আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুটুম (গল্প)



বাবার আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। সেই সাথে নিয়মিত বিরতিতে আমরা ভাই-বোনেরা একে একে আসতে থাকায়, সংসারে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। শুধু আমিই একটু দীর্ঘ বিরতিতে এসেছি। আমার সাথে ভাইয়াদের বয়সের পার্থক্য অনেক বেশি। বাবাটা খুবই সরল।

একদিন শুনছি আমাকে দেখিয়ে তাঁর এক বন্ধু মানুষকে তিনি বলছেন, ‘এটা ভুল করে চলে এসেছে হা হা হা... তবে এটাই শেষ। ’ আমি যখন হাঁটি হাঁটি পা পা তখন থেকেই ভাইয়ারা টুকটাক আয় করতে শুরু করেন। ছেলেরা বাবার কাঁধের হালটা নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়া শুরু করার পর থেকে বাবার হাসিতে স্নিগ্ধতা বাড়তে থাকে। তাই বলে আগে যে বাবা হাসতেন না তা কিন্তু নয়, তবে সেই হাসিতে দুশ্চিন্তার ছায়া থাকত বেশি। বাবার পরিবারের অভাব অনটন আমার তেমনটি দেখা হয়নি।

প্রায় সবটাই বড়দের কাছ থেকে শোনা। ভাইয়ারা চুলো জ্বালানোর লাকড়ি যোগাড় করে, খানিক দূরের পাহাড় থেকে টুকরো কাঠবোঝাই বিশাল বস্তা মাথায় নিয়ে ফিরতেন। তারপর পুকুরে গোসল সেরে কেউ স্কুলে কেউবা কলেজের দিকে ছুটতেন। ভাবতে অবাক লাগে, এত অভাবে থেকেও বাবা কি করে এতজনের পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। সেসব বছর পনের আগের কথা।

এখন ভাইয়ারা কেউ ব্যবসা, কেউ টিউশনি কেউবা চাকরি করেন। এখন আর পাহাড় থেকে লাকড়ি আনতে হয় না, দোকান থেকে কিনে আনেন। আমরা এখন মোটামুটি স্বচ্ছল। তবে বাবার কর্মকাণ্ড আগের মতই রয়ে গেছে। সবসময় কিছু না কিছু করবেন।

মাঝে মাঝে ভাইয়ারা কপট ধমক দেন, ‘আপনাকে বলেছি না, বসে বসে শুধু আল্লা বিল্লা করবেন। তবু সবসময় এটা না ওটা - ওটা না সেটা, একটা না একটা কিছু করতেই থাকেন। ’ বাবা কোন জবাব না দিয়ে স্নিগ্ধভাবে হাসেন। ঐ হাসির মধ্যেই যেন পৃথিবীর যাবতীয় সুখ খেলা করে। এতদিন মাটির চুলোয় রান্না হত, মায়ের খুব কষ্ট হত।

ক’দিন পর পর চুলোর খুঁটি ভেঙ্গে যায়, নয়তো লাকড়ি ঢুকানোর মুখটা ভেঙ্গে যায়। মাকে প্রায় কাদামাটি দিয়ে চুলো মেরামত করতে দেখা যায়। মা তাঁর বড়লোক বাবা’র একমাত্র সন্তান। তাঁর বাবার বাড়িতে রান্না হয় কোমর সমান উঁচু বিশাল সিমেন্টের চুলোয়। তাছাড়া রান্না করে ঝি-চাকরেরা।

আর এখানে...। প্রেমের ফাঁদে পড়ে বেচারাকে আজ চুলোর ধোঁয়ায় কান্না লুকোতে হয়। সরি, মা’র কান্নার ব্যাপারটা ভুল বলেছি, মা কাঁদতে যাবেন কেন? চুলোর ধোঁয়ায়তো এমনিতেই চোখে পানি আসে! হত দরিদ্র স্বামীর ঘর করতে গিয়ে মা’র মধ্যে কখনোই কোন ধরনের আফসোস লক্ষ্য করিনি। এবং কখনোই তিনি তাঁর বাবার বাড়ী থেকে কোন ধরনের অনুদান গ্রহণ করেননি, পাছে প্রিয়তম স্বামীটি লোকচক্ষে ছোট হয়। বরং মায়ের হাসিতে বাবার চাইতে স্নিগ্ধতা হাজার গুণ বেশি দেখা যায়।

বাবা পারেন না হেন কোন কাজ নেই। এখন বসেছেন মা’র জন্য একটি পাকা চুলো তৈরী করতে। ভাইয়াদের বলেছেন সিমেন্ট আর বালি এনে দিতে। ভাইয়ারা অনেক করে বললেন যে, মিস্ত্রীকে বলা হবে, সে এসে চুলো বানিয়ে দিবে। বাবার কথা একটাই, তাঁর কাছে সব যন্ত্রপাতি আছে সুতরাং চুলো তিনিই বানাবেন।

কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, তিনি পারেন বলেই চুলোটা বানাতে চাইছেন তা নয়, বরং স্ত্রীর জন্য একটা কিছু করছেন- এটাই হল আসল কথা। বাবাটার লজ্জা শরমও কিছু কম বলে মনে হয়। আমি না হয় সেভেনে পড়ি বলে তেমন কিছু বুঝি না, কিন্তু ভাইয়ারা বড় হয়েছে না? বাবা এখনো বাইরে বেরুনোর সময় আমাকে আদর করার ফাঁকে মা’র দিকে এগিয়ে যান। মা মুখে আঁচল চাপা দিয়ে হায় হায় করে পালিয়ে বাঁচেন। আমাদের রান্না ঘরটা উদোম।

মূল ঘর থেকে সামান্য বিচ্ছিন্ন। এক পাশে পাশের বাড়ীর সীমানা দেয়াল, আর তিন পাশ খালি। উপরে বাঁশের চালা, দু’টো বাঁশের খুঁটির সাথে ঠেকা দেয়া। রান্না ঘরের পুরনো চুলোটার কয়েক হাত ডানে নতুন চুলোর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরনোটা মা কোনভাবেই ভাঙ্গতে দেবেন না।

ওটা নাকি বিয়ের পর তাঁরা দুজন মিলে তৈরী করেছিলেন। বাবা এখন নতুন জায়গাটায় ছোট্ট কোদাল দিয়ে গর্ত তৈরী করছেন। আমি মনোযোগী দর্শকের মত বাবার পাশে বসা। মা চুলোর ভেতর বেখেয়ালে ঢুকিয়ে দেয়া ভেজা কাঠটি সামলাতে ব্যস্ত। বাবা বেশ উৎসাহ নিয়ে খোশ মেজাজে গর্ত খুঁড়ে চলেছেন।

হঠাৎ কোদালের টানে মাটির সাথে ছোট্ট লাটিমাকৃতির কালচে কি যেন উঠে আসল। বাবা ভ্রু কুঁচকে জিনিসটি তুলে নিলেন। কিছুক্ষণ পর তাঁর কোঁচকানো ভ্রু সোজা হল। আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‌ওটা কি? আমার প্রশ্ন শুনে মা এগিয়ে এলেন। বাবা আমাকে কোন উত্তর না দিয়ে মাকে ওটি দেখালেন।

মা চমকে আমার মাথাটা তাঁর বুকে আঁকড়ে ধরলেন। কিছু পরে আমার কাঁধে এক ফোঁটা পানি এসে পড়ল টুপ করে। মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখি তাঁর চোখের পাপড়িতে শিশিরবিন্দু । তারপর কি যে হল, তিনজনে এক জোটে হারিয়ে যেতে লাগলাম বছর তিনেক আগের জৈষ্ঠ্যের দুপুরে। পাশের সওদাগর বাড়ীর আমগাছটার অনেকটা অংশ এসে হামলে পড়েছে আমাদের উঠোনে।

দুপুরে সেই গাছ থেকে লুকিয়ে ঢিল ছুঁড়ে আম পাড়ার চেষ্টা করছিলেন বাবা। হঠাৎ আমের পরিবর্তে ‘কিঁক কিঁক’ করে পাক খেতে খেতে খসে পড়ল একটি পাখী; টিয়া। উৎকন্ঠিত বাবা সাথে সাথে ছুটে গিয়ে পাখিটি তুলে নিলেন। বেচারার ছোট্ট দেহটি বাবার বিশাল কর্মঠ হাতের তালুতে ছটফট করছে, ভয়ে নাকি ব্যাথায় বোঝা যাচ্ছে না। মা দরজায় দাঁড়িয়েছিলেন।

ছুটে এসে ছোঁ মেরে বাবার হাত থেকে পাখিটি নিজের হাতে তুলে নিলেন। তারপর ফিরে গেলেন বাড়ীর ভেতর। পাখিটির পায়ে বেশ জখম হয়েছিল। মা সেই পা পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে লাগলেন। বাসায় ‘জামবাক’ নামের একপ্রকার মলম ছিল, ওটা লাগিয়ে দিলেন।

তারপর এটা সেটা অনেক কিছু খেতে দিলেন। কিন্তু পাখিটি কিছুই খেতে চাইল না। তার সঙ্গী পাখিগুলো দিন কয়েক আমাদের ঘরের চালে বিরক্ত করে করে ক্ষান্ত হয়ে অবশেষে চলে গেছে। পাখিটি টিয়া হলেও কখন-কিভাবে-কি করে যে ওর নাম ‘ময়না’ হয়ে গেল কেউ টেরই পাইনি। ময়না ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে লাগল।

