অভিলাসী মন চন্দ্রে না পাক, জোছনায় পাক সামান্য ঠাই
দেশে এখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার শুরু হচ্ছে সাথে শুরু চলছে কর্নেল তাহের হত্যার বিচার সহ ঐতিহাসিক অপরাধসমুহের বিচার। এর ধারাবাহিকতায় একদিন ঐতিহাসিক সকল অপরাধের বিচার হবার রাস্তা খুলে যাচ্ছে এবং তাতেই তৈরী হচ্ছে একটি নতুন ভবিষ্যতের সম্ভাবনা। সে নিয়েই এখানে কিছু কথা।
আগেই বলা দরকার যে আমি কোন দলেরই সমর্থক নই কারন কোন দলেই সুস্থ রাজনীতির চর্চা নেই কিন্তু আমি দেশকে ভালবাসি এবং সেজন্যই আশাবাদি হয়ে স্বপ্ন দেখি। এখানে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে লেখাটি দিলাম।
আমাদের দেশে মুল রাজনৈতিক দল ২টা আওয়ামী লীগ ও বি,এন,পি।
স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ যদিও গনতান্ত্রিক দল ছিল কিন্তু পরবর্তীতে মুলত একদলীয় শাষন কায়েম করেছিল দলটি। ফলে জঘন্য হত্যাকান্ডের দ্বারা রাষ্ট্রনায়ক পরিবর্তন করা হয়। ব্যাক্তি বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ আমার কাছে সমার্থক কিন্তু রাজনৈতিক পর্যালোচনায় তার দোষত্রুটি তার অর্জনকেও ম্লান করেছে এ নিয়েও আমার কোন মোহ নাই। বর্তমানে দলটির ক্ষমতায় রয়েছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা এবং তিনিও দলের ভেতর একক ক্ষমতার অধিকারী তার সমতুল্য কেউই নেই আওয়ামী লীগে,সুতরাং দলটি "ওয়ান ম্যান শো" ফর্মুলা ধরে রেখেছে।
বি,এন,পি'র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান যদিও বাংলাদেশের জন্য একটি আশার প্রতিকতুল্য নাম তবুও তিনি আমলা নির্ভর রাজনীতি'র যে সুচনা করেছিলেন সেটা দুর্নীতিকে নিয়ে গেছে নতুন এক উচ্চতায় যার নাগাল আমরা আজও পেলাম না। তাকেও বর্বরোচিত ভাবে হত্যা করলো সেনাবাহিনী এবং এর পরে "ওয়ান ম্যান শো" ট্রেন্ড ফলো করে দলের নেতৃত্বে এল তার স্ত্রী। তিনি চেষ্টা করেছিল নিজ পুত্র তারেক কে উত্তরাধিকার সুত্রে প্রতিষ্ঠিত করে যেতে কিন্তু তারেক মুরুব্বীদের সাথে বেশীই বেয়াদবী করার মাশুল নগদ গুনে বিদায় নিয়েছে আপাতত।
এর বাইরে এরশাদ সাহেব। দেশের উত্তরান্চলের একমাত্র জাতীয় প্রতিনিধি।
বেচারার অবস্থা করুন কারন নারী কেলেংকারী এবং গণ উপহাসের পাত্র হয়েই তাকে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। তারপরেও তার দলের একমাত্র নেতা তিনি নিজেই। সেই "ওয়ান ম্যান শো"!
আর যারা যেমন,জামায়াতে ইসলামী বা বাম দল গুলো এরা আজও প্রকাশ্যে নিজেদের পরিচয় দেবার মতন অবস্থানেও পৌছুতে পারে নাই সেজন্য এদের নিয়ে কথা বলার পরিস্থিতি তৈরী হয় নাই বলেই আমি মনে করি। তারপরেও একটা জিনিস খেয়াল করার মত যে এসব দলে কিন্তু "ওয়ান ম্যান শো" হয় না। এরা দলগতভাবেই সকলের কাছে পরিত্যায্য কিন্তু কোন নিদৃষ্ট ব্যাক্তির নামের নিচে তারা চাঁপা পরে নাই!(গো,আ-নিজামী এরা দলের জন্য ক্ষতিকর নাম তাই তাদের উল্লেখ করলাম না)
মূল কথা এখন বলি,তা হল আমাদের দেশে এই একনায়ক কেন্দ্রীক মুল দলগুলোর জন্যই দেশে গনতন্ত্র বাধাগ্রস্থ।
বি,এন,পি তে কেউই পারে না খালেদা জিয়ার সামনে বলতে যে তারেকের কারনে দলের ক্ষতি হচ্ছে বা জিয়ার ভাবমুর্তি উজ্জল করার অপচেষ্টার কারনে দল জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে! মানে নিজেদের দুর্বলতা নিয়ে আলোচনার কোন সুযোগ বি,এন,পি'র নাই!যার কারনে অনেক সাধারন সমস্যা যেগুলোর সমাধান ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারাও বুঝে সেগুলো উচ্চপর্যায়ে উচ্চারিতও হয় না!!! এভাবে ১৬ কোটি মানুষের দেশে কোন রাজনৈতিক দল টিকে থাকতে পারবে না এবং যার প্রমান ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে যে বি,এন,পি'র গ্রহনযোগ্যতা অনেক নিচে নেমে গেছে। এখন তাদের ভরসা একমাত্র আওয়ামী লীগের অপ-শাষন,শুধুমাত্র মানুষ যদি আওয়ামী লীগের উপর ভরসা হারায় তবেই তারা সুযোগ পাবে।
আবার আওয়ামী লীগেও একদম হুবহু চিত্র, শেখ হাসিনা যেহেতু বঙ্গবন্ধুর মেয়ে এবং "শেখ" পরিবারে অন্য কোন সন্তান সেই দলে নেই সেজন্য তার ক্ষমতা আরো বেশি সে দলের ভেতর আরো বড় স্বৈরাচারী ক্ষমতা উপভোগ করে আসছে। আওয়ামী লীগের অসামাজিক আচরনের সাথে দেশবাসী পরিচিত। শুধু মাত্র বি,এন,পি-জামায়াতের হাত থেকে বাঁচার জন্যই তাদের নির্বাচিত করেছে জনগন।
কিন্তু তাদের এবারের টার্মেও যেই আচরন,আগামীতে যদি কেউ তাদের ভোট দেয়ও তাহলে কয়েক রাত লজ্জায় ঘুমোতে পারবে না শিওর হয়ে বলা যায়।
মানে,কেউ তার নিজ যোগ্যতায় যোগ্য নয়!!! বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব চন্দ্র! কোন সূর্য্য নাই!!! সুর্য হল দল দুইটার মরহুম দুই নেতা!
