যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।
আমার এক বন্ধুর নাম এ। এ। চৌধুরী।
সে এখন ফর্মে আছে। দুর্দান্ত ফর্ম যাকে বলে। মেয়ে পটানোতে তার যোগ্যতা এখন আমাদের সবার কাছেই স্বীকৃত। হোস্টেলে থাকার সময় ভূতের ভয়ে একা রুমে থাকতে না পারলেও বর্তমানে সে এক মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা বলে আর অন্য মেয়েকে এস এম এস চ্যাট করে।
তার বর্তমান অবস্থার জন্য যে জিনিসটা সবচেয়ে দায়ী সেটা হচ্ছে ফেসবুক।
ফেসবুকের কল্যাণে তার এখন ৫/৬(সঠিক সংখ্যা অজানা) টা জিএফ সামলাতে হয়। তার প্রায় বছরখানেক আগ থেকেই আমার ফেসবুক একাউন্ট থাকলেও এই ব্যাপারে আমার ফর্ম খুব খারাপ। খারাপ ফর্ম থাকলে ক্রিকেটাররা যেমন অন্যজনের কাছ থেকে টিপস নেন ঠিক তেমনি আমি চৌধুরী সাহেবের কাছে টিপস চাইলাম। যে টিপসগুলো চৌধুরী সাহেব দিলেন তা মোটামোটি এরকম,
১। প্রথমে ঠিক করতে হবে মেয়েটিকে।
(এটাই আসল)একটা মেয়ে ঠিক করলে হবে না। কারণ আপনি নিশ্চিত না পারবেন কি না। তাই ভাল সংখ্যক মেয়ে নির্বাচন করতে হবে। ভাল সংখ্যা টা কত হবে সেটা আপনার বিবেচনা।
২।
এফ বিতে মেসেজ দিতে হবে। খুব সাধারন মেসেজ। হ্যালো হাউ আর ইউ টাইপ। এটাকে বলা হয় প্রাথমিক পদক্ষেপ।
৩।
সবার রিপ্লাই প্রত্যাশা করলে ভূল করবেন। সবার মধ্যে তিনভাগের এক ভাগ রিপ্লাই করবে। এখন আপনাকে এই মেসেজ গেম চালিয়ে যেতে হবে। মেসেজ গেম মানে মেসেজ পালটা মেসেজ।
৪।
মেসেজ ছোট ছোট হবে। প্রশ্নবোধক যেন হয় খেয়াল রাখবেন। কারণ প্রশ্নবোধক নাহলে উত্তর পাওয়ার সভাবনা কমে যায়। এক্ষেত্রে পড়ালেখার ব্যাপারে খোজখবর নিবেন,হাবিজাবি কোশ্চেন করতে পারেন।
৫।
হাবিজাবি কোশ্চেন মানে আউল ফাউল কোশ্চেন না। মনে রাখবেন হাবিজাবি এবং আউলফাউল দুইটা দুই জিনিস।
৬। নিজেরে লুল হিসেবে উপস্থাপন করবেন না। মেয়েটা যদি টের পেয়ে যায় আপনি লুল তাইলে আপনে শেষ।
নির্ঘাত শেষ। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবেন।
৭। সজ্ঞানে অথবা অজ্ঞানে কখনো ফোন নাম্বার চাইবেন না। ফোন নাম্বার চাইছেন তো ৯৫ পার্সেন্ট সম্ভাবনা আপনি শেষ।
কথা চালিয়ে যান মেসেজে।
৮। নিজেকে ভাল করে উপস্থাপন করুন। মেয়েদের ওয়ালে আজেবাজে পোস্ট করবেন না।
৯।
মেসেজে আপনার কাজ হল বলার মত পরিবেশ তৈরী করে দেয়া। কথা বলা না। এটা মনে রাখবেন। মেয়েরা আপনার কথা শুনার জন্য আপনাকে মেসেজ দিবে না। দিবে আপনাকে তার কথা বলার জন্য।
যেমন, জিজ্ঞেস করবেন, হবি মানে শখ কি?(যদিও কমন কোশ্চেন)
