আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতা বিষয়ক চিন্তাভাবনা

সকল প্রকার জাগতিক গেঞ্জাম থেকে দূরে থাকার আপ্রাণ চেষ্টায় রত একজন মানুষের ব্লগ.......

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই প্রতিবেদনটি পড়ার পর হঠাৎ করেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, স্বাধীন বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যত দিনগুলির কথা মনে ছোটখাট একটা ঝড় বইয়ে দিল । জাতি হিসেবে আমরা সুভাগা এবং দুর্ভাগা দু'টোই । এটি বলার পিছনে কারণ আছে অবশ্যই । কেন সুভাগা, তা বলার প্রয়োজন বোধ করছি না, পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের বদৌলতে তা আমরা মাংস হাড় মজ্জা সহ উপলব্ধি করি । কিন্তু দুর্ভাগা কেন ? প্রথমত, জাতি হিসেবে স্বাধীনতা অর্জন করার ৩৯ বছর পরেও আমরা আজও জানি না স্বাধীনতার ঘোষক কে ।

উপরে যে প্রতিবেদন টির উল্লেখ করেছি, এখানে দেখা যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম তাদের অগ্রজ দের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা শুনছে । আমাদের সবাই কমবেশি কিছু না কিছু শুনেছি । কাজেই, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ননা আমাদের কে দিতে পারছেন, তাঁরা অবশ্যই স্বাধীনতার ঘোষক কে, ৭ মার্চ কে কি ঘোষনা দিয়েছিলেন, কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে কে কি ঘোষনা দিয়েছিলেন তার ও বর্ননা আমাদের দিতে পারবেন। কিন্তু আমরা কি তা জানতে পেরেছি ? দ্বিতীয়ত, ১৯৭১-১৯৭৫ পর্যন্ত এই সুদীর্ঘ চারটি বছর আমাদের এই প্রিয় বাংলাদেশে কি ঘটেছিল, তা কি কখনো আমাদের সামনে কেউ বলে ? কেন আমরা স্বাধীনতা অর্জনের ঠিক পরের চারটি গৌরবময় বছরের কথা সুস্পষ্টভাবে জানতে পারি না ? আমাদের অগ্রজেরা অবশ্যই জানেন । ( এখানে বলে রাখা ভাল, আমি যা শুনেছি তা বিশ্বাস করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি ।

কারণ, উৎস স্বল্পনির্ভরযোগ্য ) তৃতীয়ত, আমাদের দেশের ইতিহাসের বেশ লম্বা একটা সময় একজন অতি সু(!)পরিচিত শাসক রাজত্ব করে গিয়েছেন , যাকে ইদানিং " মহাচোর " , " লুচ্চা " ইত্যাদি বিশেষনে ভূষিত করা হয় । আমার প্রশ্ন, সুবিশাল উত্তরবঙ্গের মহাসড়কগুলো কে তৈরি করে গিয়েছেন ? সেই সময়টায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা এই লুচ্চাকে কি দৃষ্টিতে দেখত ? চতুর্থত, ১৯৯১ সাল থেকে গণতন্ত্রের আশীর্বাদ আমাদের দেশের উপর তার সুধা বর্ষন শুরু করেছে । এই সুধা আমজনতার জন্য উপকারী কি ? উপকারী হলেও কতটুকু তার পরিমাণ ? ১৬ কোটি মানুষের এ দেশের ৭০%( সত্যতা নির্ভরযোগ্য নয় । কেউ যদি সত্যতার প্রমাণ চান, তাহলে স্বাক্ষরতাশুমারী করতে পারেন ! ) এর উপর জনসংখ্যা যেখানে নিজের নামটি পর্যন্ত সঠিকভাবে লিখতে পারে না, পড়তে পারে না সেখানে গনতন্ত্র কি কাজে আসে ? জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেশের ৭৫% মানুষ নিজ এলাকায় কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর নাম কি, তা বলতে পারে না । ৫০ % এর উপরে মানুষ রাজনৈতিক দলগুলোর নাম পর্যন্ত বলতে পারে না ।

এরা জানে দু'টো মার্কার নাম, নৌকা এবং ধানের শীষ( কারো সন্ধেহ থাকলে ঢাকার নিম্নবিত্ত এলাকায় ও গ্রামাঞ্চলে অভিযান চালাতে পারেন ) । এরকম আরো ভুরিভুরি উদাহরণ দেওয়া যায় । এরা যখন নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে, তখন কারা নির্বাচিত হয় তা কল্পনা করে নিন । পঞ্চমত, এখন বলি দেশ গড়ার কারিগরদের কথা । শিক্ষকেরা একটি দেশের ভবিষ্যত কান্ডারীদের গড়ে তোলেন, জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করেন ।

কিন্তু যারা এই মহৎ কাজটি করেন, তারা কি শুধুই দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করেন? নিজের পরিবারের প্রতি তাদের দায়িত্ব নেই ? অবশ্যই আছে । একজন মানুষ অবশ্যই নিজের দেশ কে ভালবাসে, দেশের প্রতি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে চায় । কিন্তু দেশের সরকার যখন তাকে তার প্রাপ্য মর্যাদার সিকিভাগ দিতেও ঘৃণাভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তখন তার কিই বা করার থাকে ? আমাদের দেশে শিক্ষকদের সম্মানী দেয়া হয় সবচেয়ে কম । শুধুমাত্র এই কারণে দেশের সেরা মেধা গুলো এই পথে যেতে চায় না । কেনই বা যাবে ? সুদীর্ঘ ১৮-১৯ বছরের শিক্ষাজীবনে নিজের সর্বোচ্চ পরিশ্রমটি করার পর যদি এমন উপার্জনের চাকরি হয় যা দিয়ে নিজের ১০ দিনের খাবার ও ক্রয় করা সম্ভব হয় না, কেন তারা এই পেশা বেছে নেবে ? আপনাদের সন্দেহ থাকলে দেশের স্কুল কলেজের শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে দেখতে পারেন ।

এভাবে যদি বলতেই থাকি, বলা শেষ হবে না । আপাতত এখানেই থামছি । ( একান্তই নিজস্ব চিন্তাভাবনার একটি ক্ষুদ্র প্রকাশ এই লেখাটি । ভুল থাকা স্বাভাবিক । যারা লেখাটি পড়বেন, তারা ভুলগুলি ধরিয়ে দেবেন এবং কিভাবে ভুলগুলি দূর করা যায় তা জানাবেন ।

নতুন ব্লগার হিসেবে এটাই আমার প্রত্যাশা )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.