আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিপাহ ভাইরাস___ !!!

(সর্বশেষ খবর অনুযায়ী আট জনের মৃত্যু ঘটেছে) ✦নিপাহ ভাইরাস কি? নিপাহ ভাইরাস একটি Emerging zoonotic ভাইরাস, যা পশু-পাখি থেকে মানুষে ছড়ায়। ভাইরাসটি মস্তিষ্ক বা শ্বসনতন্ত্রে প্রদাহ তৈরির মাধ্যমে মারাত্মক অসুস্থতার সৃষ্টি করে। এটি Henipavirus জেনাসের অন্তর্গত একটি ভাইরাস। নিপাহ ভাইরাসে এনসেফালাইটিস নামক মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগ হয়। এ রোগটি হার্পিস ভাইরাস (herpes simplex), ফ্লাভিভাইরাস (Flaviviruses) সহ অন্যান্য ভাইরাস দ্বারাও হতে পারে।

তবে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অনুসন্ধান ও পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন, নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের ফলেই এ রোগ ছড়িয়েছে। ✦বাংলাদেশে যেভাবে ছড়ায় নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় মূলত বাদুড়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এ সময়টাতে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। আর বাদুড় গাছে বাঁধা হাঁড়ি থেকে রস খাওয়ার চেষ্টা করে বলে ওই রসের সঙ্গে তাদের লালা মিশে যায়।

সেই বাদুড় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে এবং সেই রস খেলে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এ ভাইরাস। আবার বরই জাতীয় খাবার যা বাদুর খেয়ে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখে। অনেক সময় গাছের বরই বাদুরে এক আধটু খেয়ে রাখে। সেই বরই খেলে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তবে ভয়ানক তথ্য হলো-নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াতে পারে এ রোগ।

✦এই রোগের লক্ষণগুলো — এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমত জ্বরে আক্রান্ত হয়। মস্তিষ্কে ভয়াবহ প্রদাহ দেখা দেয়, সে মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভোগে। — মন-মেজাজ সব সময় উত্তেজিত থাকে। মাঝে মাঝে খিচুনিও দেখা দেয়। — আবার এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর কোনো লক্ষণ প্রকাশ ছাড়া ভাইরাসটি ৪ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে।

— এনসেফালাইটিসের লক্ষণ দেখায়। লক্ষণগুলো অনেকটা ইনফ্লুয়েনজা জ্বরের মতো। যেমন—জ্বর, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা, বমি বমি ভাব, আলো সহ্য করতে না পারা ইত্যাদি। এছাড়া অন্য উপসর্গগুলো হচ্ছে— মাথা ঝিমঝিম করা, ঘুম ঘুম ভাব, জাগ্রত/সচেতন অবস্থার পরিবর্তনসহ অন্যান্য মানসিক সমস্যা। ✦নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় সরাসরি নিপাহ ভাইরাস নিরাময়ে কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার হয়নি।

রোগের লক্ষণ বিবেচনা করে চিকিত্সকরা সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকেন। তবে প্রতিরোধক ব্যবস্থা হিসেবে নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়— ১. বাদুড় থেকে প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে : পাখি দ্বারা আধা বা আংশিক ফল খাওয়া ও খেজুরের কাঁচা রস পান না করার জন্য ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। ২. মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানো প্রতিরোধে : আক্রান্ত মানুষের সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। রোগীদের ব্যবস্থাপনায় ডাক্তারদের/স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা গ্লাভস ও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ৩. ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, যেন হাতের মাধ্যমে ভাইরাসটি না ছড়ায়।

৪. রোগী যে পাত্রে খাবার খায় সে পাত্রে খাবার না খাওয়ায় এবং রোগীকে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ ফুট দুরত্বে অবস্থান করা। ৫. রোগীর পরিচর্যা করার পর হাত ভালোভাবে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ৬. নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ওই এলাকার মানুষকে আপাতত খেজুর গুড় ও রস, আখের রস, পেঁপে, পেয়ারা, বরইসহ স্থানীয় ফল বা অর্ধেক খাওয়া ফল না খাওয়া। ফলমুল খেলেও ভালভাবে ধুয়ে খেতে হবে। ৭. রোগীর কফ ও থুতু যেখানে সেখানে না ফেলে একটি পাত্রে রেখে পরে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

৮. লক্ষনগুলো প্রকাশ পেলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। --------------------- আসুন সচেতন হই এবং প্রতিরোধ করি। (তথ্যসূত্র: ২৯ জানু, ২০১৩ আমার দেশ) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।