মেয়েটা অনেক কথা বলে উত্তর দিবে। আপনাকেও পালটা জিজ্ঞেস করতে পারে। তখন আপনি এক বাক্যে সম্ভব হলে এক শব্দে আপনার হবি বলুন। নিজের হবি নিয়া বিশাল কাব্য রচনা করতে যাবেন না। এক শব্দে উত্তর দিয়ে পরবর্তী প্রশ্ন করুন।
মনে রাখবেন মানুষ তার শখের বিষয়টাকে বেশী পছন্দ করে।
মেয়ের হবি যদি বাংলা ফিল্ম দেখা হয় তাহলে শাকিব খানের ডায়লগ কিছু মুখস্ত করে ওমরসানী স্টাইলে প্র্যাকটিস করতে থাকুন। চান্সে ব্যবহার করবেন।
অতএব শখ যদি হয় ক্রিকেট খেলা/ঘুড়ি ওড়ানো/ফুটবল খেলা/বই পড়া তাহলে আপনাকে ঐ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে এবং এগুলো নিয়ে চমকপ্রদ কথা বলতে হবে চান্সে। যেমন বই পড়া মেয়েটাকে হঠাৎ বলবেন শেক্সপিয়ারের একটা ছাড়া বাকী সব নাটকই অনুবাদ ছিল।
পাওলো কোয়েলহোর দি আলকেমিস্ট একটি অসাধারন বই। হুমায়ুন আহমেদের বই নিয়া ও কথা বলতে পারেন।
বেশী ভাব নিতে যাইবেন না। যেসব কথা চমকপ্রদ সেগুলাই বলবেন। খামখা যদি আহমদ ছফার পুষ্প বৃক্ষ বিহংগ পুরাণ নিয়া আলোচনা শুরু কইরা দেন তাহলে মেয়ে আপনেরে পন্ডিত ভাবব।
পন্ডিতদের মেয়েরা লাইক করে না।
{তবে সাধারনত বই পড়া কারো হবি হয় না। এমনি সবাই বলতে পারে বই পড়া হবি। সেক্ষেত্রে আপনাকে বুঝতে হবে। যে মেয়ে বলল তার হবি বই পড়া কিন্তু বই নিয়া কথা বললে তার মেজাজ খারাপ হয়,রনবীর কাপুররে নিয়া কথা বলতে বেশী আগ্রহ তাহলে আপনি মনে মনে বুঝে নিবেন ঘটনা কি।
মনে রাখবেন দুইয়ে দুইয়ে চার মিলানো একটি উত্তম বিদ্যা। }
১০। আপনি যে শহরে থাকেন মেয়ে ঠিক করবেন অন্য শহরের। অন্য বিভাগ হইলে আরো ভাল। যেহেতু এটা জীবন মরন প্রেম না।
জীবন মরন প্রেম করতে চিরিয়াচ জিনিস। ওটা থেকে দূরে থাকাই উত্তম।
১২। আগে অফার দিবেন না,সেল নাম্বার চাইবেন না। সব ঠীকঠাকমত করলে মেয়েই আপনাকে অফার দিবে ,ফোন নাম্বার দিবে।
১১। সতর্কতাঃ এলাকার মেয়ে কিনা আগে সিওর হয়ে যান। তা না হলে দেখবেন আপনর বাসায় এসে কোন একদিন হাজির।
১২। সতর্কতাঃ মেয়ে প্রবাসী হইলে সাবধান।
এই সাবধানতা আমার বন্ধু চৌধুরী সাহেবের ব্য্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে। তিনি একটা মেয়ের সাথে উপরের ১০/১২ টা নিয়ম ঠিকমত পালন করলেন। অবশেষে প্রবাসী এক মেয়ে উনার জন্য পাগল হয়ে গেল। শুধু পাগল না একেবারে ঘোর পাগল। মোবাইলে ফোন করে বলে লন্ডন থেকে চলে আসবে।
ব্যাপারটা ভয়াবহ। আমার বন্ধু আবার তার পিতামাতাকে ব্যাপক ভয় পান। এখন মেয়েটা তাকে বার বার অফার করলেও তিনি সবিনয়ে প্রত্যাখান করেও শান্তি পাচ্ছেন না। মেয়েটা আবার তার দুই বৎসরের বড়।
