আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীন বাংলাদেশের পরাধীন নারী

সবার উপরে মানুষ সত্য!

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: অষ্টম খন্ড, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দৃশ্যপট ১ পৃষ্ঠা: ৫০ ঘটনা সংঘটনের স্থান ও তারিখ: মিটফোর্ড হাসপাতাল, ১৯৭১ সনের ২৭ শে মার্চ বিবৃতিকারকের নাম: 'পরদেশী', সুইপার, সরকারী পশু হাসপাতাল, ঢাকা। "একটি লাশের উপর থেকে চাদর টেনে উঠিয়ে দেখলাম একটি রূপসী ষোড়শী যুবতীর উলঙ্গ লাশ- লাশের বক্ষ আর যোনিপথ ক্ষতবিক্ষত, কোমরের পিছনের মাংস কেটে তুলে নেওয়া হয়েছে, বুকের স্তন থেতলে গেছে, কোমর পর্যন্ত লম্বা কালো চুল, হরিণের মতো মায়াময় চোখ দেখে আমার চোখ বেয়ে পানি পড়তে থাকল। মেয়েদের অধিকাংশ লাশ আমি সম্পূর্ণ উলঙ্গ দেখলাম, দেখলাম তাদের বুক থেকে স্তন তুলে নেওয়া হয়েছে। কারও কারও যোনিপথে লাঠি ঢুকানো আছে। " দৃশ্যপট ২ পৃষ্ঠা: ৪৪ বিবৃতিকারকের নাম: 'চুন্নু ডোম', ঢাকা পৌরসভা "মেয়েদের লাশ দেখে মনে হয়েছে, তাদের হত্যা করার পূর্বে তাদের স্তন সজোরে টেনে ছিড়ে ফেলা হয়েছে, যোনিপথে লোহার রড কিংবা বন্দুকের নল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যুবতী মেয়েদের যোনিপথের এবং পিছনের মাংস যেন ধারাল চাকু দিয়ে কেটে এসিড দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। " দৃশ্যপট ৩ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক-হানাদার বাহিনীর পুলিশী-থানার সামনে বাংলাদেশী মেয়েদেরকে নগ্নাবস্থায় উল্টা করে ঝুলিয়ে রাখা হত, আর তাদের উপর চালানো হত অমানবিক নির্যাতন! দৃশ্যপট ৪ ঘটনা সংঘটনের স্থান ও তারিখ: পাবনার ঈশ্বরদীর দিয়ারবাঘাইল, ২৪ জানুয়ারী ২০১১ "স্বর্ণা খাতুন (১৫) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে রোববার রাত ১১টার দিকে জোর করে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এরপর ধর্ষণ করে হাত-পা ভেঙে, চোখ উঠিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ একটি মেহগনি গাছের ডালের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। " বিশ্লেষণ দৃশ্যপট ১, ২ আর ৩ এর কাহিনী ছিল পরাধীন দেশে নিরীহ বাংলাদেশী নারীদের উপর পাক-বাহিনী আর রাজাকার কর্তৃক পাশবিক নির্যাতনের কিছু নমুনা। আর দৃশ্যপট ৪ হল, স্বাধীন বাংলাদেশের একটি নাবালিকার উপর বাংলাদেশী একজন নাগরিকের বর্বর অত্যাচারের কাহিনী।

আর এই রকম কাহিনী আজকাল বাংলাদেশে বারংবার ঘটছে। মতামত আমার তো মনে হয়, স্বাধীন বাংলাদেশের এইসব ধর্ষক আর সন্ত্রাসীরা, পরাধীন বাংলাদেশের ঐসব "পাক-সেনা, রাজাকার, আল-বদর আর যুদ্ধাপরাধীদের" থেকে কোন অংশে কম নয়। আসুন, এইসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আজ আমরা প্রতিবাদের সোচ্চার প্রতিধ্বনি তুলি। সর্বশেষে কাজী নজরুল ইসলামের 'নারী' কবিতার কিছু অংশ তুলে ধরলাম: "সে যুগ হয়েছে বাসি, যে যুগে পুরুষ দাস ছিল না ক’, নারীরা আছিল দাসী! বেদনার যুগ, মানুষের যুগ, সাম্যের যুগ আজি, কেহ রহিবে না বন্দী কাহারও , উঠিছে ডঙ্কা বাজি’। নর যদি রাখে নারীরে বন্দী, তবে এর পর যুগে আপনারি রচা ঐ কারাগারে পুরুষ মরিবে ভুগে!" তথ্যসূত্র: দৃশ্যপট ১, ২ ও ৩: হুমায়ূন আহমেদের 'জোছনা ও জননীর গল্প'।

দৃশ্যপট ৪: আমার দেশ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.