আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপমহাদেশের মানচিত্র পরিবর্তন করা হচ্ছে? ডেটলাইন ২০২১-২০২৫ সাল? (চির আকাঙ্খিত অখন্ড ভারত-মাতা)

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
ছবি-১ সাপ্তাহিক আউটলুক পেন্টাগন পরিবেশিত মহাপরিকল্পনা নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন আগের পর্বে বলেছি (Click this link...), মার্কিন গোয়েন্দা কর্তা রালফ পিটার মুসলিম বিশ্বকে ভেঙ্গে চুরমার করতে একটি নতুন মানচিত্র দিয়েছেন। তার চিন্তার ঠিক সমধর্মী একটি পরিকল্পনা পাওয়া যায় ‘এশিয়া ২০২৫’ নামক এক প্রতিবেদনে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০০, ভারতীয় সাপ্তাহিক আউটলুক পেন্টাগন পরিবেশিত এই মহাপরিকল্পনা নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে (দেখুন এখানে, Click This Link পত্রিকার ইংরেজী অংশটি ছবি-৪ দেখুন )। সাপ্তাহিক আউটলুক (Weekly Outlook) হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন। প্রথম দিকে এটাকে ভারতীয় প্রোপাগান্ডা বলে মনে হলেও সাম্প্রতিক কালের ঘটনাপ্রবাহ বিশেষ করে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পরিস্থিতির পর অনেকে এটা নিয়ে ব্যাপক চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।

পেন্টাগন প্রণীত ‘এশিয়া ২০২৫’ পূর্ণাঙ্গরূপে কোথাও প্রকাশিত হয়নি। আউটলুক ছাড়াও ওয়াশিংটন পোস্ট (১৭ মার্চ ২০০০) এবং সিংগাপুরের প্রভাবশালী দৈনিক স্ট্রেইট টাইমসের ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০০ সংখ্যায় (দেখুন এখানে, Click This Link ) প্রতিবেদনের চুম্বক অংশ মন্তব্যধর্মী সংবাদ হিসেবে প্রকাশিত হয়। ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয় ‘‘গত বছর গ্রীষ্মকালে পেন্টাগনের ঝানু ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা আন্দ্রে মার্শালের নেতৃত্বে রোড আইল্যান্ডের নৌবাহিনী কলেজে এক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের আলোচনা পরে সহকারী প্রতিরক্ষা সচিবের গ্রীষ্মকালীন প্রতিবেদন ‘এশিয়া ২০২৫’ হিসেবে তৈরি করা হয়। ’’ স্ট্রেইট টাইমের মতে, পেন্টাগনের কর্তাব্যক্তি মি. মার্শাল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা চীনকে সামনে রেখে এশিয়ার পাঁচটি সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দৃশ্য তুলে ধরেন। তার মধ্যে একটি চিত্র হতে পারে এরকম¬, ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা মধ্যপ্রাচ্য ও ইন্দোনেশিয়ার যোগানদাতাদের শক্তিশালী করবে এবং ইরান, মধ্যএশিয়া, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ওপর বিশেষ দৃষ্টি পড়বে।

‘এশিয়া ২০২৫’-এর বরাত দিয়ে আউটলুক লিখেছে, পাকিস্তান ২০১২ সালের দিকে পুরোপুরি অকেজো হয়ে যাবে এবং তার ভৌগোলিক অখণ্ডতা হারাবে। প্রতিবেদনের কিছু অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো¬ ২০১২ সালের দিকে পাকিস্তান পুরোপুরি অকেজো হয়ে যাবে এবং ইসলামি উগ্রবাদীদের ওপর দেশটি তার নিয়ন্ত্রণ হারাবে আর উগ্রবাদীরা অনুপ্রবেশ করবে কাশ্মীরে। ভারত চাইবে পাকিস্তান তার ইসলামি জঙ্গিবাদীদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করুক। পাকিস্তান তা করতে ব্যর্থ হলে, ভারতীয় বাহিনী আজাদ কাশ্মীরে প্রবেশ করবে। জবাবে পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের হুমকি দেবে।