প্রথমে আমরা না বুঝলেও পরে বুঝতে পেরেছিলাম তার ডানাতেও জখম হয়েছিল। মা তাকে উড়িয়ে দিতে চাইলেও সে তাই উড়ে যেতে পারেনি। ধরা পড়ার দু’দিন পর বাবাকে বলে একটি খাঁচা যোগাড় করেছিলেন মা, যদিও খাঁচাটি আজও অব্যবহৃত রয়ে গেছে। কিছু পাখি আছে জোড় পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটে। আর অনেকের হাঁটা অনেকটা মানুষের মত, তারা এক পা দু’পা করে কদম ফেলে।

আমাদের ময়নাও তেমনি করে হাঁটে। বেচারার খোঁড়া পায়ের হাঁটা দেখলে ভারী মায়া হত। মাঝে মাঝে তার ভারিক্কি চালের হেলেদুলে হাঁটা দেখে মনে হত, সে যেন কোন গেরস্থ বাড়ীর বয়োঃবৃদ্ধ তৃপ্ত মুরব্বী। যে কিনা শেষ বয়সে এসে, দু’হাত পেছনে দিয়ে, কষ্টে গড়া তার সাধের সংসারের সুখ অনুভব করতে করতে এঘর ওঘর হেঁটে হেঁটে স্মৃতি রোমন্থন করছে। আর সুখের চোরাবালিতে ডুবতে যেতে যেতে, গভীর থেকে আরো গভীর অতলে দেবে যাচ্ছে।

এই চোরাবালিতে হারিয়ে যেতেই যেন তার আনন্দ। বছর না ঘুরতেই ময়নার মুখে বেশ বুলি ফুটেছে। মা তাকে ‘কুটুম এসেছে’ বলতে শিখিয়েছেন। মা’র সাথে সেও সুর মেলাতো, তবে পুরোটা বলতে পারতো না। শুধু বলতো ‘কুটুম।

’ বাইরে থেকে যেই আসুক না কেন ময়না তীক্ষ্ণ কন্ঠে চিৎকার করে উঠত, ‘কু..টু..ম, কু..টু..ম। ’ তারপর ধীরে ধীরে তার ‘ময়না’ নামটি চাপা পড়ে গেল ‘কুটুম’ ডাকের আড়ালে। আমি যখন স্কুল থেকে ফিরতাম, তখন বেশ মজা হত। মা আমাকে পাউরুটি আর কলা খেতে দিতেন। আমি খেতে খেতে কুটুমের সাথে খেলতাম।

তাকে অনেক কষ্টে ‘কলা’ বলতে শেখাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুষ্টুটা কিছুতেই ‘কলা’ বলতে পারত না। আমি বলতাম ‘কলা’ সে বলত ‘কুটুম। ’ কুটুম আসার পর থেকে আমার গোসল সারতে সময় বেশ কম লাগত। বাবা বাড়ীর পেছন দিকে মা’র জন্য একটি বাথরুম বানিয়ে দিয়েছিলেন।

ওটার তিনদিকে ইটের গাঁথুনি, একদিকে টিনের দরজা, আর ওপরটা ফাঁকা। আমাদের বাসার সামনে একটা পুকুর ছিল। তবে মা ওখানে গোসল করতে যেতেন না। আমার আবার পুকুরে গোসল করা কড়া নিষেধ ছিল। তো গোসল করতে বাথরুমে গেলে আমার সাথে সাথে কুটুমও যেত।

তারপর দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে সারাক্ষণ ‘কুটুম..কুটুম’ চেঁচাত। তার চেঁচামেচিতে হুড়োহুড়ি করে গোসল সেরে বেরিয়ে আসতে হত আমাকে। কিভাবে কিভাবে যেন সে আমাদের পরিবারের সাথে মিশে যেতে যেতে একাকার হয়ে গেল। মা তাকে পানির সাথে কি কি সব মেখে খেতে দিতেন। বাবা বাজার করতে যাওয়ার সময় শুনতে পেতাম মা বলছেন, ‘কুটুমের খাবার শেষ, নিয়ে এসো।

’ কুটুমটাও মা বলতে পাগল। কখনো সখনো সবাই এক সাথে বেড়াতে গেলে বাধ্য হয়ে তাকে বাড়ীতে রেখে যেতে হত। সে তখন মাথা গোঁজ করে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াত। তবে নানুর বাড়ীতে গেলে মা তাকে সাথে করে নিয়ে যেতেন। আর বাসায় থাকতে বেশীরভাগ সময় মা’র আশেপাশেই ঘুরঘুর করত সে।

