আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বখাটের বর্বরতা !!!

জীবন টা একটা বইয়ের পাতার মত যত উল্টাবে ততই জানবে !!!

বখাটের উত্ত্যক্ত করার কারণে বন্ধ হয়ে যায় কলেজে যাওয়া। বাধ্য হয়ে নভেম্বরের শুরুতে বরগুনা থানায় যান মেয়েটি (১৮)। চান নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখাটেকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন। কিন্তু পুলিশ আর বখাটেকে ‘খুঁজে’ পায়নি।

গতকাল শনিবার সকালে বাবাকে নিয়ে কলেজে নির্বাচনী পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন মেয়েটি। কিন্তু তাঁর আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। বখাটে মহসিন (২৮) ধারালো দা দিয়ে মেয়েটির ডান পা ও ডান হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে। আহত করেছে মেয়েটির বাবাকেও। সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের সাহেবের হাওলা গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপর মেয়েটিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা হারুন আল রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পেশাগত জীবনে এমন বর্বরতা আর দেখিনি। জখম গুরুতর হওয়ায় আমরা তাঁকে তাৎক্ষণিক বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। জখমের যে অবস্থা, তাতে মেয়েটি পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন। ’ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাহেবের হাওলা গ্রামের মেয়ে ও স্থানীয় ঘটবাড়িয়া আদর্শ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর আহত ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে ঘটবাড়িয়া গ্রামের মহসিন কলেজে যাতায়াতের পথে প্রেম নিবেদন করত।

মেয়েটি সাড়া না দিলে মহসিন নানাভাবে হুমকি দেয়। এতে মেয়েটির পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ছয় মাস আগে তাঁর কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। পড়াশোনা বন্ধ হওয়ায় মেয়েটি নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে বরগুনা থানায় গিয়ে ওসি মো. বাবুল আখতারের সঙ্গে দেখা করে তাঁর ও পরিবারের নিরাপত্তা চান। ওসি যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়ারও আশ্বাস দেন। এই খবর পেয়ে আরও ক্ষিপ্ত হয় মহসিন।

স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল সকাল নয়টার দিকে মেয়েটি তাঁর বাবাকে নিয়ে কলেজে নির্বাচনী পরীক্ষা দিতে রওনা হন। গ্রামের চেরাগ আলী হাওলাদারের বাড়ির সামনে এলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা মহসিন আকস্মিক মেয়েটির বাবাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং ধারালো দা দিয়ে মেয়েটির ডান পা ও ডান হাতে এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। মেয়েটির ডান পা ও ডান হাতের অর্ধেক অংশ কেটে যায়। চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে এলে মহসিন পালিয়ে যায়। বরিশাল হাসপাতাল: বেলা তিনটার দিকে মেয়েটিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় অর্থোপেডিক বিভাগে ভর্তি করা হয়।

রাত পৌনে সাতটায় গেলে দেখা যায়, মেয়েটির মা বিলাপ করছেন আর বলছেন, ‘আমার মাইয়্যা কী দোষ করছে, তোরা ক্যান অরে এমন পঙ্গু করলি?’ মায়ের বিলাপ শুনে উপস্থিত রোগী ও তাদের স্বজনদের চোখও সিক্ত হয়ে ওঠে। মায়ের মুখের দিকে নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন মেয়েটি। তখনো তাঁর হাত ও পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মেয়েটির বাবা প্রথম আলোকে জানান, পুলিশের কারণে তাঁর মেয়ে পঙ্গুত্ববরণ করতে যাচ্ছেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান।

বরগুনা থানার ওসি মো. বাবুল আখতার গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, তিনিসহ পুলিশের একটি দল মহসিনকে গ্রেপ্তারের জন্য এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কলেজছাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা মহসিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়েও ধরতে পারিনি। ’ হাত-পা কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.