চীন পাকিস্তানের সাথে সুর মিলিয়ে নেপাল ও ভুটানের মাঝখানে তার সেনাবাহিনী মোতায়েন করে ভারতের মিজোরাম-নাগাল্যান্ড-আসাম-সিকিম সীমানাকে হুমকিতে ফেলে দেবে। জবাবে যুক্তরাষ্ট্র সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাবে এবং অন্যান্য উত্তপ্ত জায়গা থাকা সত্ত্বেও সে বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনী পাঠাবে এবং চীনকে হুঁশিয়ার করে দেবে। পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে পারে এই ভয়ে ভারত পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর প্রচলিত অস্ত্র দিয়েই হামলা চালাবে যা মূলত সফল হবে না। জবাবে পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যবর্তী সীমান্তে অবস্থিত ভারতীয় বাহিনীর ওপর মরিয়া হয়ে পারমাণবিক হামলা চালাবে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অতিরঞ্জিত পদক্ষেপের উদ্দেশ্য পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে একটি পূর্ণ মাপের পারমাণবিক শক্তির মোকাবেলাকে ত্বরান্বিত করা।

যুক্তরাষ্ট্র বি-২ বোমারু বিমান থেকে গভীর লক্ষ্যভেদী ওয়ারহেডের সাহায্যে পাকিস্তানের অবশিষ্ট পারমাণবিক শক্তিও ধ্বংস করে দেবে। ভারত-যুক্তরাষ্ট্র মৈত্রীর বাস্তব অবস্থা দেখে চীন ভারতের উত্তরাঞ্চল থেকে পিছু হটবে। পাকিস্তানে সর্বাত্মক বিশৃঙ্খলা বিরাজ করবে। ভারতীয় বাহিনী সেখানে শৃঙ্খলার জন্য ঢুকে পড়বে। দেশটি বিভাজিত হয়ে পড়লে পাকিস্তানের অঞ্চলগুলো ধীরে ধীরে ভারতে একীভূত হয়ে যাবে।

সিন্ধু, বালুচ আর সীমান্ত প্রদেশের পার্লামেন্ট ভারতের নেতৃত্বাধীন কনফেডারেশনে যোগদানের পক্ষে ভোট দেবে। ভারতীয় কনফেডারেশন তৈরি হওয়ার ফলে পাঞ্জাব একাকী টিকতে না পেরে একীভূত হয়ে যাবে এবং ভারতীয় পাঞ্জাবের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ পাঞ্জাব রাজ্য তৈরি করবে। ” বিস্তারিত দেখুন, পত্রিকার ইংরেজী অংশটি (ছবি-১, ৪)। মজার ব্যপার হলো পাকিস্তান অখন্ডতা হারাবে বা আমেরিকা-ভারত যুদ্ধ করে পাকিস্তান দখল করবে, কিন্তু বাংলাদেশ কিভাবে ভারতের মানচিত্রের সাথে একিভুত হলো তা বলা হয়নি। কিন্তু প্রচ্ছদে (ছবি-১ দেখুন) দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশও ভারতের সাথে একিভুত হচ্ছে।

ভাবখানা, পারমানবিক শক্তিধর পাকিস্তান একিভুত হলে বাংলাদেশতো এমনিতেই চলে যাবে!!! ছবি-২ পেন্টাগনের এডভাইসার ররার্ট ডি কাপলান ও ভারতীয় উপমহাদেশের ভবিষ্যত সিনারিও নিয়ে তার সদ্য প্রকাশিত বই আউটলুকের ওই প্রতিবেদনে এশিয়াতে আরো কয়েকটি সম্ভাব্য দৃশ্যের অবতারণার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন মুলুকের একটি প্রভাবশালী সাময়িকী মাসিক আটলান্টিক (Monthly Atlantic, September ২০০০, দেখুন এখানে, Click This Link ) সেপ্টেম্বর ২০০০ সংখ্যায় পাকিস্তানের ওপর পেন্টাগনের ঝানু কর্তা রবার্ট কাপলানের একটি দীর্ঘ পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ‘পাকিস্তান সাবেক যুগোশ্লাভিয়ার মতো টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে। ’ ১৮ নভেম্বর ২০০০ নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদভাষ্যে বলা হয় ‘সেই পাঁচ বছর পূর্ব থেকেই যুক্তরাষ্ট্র মোশাররফ সরকারের সাথে পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তিকে নিরাপদ রাখার ব্যাপারে গোপনে সহযোগিতা করছে। ’ উল্লেখ, রবার্ট কাপলান হচ্ছে বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশের উপর পেন্টাগনে অন্যতম পরামর্শক।

