আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন কানাডিয়ান - মুবিন শেখ

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি

আপনাদের অনেকের হয়তো মনে আছে ২০০৫ সালে কানাডার টরন্টোর অধিবাসী এক সকালেলে ঘুম থেকে উঠে একটা ভয়াবহ খবর শুনে। বিশেষ করে কানাডিয়ান মুসলমানদের জন্যে ছিলো সেই সংবাদটি একাধারে দুঃখজনক আর দুঃচিন্তার। ১৭জন কানাডিয়ান মুসলমানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিলো টেররিস্ট সন্দেহে। তাদের বয়স ১৬ থেকে ৪৬ আর শিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী থেকে হাইস্কুল পাশ পর্যণ্ত। এর মধ্যে একজন ছিলো ১৬ বছরের ছেলে যে গ্রেফতারের মাত্র কিছুদিন আগে হিন্দু ধর্ম ছেড়ে মুসলমান হয়েছিলো।

এরা বেশ কিছুদিন যাবত বোমা বানানোর সরঞ্জাম যোগার করছিলো আর ট্রেনিং নিচ্ছিলো ওন্টারিওর একটা নির্জণ এলাকায়। পুলিশ যখন এদের ধরে - তখন অবাক হয়েছিলাম। কারন টেররিস্ট গ্রুপগুলো কি এতোই দূর্বল যে আরসিএমপি তাদের ভিতরে ঢুকে তাদের থেকে তথ্য নিতে পেড়েছে! কারন পর্যাপ্ত প্রমান না যোগাড় করে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করবে না - এইটা নিশ্চিত। যখন মামলা শুরু হলো তখন আসল ঘটনা বেড়িয়ে এলো। মুবিন শেখ নামক এক ব্যক্তি পুলিশের ইনফর্মার হিসাবে এখানে কাজ করেছে।

মুবিন শেখ টরন্টোর মিডিয়াতে একটা পরিচিত নাম। বিশেষ করে যখন ওন্টারিওতে শরিয়া আইনের শালিস আদালত নিয়ে বিতর্ক চলছিলো তখন মুবিন শেখকে দেখা যেত হিজাব আর নেকাব পড়া স্ত্রীকে নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে প্লাকার্ড নিয়ে দাড়িয়ে আছে। চমৎকার উচ্চারনে ইংরেজী বলা এই যুবক দ্রুতই মিডিয়ার আলোচনার কেন্দ্র বিন্তুতে চলে আসে। তাকে প্রায়ই দেখা যেত বিভিন্ন টিভিতে শরিয়া আদালতের পক্ষে আলোচনায় অংশ নিতে। তার চমৎকার বাচন ভঙ্গী আর সুস্পস্ট কথা বলার কারনে কোনঠাসা হয়ে যাওয়া আধুনিক মুসলিম বুদ্ধিজীবি বিশেষ করে তারেক ফাত্তাহ আর ইশরাত মানজি তাকে চরম মৌলবাদী বলে চিহ্নিত করতে দ্বিধা করে নি।

এই ভদ্রলোক যখন প্রকাশ্যে ঘোষনা দিলো যে সে টেররিস্ট গ্রেফতারের প্রধান সহায়তাকারী - তখন তার সমালোচকরা হতাশ হয়ে গেল। এই লোকের কথা আর বাহ্যিক অবয়ব যেখানে একজন টেররিস্টের প্রতীক সেখানে সে টেররিস্টদের বিরুদ্ধে কাজ করেছে - অবিশ্বাস্য বটে। সে আরো ঘোষনা দিলো - সে পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া কিছু প্রস্তাব - যেমন পরিচয় গোপন করে ভিন্ন প্রদেশে গিয়ে বাস করা আর পরোক্ষভাবে আইনজীবির মাধ্যমে কোর্টে স্বাক্ষী প্রদান যা একজন স্বাক্ষীর নিরাপত্তার বিবেচনায় আইনগত ভাবে স্বীকৃত - তা নিতে অস্বীকার করেছে। মুবিন শেখের বক্তব্য হলো - ইসলামের নামে নিরিহ সাধারন মানুষ হত্যা করার যে কাজ চলছিলো সে তার বিরুদ্ধে কাজ করেছে - মানবতা আর দেশপ্রেমের কারনে। এই কথাটা কানাডার সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তিরাও স্বীকার করেছে - মুবিন শেখের সহায়তা না পেলে তাদের পক্ষে হয়তো এই গ্রুপকে ধরা সম্ভব হতো না।

হয়তো একদিন মাদ্রিদ বা লন্ডনের মতো টরন্টোর সাবওয়ে বা বাসে বোমা বিস্ফোরনের শিকার হতো একদল নিরিহ মানুষ। মুবিন শেখ যা করেছে তা অসাধারন আর প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু একটা বিশেষ মহল কি মুবিন শেখের এই কাজকে সহজ ভাবে নিয়েছে? এখনও শুনি - বিতর্ক চলছে - মুবিন শেখ কি আসলো দেশপ্রেমিক না একজন মুনাফেক! আগ্রহী পাঠকদের জন্যে মুবিন শেখের সিবিসি রেডিও স্বাক্ষাৎকারে লিংক দেওয়া হলো: Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.