নিরব আঙ্গিনায় বসে আছি হয়ত স্পর্শ আমাতে আমি হব।
কিছুদিন আগে স্বরন কালের ভয়াভহ রেল ট্রাজেটি ঘটে গেল নরসিংদীতে কিন্তু এই ঘটনার অন্তরালে এত কিছু অমানবিক যাহা আমার ভাবতেই খারাপ লাগে। ঘটনার দিন থেকেই সকল প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক অবস্থান নেয় আমার অফিসে। সকল নিউজ ডেলিভারী হয় আমার অফিস থেকে। এমনিতেই নরসিংদীতে বিভিন্ন সংবাদ কর্মীদের আইটি সহায়তা দেয়ার দৃষ্টান্ত আছে আমার।
আর এ রকম বৃহত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমার অফিসের অবদান থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আপনারা যদি বিভিন্ন পত্রিকা পড়ে থাকেন তবে অবশ্যই জেনে থাকবেন মৃতের সংখ্যা। এত বড় একটা দুর্ঘটনা অথচ মৃতের সংখ্যা নরসিংদী ডিসি অফিস থেকে বলা হচ্ছে মাত্র সাত জন লোক মারা গেল। অথচ প্রত্যক্ষদর্শী সবাই বলছে আমরা অন্তত একশত লোকের লাশ দেখেছি। দুইটি ইঞ্জিন ছাড়াও চারটি বগি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
চারটি বগিতে কম করেও ৭০০/৮০০ যাত্রী ছিল। আর মারা গেল মাত্র ৭ জন। এটা কি আদতে সম্ভব। ঠিক আছে মানলাম মাত্র সাত জন মারা গেল তাহলে যাদের স্বজন নিখোজ আছে তারা লাশের জন্য ঘোরাঘোরি করছে তাদের লাশ কই। প্রত্যক্ষদর্শী অন্তত ১০০/১৫০ জন সবাই কি ভূল দেখেছে।
আমি ঘটনার পাচঁ মিনিটের মধ্য তিন জন ক্যামেরা ম্যান পাঠাই ঘটনাস্থলে। সবাই বলল কম করে হলেও ১০০ লাশ দেখলাম। সাথে বাজারের দোকানদার তারাও কি ভূল দেখল। প্রথম অবস্থায় শুনলাম মৃতের সংখ্যা ১০/১৫/২০/২৫/৩০ এভাবে বাড়তে থাকল কিন্তু রাত ৭/৮টার দিকে আর্মি এসেই ১৪৪ ধারা জারি করে জনসাধারনের প্রবেশ নিষিদ্ধ করল। তারপর থেকেই লাশের সংখ্যা কমতে থাকল।
আমি এটাই বুঝিনা লাশের সংখ্যা কম হলেই কি সুবিধা আর বেশী হলে কি অসুবিধা। পরে শুনলাম এটা নাকি সরকারের জন্য বিব্রতকর হতে পারে। আর লাশ যত বাড়তে ক্ষতিপূরন দিতে হবে। তাই লাশের সংখ্যা কম হলে একটু সুবিধা আছে বৈকি। কিন্তু ব্যাপারটা কতটুকু অমানবিক যে আমার ভাই মারা গেল আমরা তার চেহারাও দেখতে পারলাম না।
কার স্বার্থে । ছি ছি ছি আমার ভাবতেই ঘৃনা হচ্ছে যাদের আমি সমর্থন করতাম তারাই এ রকম লাশ নিয়ে জঘন্য মিথ্যাচার করে। আমার নিকট আগত সকল সাংবাদিককেই আমি প্রশ্ন করেছিলাম যে আপনার কেন প্রকৃত তথ্য গোপন করছেন তারা যা বলল তাতে বুঝলাম তাদের কোন দোষ নেই। তারা বলল ভাই প্রশাসন থেকে আমাদের প্রমান চাইলে কি প্রমান করতে পারব এতগুলো লোক মারা গেছে। ১৪ জন বলেছি তাতেই আমাকে বলে ১৪ জনের ছবি দেখান।
এখন আমি যদি ৫০ বলি আমি কি প্রমান করতে পারব। তারা লাশ গুম করেছে আর প্রমান দিব আমি এটাকি সম্ভব। তাই বাদ্য হয়েই তাদের দেয়া বক্তব্য লিখেছি। তারপর ধরেছিলাম রেলের এক কর্মকর্তাকে যিনি দুর্ঘটনায় কাজ করেছে তিনি যা বললেন তাতে আরো অবাক হয়েছি। তিনি বললেন আমরা বিকেলেই যখন লাশ গুনে গুনে ২০ এর উপর চলে গেছে তখনই অনেকে বলতে থাকল ধর শালাদের তখন বাদ্য হয়েই চুপ হয়ে যাই।
ঘটনার পর আমি অন্তত ২০ জনের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি সবাই ১০০% নিশ্চিত মৃতের সংখ্যা ১০০ এর কাছাকাছি হবেই হবে। কিন্তু অনেক লাশ গুম করা হয়েছে। ঘটনার পরদিন ও ৭/৮ জনের হাত-পা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সবাই জেনেও কিছু বলতে পারছেনা বা করতে পারছেনা। আসল ঘটনা তাহলে দেশ বাসীর নিকট অজানাই থেকে যাবে।
ঘটনার অন্তরালে কতকিছু ঘটে গেল যা কেউ জানবেনা। ভবিষ্যতে যেন আর কোনদিন এরকম ভয়াবহ দুর্যোগ কারো জীবনে না আসে সেই কামনা করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।