আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাপক: সহৃদয় দেশ হিতৈষী, প্রেরক: পাবলিক

মনেরে আজ কহযে, ভাল মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে।

হে আলোর দিশারী (গণ), হে দেশের কান্ডারী (গণ), হে দেশ হিতৈষী (গণ), আপনাদের মহামূল্যবান সময় থেকে কিছুটা সময় এই চিঠি পড়া এবং এর উত্তর দেয়ায় নিয়োজিত করে আমাদের বাধিত করুন। মাঝেমাঝেই পত্রিকা এবং ব্লগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিংবা কোন হর্তা কর্তা বিধাতার কাছে আমাদের মত কিছু অর্বাচীন পত্র লিখে থাকে। আমাদের কেউ কোনদিন জবাব পেয়েছে বলে আমি শুনিনি। ব্যক্তিগতভাবে পত্র মারফত জবাবের তো প্রশ্নই ওঠে না, সামষ্টিকভাবে কোন জনসভা কিংবা অন্য কোথাও পরোক্ষভাবেও জবাব পেতে দেখিনি।

অনেক চিন্তা করে দেখলাম, মূর্খ বলেই আমরা বামন হয়ে চাঁদে হাত দেয়ার মত এমন দু:সাহস আমরা করে থাকি। তাঁরা অনেক বিশাল ব্যক্তিত্ব। তাদের কাজের পরিধিও বিকট (শব্দ নির্বাচনে ভুল হলে ক্ষমা প্রার্থনীয়)। তারা যে আমাদের পত্রের জবাব দেবেন না, এতে আর আশ্চর্য হওয়ার কি আছে। দু:খের বিষয়, ঘটে আমাদের বুদ্ধি না থাকলেও আমরা চিন্তা করতে ছাড়ি না।

আর চিন্তা করলেই প্রশ্নের জন্ম হয়। সেই প্রশ্নের উত্তর না পেলে আমাদের অস্থির লাগে। এই অস্থিরতা দূর করতেই আমাদের এই বুদ্ধিদীপ্ত অপপ্রয়াস। রথী মহারথী গণেরা তো আমাদের প্রশ্নের জবাব দেবেন না। কিন্তু তাঁদের পদলেহনকারী চ্যালাচামুন্ডারাতো (শব্দ দুটি ব্যবহার করে মনে হচ্ছে আমাদের দিয়ে আর কিছু না হলেও সাহিত্য হতে পারে, তা না হলে এমন ভার বহনকারী ব্যক্তির সাথে এমন ভারিক্কী শব্দের সমাহার কি ঘটাতে পারতাম?) আমাদের খুব দূরের কেউ নন।

আপনাদের কাছেই প্রশ্ন করি। আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের নিরাশ করবেন না। লিখতে গিয়ে ঝামেলায়ই পড়েছি। প্রশ্ন তো আর একটি দু'টি নয়, প্রশ্ন অসংখ্য। সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় কি আর আপনাদের হবে? তাই একটি প্রশ্নই করবো।

যদি জবাব দেন, তাহলে আস্তে আস্তে আরও প্রশ্ন করবো। অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন ব্লগে আওয়ামী লীগের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার চলছে। আমি এমনিতেই কম বুঝি, এখন আরো উদ্ভ্রান্ত লাগছে। ব্লগগুলি পড়ে মনে হচ্ছে অন্য কোন দল ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ তরতর করে না হলেও মসৃণ গতিতে এগিয়ে যেত। মনে হচ্ছে সীমান্তে ভারতীয় নৈরাজ্য বন্ধ হয়ে যেত, ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন বন্ধ হয়ে যেত, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে আসতো ইত্যাদি, ইত্যাদি।

কেউ বা আবার আওয়ামী লীগের সপক্ষে বলতে গিয়ে বি.এন.পি-র অক্ষমতাকে সামনে নিয়ে আসছে। আর কেউ কেউ পরোক্ষভাবে জামায়াতের সাফাই গাইছে। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই আমরা দেখেছি নানা সমস্যায় জর্জরিত এক দেশ। দেখেছি নানা শাসনামল। কেউ বা ক্ষমতায় এসেছে সামরিক উপায়ে, কেউ বা আবার আমাদের ভোটেই নির্বাচিত হয়ে অথবা নির্বাচিত হওয়ার ভান করে।

কিন্তু কাউকেই মাথা উঁচু করে ক্ষমতা ছাড়তে দেখিনি। সমস্যাগুলোকে কেবল ডানা মেলতেই দেখেছি, কোন সরকারকেই এই পাগলাঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতে দেখা তো দূরের কথা, প্রয়াস নিতেও দেখিনি (কখনো কখনো লোক দেখানো চেষ্টা হয়েছে সত্য)। অস্বীকার করবোনা দেশ এর মধ্য দিয়েই এগিয়েছে অনেক, সাথে সাথে অন্যান্য দেশ কি পরিমাণ এগিয়েছে সেই হিসাবও কষবোনা। তারপরও ঐ যে বললাম, একটা কিন্তু এসেই যত সব গন্ডগোল করে। আমার ক্ষুদ্রবুদ্ধির বিশ্লেষণ বলে এরশাদের স্বৈরশাসনেও বি.এন.পি বা আওয়ামী আমলের চেয়ে দেশ অনেক ভালো অবস্থানে ছিল।