কিন্তু এখন শুরু হইছে নতুন কাহিনী! কি সেটা?
তা হল কর্নেল তাহের হত্যার বিচার এবং বুঝা যায় যে ফলাফল হবে "জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহেরের হত্যার জন্য দায়ী" এবং তাকে অপরাধী হিসেবেই ফোকাস করা হবে। ----- মানে,এক সূর্য্য নিভে যাবে!
যাক, কোন সমস্যা নাই। তিনি যদি আসলেই অপরাধ করে থাকেন যা মোটামুটি সবাই জানে যে তিনি করছেন তাহলে তাকে মিথ্যা সন্মান করার তো কোন কারন নাই!! নিভে যাক সূর্য্য!
এরপর ধারনা করা যায় যে,স্বৈরাচারী এরশাদের বিচার হবে যেটার জন্য ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রি উত্তরবঙ্গে যেয়ে বলেছেন যে তিনি তাদের দায়িত্ব নিবেন,মানে এরশাদের অনুপুস্থিতিতে তারা যেন আতংকিত না হয়।
আমার ধারনা,বেঁচে থাকলে এরশাদ শীঘ্রই তার অপরাধের সাজা পাবে। মানে? -------মাঝারি মাপের এই সূর্য্যও নিভে যাবে! চমৎকার,বাংলাদেশে অপরাধী মিথ্যা বলে কোনভাবেই পার পাবে না।
তখন দেশে থাকবে মাত্র একটা সূর্য্য। আওয়ামী লীগের সূর্য্য! কিন্তু কথা আছে,যেহেতু আমরা কোন মহানায়কের অপরাধই ভূলি নাই,কেউই অন্যায় করে পার পায় নাই সেকারনেই আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরে যারা ক্ষমতায় আসবে তাদের উচিত হবে এবং সংগত কারনেই তারাও পুরানো মামলা জাগাবে। আর সেজন্যই রয়েছে বাকশাল কায়েম এবং সিরাজ শিকদার হত্যার মত কিছু কলংকিত অধ্যায়।
যা পুনরুজ্জিবীত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে শেষ সূর্য্যটাকেও নিভিয়ে দেয়া সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। এর মানে দাড়াবে--------- সূর্য্যহীন বাংলাদেশ আর তখনই আগমন হবে কলংকবিহীন,সত্য কোন দল বা নেতার। বাংলাদেশ তখনই সত্যিকারের সূর্য্যের আলোয় উজ্জল হবে!
কিন্তু একটা সাবধানবানী!!!!
তরুন সমাজ যদি রাজনীতি নিয়া নির্লিপ্ত আচরন পরিবর্তন না করে,যদি দেশের নেতৃত্ব দেবার জন্য নিজেদের গঠন না করে,নিজের ভেতর সূর্য্যের মত তেজ ও আলো ধারন করতে না পারে তখন কিন্তু জামায়েত বা ধর্মবিশ্বাস হীন বামপন্থীরা ক্ষমতায় চলে আসার সুযোগ পাবে। রাজাকারের ইতিহাস এবং সাম্প্রদায়িকতার কারনে জামায়েত কে যে কারনে মানুষ ঘৃণা করে, ৮৭% মুসলমানের দেশে যদি ইসলাম বিরোধী কোন দল ক্ষমতায় আসে তাহলেও সেই সাম্প্রদায়িকতাই নতুন করে ছড়াবে এবং দেশে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরী হবে সুতরাং চোর-সাধু যে যাই হই না কেন যদি দেশ কে ভালবাসেন যদি দেশের ভাল চান তবে এখনই সাবধান হওয়া দরকার।
একটার পর একটা মিথ্যা সূর্য নিভে যাবে এবং আসল ও সত্যিকার সূর্যের খোঁজে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে নইলে সব অন্ধকার!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।