ্গাপুরে। দুই দেশে তখন ২৭৬ জন মারা যায়।
আইইডিসিআর সূত্র জানায়, ২০০১ সালে মেহেরপুর জেলায় প্রথম নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর নওগাঁ (২০০৩), রাজবাড়ী (২০০৪ ও ২০০৮), ফরিদপুর (২০০৪), টাঙ্গাইল (২০০৫), ঠাকুরগাঁও (২০০৭), কুষ্টিয়া (২০০৭), মানিকগঞ্জ (২০০৮) এবং ফরিদপুর (২০১০) জেলায় প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
সুত্রঃ বাংলানিউজ২৪
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।