তাই বলে কি জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চাওয়া উচিত? অবশ্যই নয়। বি.এন.পি.-র উপর কি আস্থা রাখা যায়? আমি রাখতে পারিনা। স্বধীনতার পিছনে আওয়ামী লীগ-এর গৌরবময় অবদানের জন্য কি আওয়ামী লীগকে যা খুশি করার লাইসেন্স দেয়া যায়? তা ও তো পারি না। জামায়াত ইসলামীকে এ দেশ এখনো ক্ষমতায় দেখেনি। তাই বলে কি তাদের স্বাধীনতা বিরোধী ভূমিকাকে ভুলে যাওয়া সম্ভব? সেটাও পারি না।

সমাজতান্ত্রিক আদর্শকে অন্তরে ঠাই দিয়েছে বলে যে দলগুলো দাবী করে সেগুলো তো অন্তর্দন্দ্ব থেকেই বের হতে পারছে না, নিজেদের কর্ম পন্থাই ঠিক করতে পারছে না; দেশকে দিকনির্দেশনা কিভাবে দেবে? কেন এতগুলো দল থেকে একটির উপরও আস্থা রাখতে পারছি না, তার বিশদ ব্যাক্ষার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আমাদের ধারণা, আপনারাও তা জানেন। যদি না জেনে থাকেন বা না বুঝে থাকেন, কষ্ট করে জানাবেন, পরবর্তী পত্রে জানিয়ে দেবো। যদি ময়না, টিয়ে বা কাকাতুয়া হতাম তাহলে কি ভালোই না হতো। আপনাদের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে আওয়ামী বা বি.এন.পি পন্থী হয়ে পাঁচ বছর পর পর দেশকে ধর্ষণ করতে পারতাম।

কিন্তু হায়, বিধাতা আমাদের মানুষ করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, মানুষনামধারী করে নয়। তাই তো নীরবে কাঁদি। কখনো কখনো সেই কান্না আগ্নেয়গিরী হয়ে বের হয়ে আসতে চায়। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, কাপুরুষ আমরা। আগ্নেয়গিরী থেকে যে গলন্ত লাভা বের হয়ে আসে, তাই আবার গিলে ফেলি।

ছারখার হয়ে যায় সমগ্র সত্ত্বা। তবুও মুখ বুজে থাকি। আমরা এক দু:সহ অবস্হার মদ্ধ দিয়ে যাচ্ছি। মাথার উপর গনগনে সূর্য। সূর্যের প্রখর তাপ থেকে মুক্ত করার আশ্বাস নিয়ে যে মেঘ আসে, সে সাথে নিয়ে আসে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়।

রোদবৃষ্টি থেকে রক্ষার আশায় যে ছায়াবৃক্ষের তলে আশ্রয় নিতে যাই, সেটি আবির্ভূত হয় বিষবৃক্ষরূপে। বাঁচার আশায় উন্মাদের মত ছুটতে ছুটতে ছোটার শক্তিও নি:শেষিত প্রায়, আর ছুটে যাওয়ার জায়গাই বা কোথায়? আপনারা যারা নিজ নিজ দলের সমর্থনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রচারণা চালাচ্ছেন, অথবা কারও যদি কোন একটি দলের উপর সামান্যতম আস্থাও থেকে থাকে তাদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ, কারণ বিশ্লেষণ করে পোস্ট দিন (এখানেও কমেন্ট করতে পারেন) অথবা লিংক দিন। আপনাদের অপছেন্দের দলটি কেন ভালোনা, সেটা আমরা জানতে চাইনা। আমরা ইতিমধ্যে এদের উপর বীত:শ্রদ্ধ, বিরক্ত এবং এরা আমাদের চোখে ভয়ংকর। দলীয় প্রপাগন্ডা চালাতে হলে অন্যের কি দোষ আছে সেটা না খুঁজে, আপনাদের কি গুণ আছে সেটা বলুন।

আপনাদের কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি যে নোংরামী ছাড়া আর কিছুই না, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। আমরা সাধারণ জনগণ। আমাদের জ্ঞানের পরিধি সিমীত। আমাদের বুঝতে ভুল হতেই পারে। আমরা আপনাদের আলোয় আলোকিত হতে চাই।

আপনারা যদি সত্যিই সদুদ্দেশ্য নিয়ে রাজনীতি করে থাকেন, আপনাদের যদি সত্যিই দেশের জন্য হিতকর কোন দলীয় নীতি থেকে থাকে, তাহলে আমাদের সেটা জানান। আশা করি আপনারা আমাদের নিরাশ করবেন না। আপনাদের গুণমুগ্ধ, পাবলিক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.