আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কানাডিয়ান ভাইয়ের পরিকল্পনা ........................বর্তমানে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রয়েছে।



সন্ত্রাসী হামলা চালানোর লক্ষ্য নিয়ে একদল চরমপন্থী কানাডিয়ান পাকিস্তানের আল-কায়েদা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, অনলাইনে প্রকাশিত এমন এক প্রতিবেদনের সত্যতা জানতে রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) তদন্ত শুরু করেছে। আরসিএমপির সহকারী কমিশনার জাইলস মাইসুদ শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, মাউন্টিস এবং তাদের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সহযোগীরা প্রতিবেদনের সত্যতা ও নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করতে একযোগে কাজ করছে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সম্প্রতি হংকং-ভিত্তিক এশিয়া টাইমস অনলাইন তালিবানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ মাসের শুরুতে এক প্রতিবেদনে জানায়, কানাডায় জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা এবং গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে একদল পাশ্চাত্য ককেশানকে ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন আল-কায়েদা পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে নিবিড় প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এর মধ্যে কানাডিয়ান নাগরিকেরাও রয়েছে।

প্রাথমিক জঙ্গি প্রশিক্ষণ শেষে বিশেষ প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে তারা এখন পাকিস্তানে রয়েছে। সেখানে তারা অত্যাধুনিক অস্ত্র চালনা ও উত্তর আমেরিকায় চোরাচালান নেটওয়ার্কে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কানাডার নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এশিয়া টাইমসের প্রতিবেদনটিকে গুরুত্বের সঙ্গেই গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে আরসিএমপি বিষয়টি জোরোশোরে তদন্ত করে দেখছে। এশিয়া টাইমস উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অবস্থান করা আরিফ ওয়াজির নামের এক জঙ্গির উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ১২ সদস্যের কানাডীয় জঙ্গিদের একটি দল মিশরীয় জঙ্গি সংগঠন জিহাদ আল-ইসলামের সঙ্গে যোগ দিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেছে।

তালিবানদের অধীনে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়ে দলটি পাকিস্তানে চলে যায়। বর্তমানে তারা আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের পার্বত্য অঞ্চল ওয়াজিরিস্তানের আল-কায়েদার প্রশিক্ষণ শিবিরে অবস্থান করছে। সেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও জার্মানির জঙ্গিদের সঙ্গে একত্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। জঙ্গি আরিফ ওয়াজির আরও জানান, প্রশিক্ষণ শেষে কানাডায় ফিরে কানাডীয় জঙ্গিরা আল-কায়েদার পরিকল্পনা-মাফিক বড় বড় শহরে সন্ত্রাসী হামলা চালাবে। এশিয়া টাইমসের পাকিস্তান ব্যুরো প্রধান সৈয়দ সেলিম শেহজাদ ও উপজাতি সম্পর্ক-বিষয়ক সংবাদদাতা তাহির আলী লিখিত প্রতিবেদনটিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে কানাডীয় জঙ্গিদের পাশাপাশি পাশ্চাত্য দেশগুলো থেকে যাওয়া জঙ্গি সদস্যদের প্রশিক্ষণ বিষয়েও বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়।

উপমহাদেশে উগ্রবাদী মুসলিম জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ে অভিজ্ঞ সৈয়দ সেলিম শেহজাদের লেখা ‘ইনসাইড আফগানিস্তান অ্যান্ড দ্য তালিবান ৯/১১ অ্যান্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক একটি বই শিগগিরই বাজারে আসার কথা রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে একজন পশ্চিমী নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, একদল জঙ্গি ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানিতে ভারতের মুম্বাই শহরে সংঘটিত বহুল আলোচিত ভয়াবহ বন্দুক হামলার আদলে একটি হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ব্যাপারে পাকিস্তানের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ ও জার্মান জঙ্গি রয়েছে এ দলটির সঙ্গে। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে নেওয়া হয় বিশেষ সতর্কতা। কিন্তু পরে দেখা যায়, পশ্চিমী ও পাকিস্তানী নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পাওয়া তথ্যগুলো ছিল ভুয়া।

একই মাসে জার্মানীর ফেডারেল ক্রিমিনাল পুলিশের দপ্তর থেকে জানানা হয়, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে যে ৭০ জন জার্মান নাগরিক পাকিস্তানের একটি আইনবর্জিত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ এরই মধ্যে জার্মানীতে ফিরে এসেছে। সম্প্রতি জার্মানী-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব টেররিরিজম অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসির পরিচালক রলফ টপহোভেন বলেছেন, হিসেব করে দেখা গেছে, ৩০ থেকে ৪০ জন জার্মান চরমপন্থী প্রশিক্ষণের জন্য বর্তমানে আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ ভয়াবহ হামলার পর পাশ্চাত্য দেশগুলোয় সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে প্রায়ই নানা রকম আশঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পরিবেশিত হয় নানা রকম তথ্য-উপাত্ত। তবে গত বছরের অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি পলিসি ইনস্টিটিউট এবং সুইডেনের ডিফেন্স কলেজের অ্যাসামেট্রিক থ্রেট স্টাডিজের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক করে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, তা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূণ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রগতিবাদী পাশ্চাত্য নাগরিকেরা, যারা সহজেই বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ করতে সক্ষম, তারা দিন দিন চরম পন্থার দিকে ঝুকেঁ পড়ছে। বড় বড় শহরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য তারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মিত্র দেশগুলোর প্রতি নতুন ধরনের এই হুমকির বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করার জন্য জোরাল অনুরোধ জানানো হয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কানাডা, জার্মানী বা ফ্রান্সের মতো অনেক দেশের জন্য মুসলিম জঙ্গিরা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকি হিসেবে বিচিত হতো না। কিন্তু ইরাক-আফগানিস্তান হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী মিত্র হয়ে ভূমিকা পালনের কারণে, মুসলিম জঙ্গিরা এ দেশগুলোর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

আর ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়েদা পশ্চিমী নাগরিকদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়ে এসব দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য এ সুযোগটিই বেছে নিচ্ছে। মূল সংবাদ ও তথ্যসূত্র ......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.