{এগুলো ব্যবহার করতে হবে সম্পুর্ন নিজ দায়িত্বে।
হিতে বিপরীত হইলেও হইতে পারে। }
কয়েকটি ফেসবুক ভালবাসার কথাঃ
১। ইথিপিয়ায় এক ষোড়শী মেয়ে ভালবাসত একটা ছেলেকে। ভালবাসা ভাল জিনিস। তাদের ফ্যামিলিও সব মেনে নিল।
ঠিক হল তাদের বিয়ে হবে। এর মাঝে কি একটা যুদ্ধ শুরু হবার পরে মেয়েটার বাবা মা সহ সবাই ইংল্যান্ডে চলে গেল। কাউকে বলে আসার মত পরিবেশ ছিল না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মেয়েটা ভূলল না তার বয়ফ্রেণ্ডকে। অবশেষে দশ বছর পর তারা আবার মিলিত হয় ফেসবুকের মাধ্যমে।
২। কেলি হিল্ডারব্রান্ট নামের এক মহিলার একদিন খেয়াল চাপলো নিজের নাম দিয়া সার্চ দিবেন এফ বি তে। দিলেন ও সার্চ। পাইলেন আরেকজন কেলিকে। কিন্তু ওইটা পুরুষ কেলি।
তারপর তাকে মেসেজ দিলেন। অতঃপর মেসজ গেম। অতঃপর শুভ বিবাহ।
৩। নব্বই ইয়ের আর এন্ড বি গায়িকা টেইলর কলিনরে তার মনে স্থান দিয়ে ফেলছিলেন আল্যান কুরি নামক একজন।
এরকম অনেক কেই তো আমরা মনে স্থান টান দেই। আমার এক বন্ধু ক্যাটরিনা রে স্থান দিছে জানি। প্রভারেও দিছিল একজন। এখন বলল দৌড়ানি দেয়। তো আসল কথায় আসি, বিশ বছর পর কুরি দেখতে পেলেন কলিনস এর ফেসবুক প্রোফাইল।
তিনি ভাগ্য ভরশা করে মেসেজ দিলেন। কলিনস ও সুন্দর ভাষায় রিপ্লাই দিলেন। অতঃপর মেসেজ গেম। অতঃপর বিবাহের সিদ্ধান্ত।
{গল্পটি বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য না।
এখানে চেলিব্রেটি এক এক জনের কয়টা প্রোফাইল আছে তা গুনতে ক্যালকুলেটর লাগতে পারে। তাই কেউ এই গল্পের মত কাজ করতে চাইলে ধরা খাবেন। }
৪। নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার একজন কন্ট্রিবিউটর ওয়াল্টা কির্ন এর নিজেকে হতাশ,দুঃখী, একা ইত্যাদি মনে হত। মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক,কারন তিনি তখন একলা শালিক।
বিরাট ভাবনায় জিনিস। বউ ডিভোর্স দিয়া চলে গেছে এজন্য তো আর জীবন থেমে থাকতে পারে না। একদিন ফেসবুকে খুজতে থাকলেন তার মত কাউকে পাওয়া যায় কি না। পেলেন একজনকে। তারপর মেসেজ গেম।
অতঃপর শুভ বিবাহ।
এই গেল কিছু কাহিনী। এগুলো এই সাইট থেকে পাইলাম।
View this link
ফেসবুকের আরেক জিনিস চ্যাট। ব্যাপক মজার চ্যাটের একটা বিষয় নিয়া ভিডিঃ
View this link
{পুরাই ফান পোস্ট ধরলে আনন্দিত হব }
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।