কয়েকদিন আগে তার একটি বই প্রকাশিত হয়। আগামীতে ভারতীয় উপমহাদেশের চিত্র কেমন হতে পারে তার একটি রুপরেখা দিয়েছেন তার এই বইয়ে। (বইটির ছবি দেখুন ছবি-২) ‘এশিয়া ২০২৫’ পরিকল্পনা সম্পর্কে ইসলামাবাদভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজের (IPS)চেয়ারম্যান প্রফেসর খুরশিদ আহমদ মাসিক ‘তর্জুমানুল কুরআন’ পত্রিকায় লিখেছেন, ‘‘আমরা পাকিস্তানের জনগণ ও মুসলিম উম্মাহকে নিয়ে পশ্চিমা শক্তি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত যে ষড়যন্ত্র করছে, তার ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ থাকতে আহ্বান জানাই। ‘এশিয়া ২০২৫’ ও এর সমগোত্রীয় ষড়যন্ত্রগুলো আমরা নিছক উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা বলে উড়িয়ে দিতে চাই না । ’’ ছবি-৩ প্রফেসর খুরশিদ আহমদ বিষয়টি নিয়ে ইন্টারনেটে প্রপাগান্ডাও চলছে বেশ জোরেশোরে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW-এর সাবেক কর্তাব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে নব্য গোয়েবলসীয় সংস্করণ স্যাগ, (SAAG, South Asian Analysis Group, http://www.saag.org)। http://www.dividepakistan.blogspot.com/ এটি মূলত বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোর অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ইন্টারনেট-ভিত্তিক প্রপাগান্ডা ফোরাম হিসেবে কাজ করছে। সেখানেও খোলা হয়েছে নতুন ফ্রন্ট। জনৈক সৈয়দ জামালউদ্দীন দ্বারা ভিডিও ও বই প্রকাশ করা হয়েছে। যার শিরোনাম¬ পাকিস্তানকে খণ্ডবিখণ্ড করে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসঙ্ঘের প্রতি আহ্বান।

আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, ইন্টারনেটেও পাকিস্তানের যে ছিন্নভিন্ন মানচিত্র দেখানো হয়েছে, তার সাথে মি. রালফ ও ‘এশিয়া ২০২৫’-এর অনেকটাই মিল রয়েছে। আরেকটি বিষয়ে এখানে না বললেই নয়, সাম্প্রতিককালে কিছু ঘটনা প্রমাণ করে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আর জনগণকে পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। বাংলাদেশেও সেনাবাহিনী আর জনগণকে পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। ১/১১ এর ঘটনা, রুপগঞ্জ, খালেদা জিয়ার বাড়ী নিয়ে বিরোধী দল বনাম সেনাবাহিনীর মধ্য মারমুখি অবস্থান কি আমাদের সেই অশনি সংকেত দিচ্ছে? মজার ব্যপার হলো, ভারতমাতা (ব্ললার ছবিটি দেখুন, দুরন্ত মশাল দেয়া ছবিটি )গঠনের ডেটলাইন হচ্ছে ২০২৫ সাল। এদিকে আওয়ামীরা বলছে তারা ২০২১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে, তাহলে ২০২১ আর ২০২৫ আছে কি? উপমহাদেশে কি হবে? Click This Link
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.