স্বাধীনতার প্রতি
মহাদেব সাহা
স্বাধীনতা আর তুমি থেকো না এমন শব্দহীন
সাধ্যাতীত দূরত্বে আমার
সহসা গভীর রাতে বৃষ্টিপতনের মতো বেজে ওঠা
ছুঁয়ে যাও আমার শরীর
তুমি হও ভূমিলগ্ন খুলে দিয়ে সমস্ত নিষেধ।
দন্ডিত বালক যেন অনায়াসে ছুঁতে পারে তোমাকে এখন
নেড়ে চেড়ে সহজে দেখতে পারে নিষিদ্ধ খেলনা তার
তোমাকে রেখেছে সেই কবে থেকে অন্তরালে,অদৃশ্য আমার
হে আমার স্বাধীনতা তোমার স্পর্ধিত হাতে
খুলে ফেলো যেখানে রয়েছে লেখা অসত্য নিষেধ।
আজন্ম তোমার জন্য ভয়ানক দুঃখী আমি
মনমরা,এমন একাকী
সেই কবে ঘুমের মধ্যে কেঁদে উঠি নিঃসঙ্গ বালক
কেন কেউ তা জানে না
সে শুধু তোমার জন্য স্বাধীনতা,
সে শুধু তোমার জন্য!
একটি অদেখা শব্দ আতিপাতি খুঁজেছি কেবল
সারিবদ্ধ বইয়ের পাতায়,চিঠিতে
এই একটি সুপ্রিয় শব্দ কেউ কোনোদিন লেখেনি আমাকে।
কতদিন স্কুলের খাতায় সভয়ে লিখেছি স্বাধীনতা
পরক্ষনে অপরাধী শিশুর মতন
আঁকিবুকি তোমাকে কেটেছি স্বাধীনতা,
স্বাধীনতা ভীরু প্রেমিকার মতো থেকো না
সামান্যতম দূরে,
সহসা গভীর রাতে বেজে ওঠে অলীক মাইক্রোফোনে
বেতার ও তরঙ্গিত টিভির পর্দায় হও সোচ্চারিত,
বেজে উঠে আমার সোনার বাংলা,জয় বাংলা,জয় বাংলা আমার।
পুনরায় তোমাকে পোষ্টার করি
বিশাল অক্ষরে যত্রতত্র
দেয়ালে,গাছের দেহে,
তুমুল বৃষ্টির মতো অকস্মাৎ
ঢেকে দাও সত্তা ও শহর!
স্বাধীনতার জন্য
সুনীল গঙ্গোপধ্যায়
স্বাধীনতা শব্দটি কৈশোরে বড় প্রিয় ছিল
যেনো আবছা দিগন্তের অপাশেই রয়েছে সেই
ভালোবাসার মতন শিহরনময়
এক গভীর প্রান্তর
বয়ঃসন্ধির মোড় পেরুলেই সেখানে পৌঁছে যাবো
সে কি অধীর প্রতিক্ষাময় রোমাঞ্চ ছিল তখন!
এরপর এলো সেই স্বর্ণময় দিন,এমন একটি
বিন্দুতে এসে দাড়ালুম
যার দুপাশ দিয়ে আকাশ বিস্তৃত হয়ে গেছে
সূর্যের সোনালী রশ্মি আশীর্বাদ জানালো
বৃষ্টি দিল সব গ্লানি ধুইয়ে
সবাই বললো এইতো বেশ পবিত্র প্রস্তুত হয়েছো
এবারে কয়েদখানার মধ্যে সুড়সুড় করে ঢুকে পড়ো!
বাঁইশ বছরে পা দেয়ার পর দুদিকে দুকান ধরে
টান মারলো
জীবিকা ও সামাজিকতা
পৃথিবীটাকে যে রকম চেয়েছিলুম তার উপরে শুধুই কুয়াশা
যেনো সব কিছুই আছে, ছুঁতে পারছি না
চেয়েছিলাম মানুষের মুক্তি, কিন্তু আমার হাতে পড়েছে বন্ধন
দূরত্বের আড়াল থেকে কে যেন ডাকছে, বুঝতে পারছি না ভাষা
ছোট ছোট আরাম, টুকিটাকি মোহজালে জড়িয়ে দিয়েছে সর্বাঙ্গ
এ রকম কথা ছিল না,এ রকম তো কথা ছিল না!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।