শুধু রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে, মা তাকে লাকড়ি রাখার ঘরটাতে রেখে আসতেন। রান্না ঘরে চুলোর পাশেই মা কুটুমের জন্য আমার সুন্দর ছোট্ট বাসনটি এনে রেখেছিলেন। বাসনটি রূপোর, ওর মধ্যে খাবারের জন্য আলাদা আলাদা ভাগ করা আছে। ওটি নাকি মা’র জন্য নানুভাই দিল্লী থেকে এনেছিলেন। ওতে সবসময় ছোলা, পানি আর এটা সেটা আরো কি কি যেন দিয়ে রাখতেন মা।

কুটুম মা’র পেছনে ঘুর ঘুর করত আর কিছুক্ষণ পর পর বাসন থেকে কুটুর কুটুর করে খাবার খেত। মা রান্না ঘর থেকে কোন কাজে মূল বাসায় যেতে চাইলে অমনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কুটুমটাও মার পিছু নিত। কিন্তু সেই দিনটিতে হঠাৎ কি যে হল, সে খোঁড়া পায়ে মা’র পেছন পেছন দৌড়ে এসে আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি। কিংবা মা নিজেকে নিয়ে এতটাই উদগ্রীব ছিলেন যে, কুটুমের কথা মনেই ছিল না। কার্তিকের শুরু।

ততদিনে কুটুমের সাথে আমাদের পরিচয়ের বছর দেড়েক পার হয়ে গেছে। সেদিন সকাল থেকেই চারিদিক গুমোট। প্রকৃতি বেশ থমথমে। সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত। বাইরে বিরক্তিকর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

মা রান্না ঘরে। রান্না প্রায় শেষ পর্যায়ে। মা’র পাশে চিন্তিত কুটুমকে বেশ বিমর্ষ দেখাচ্ছে। সে কি ইতিমধ্যেই ঘটনার পূর্বাভাস পেয়ে গেছে? হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করল। এবং নিমিষেই তুমূল বৃষ্টিসহ দুর্বার আক্রোশে চোখ রাঙ্গাতে লাগল বাতাস।

মা তড়িঘড়ি করে ভাতের ডেকচি হাতে মূল ঘরে ঢুকে ছিটকিনি আটকে দিলেন। তারপর সারারাত বৃষ্টি আর বাতাসের ঝগড়া চলতে লাগল অনবরত। ঝগড়ার বাক-বিতণ্ডায় চাপা পড়ে গেল ‘কুটুম কুটুম’ আর্তনাদ। আমাদের বাসার ফ্লোরটি ছিল মাটির। পুরনো টিনের চালের ছিদ্র গলে পড়া বৃষ্টির পানিতে ফ্লোরের এখানে সেখানে কাদা হয়ে যেতে লাগল।

প্রায় সারারাত বাবা-মা-ভাইয়ারা মিলে ঘর সামলানোয় ব্যস্ত ছিলেন। আর আমি কাঁথা বালিশ রাখার জায়গাটিতে জবুথবু হয়ে ঘুম। সকালে আমার ঘুম ভেঙ্গেছিল মায়ের নিচু স্বরের কান্নায়, সময়টা দশটা এগারটা হবে। রোদের তেজ তখনও তেমন বাড়েনি। ঘরের পেছনে এসে দেখি বাইরেটা ভেজা ভেজা, কেমন যেন আয়নার মত পরিষ্কার-ঝকঝকে।

রাতের ঘটনা মনে পড়ল। উদোম রান্নাঘরটা আরো উদোম দেখাচ্ছে। উপরের বাঁশের বেড়া উড়ে গেছে দূরে কোথাও। দূর হতে উড়ে এসেছে অন্যের ঘরের টিন, গাছের ডাল। লাকড়ি রাখার ঘরটি পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে।

তখনও কিছুক্ষণ পর পর ঠাণ্ডা হাওয়া বইছিল। আশপাশ দেখে বোঝাই যাচ্ছে রাতে প্রচণ্ড ঝড় বয়ে গেছে। মা চুলোর সামনে বসে আছেন। আমি পেছন দিক থেকে দেখতে পাচ্ছি মা’র পিঠটা একটুক্ষণ পরপর কেঁপে কেঁপে উঠছে। আশেপাশে কেউ নেই।

আমি চোখ কচলে মা’র পাশে এসে দাঁড়ালাম। ইশারায় জানতে চাইলাম, ‘কি?’ মা বসা অবস্থায় আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। অনুভব করলাম মা সন্তর্পনে কাঁদছেন। তারপর একটু শান্ত হয়ে, কয়েক হাত ডানে একটি নতুন ছোট্ট কবর দেখিয়ে ফুঁপিয়ে বলে উঠলেন, ‘কুটুম। ’


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।