যখন শুনি কেউ এদেশের খেয়ে-পড়ে দুর্ণাম করে এ দেশের তখন শরীরে জ্বালা ধরে যায়, ইচ্ছে করে পিষে মারি শা__দের।
সূত্র: প্রবসী বার্তা ডট কম probashi barta.com
২৭/১১/২০১০
বান্দরবানে বনাঞ্চল উজাড় করছে রোহিংগারা
কবির হোসেন সিদ্দিকী, বান্দরবান: বান্দরবানে কাঠচোরদের বেপরোয়া তৎপরতায় সরকারি বনসম্পদ উজাড় হচ্ছে অবাধে। জেলা সদরের বালাঘাটা ভিত্তিক অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীর ৮ সদস্যের সিন্ডিকেট পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।
কাঠ পাচার ও সংগ্রহ কাজে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মিয়ানমারের মুসিলম রোহিংগাদেরকে। সরকারি ভাবে রোহিংগাদের এখানে বিচরণ ও তাদের আশ্রয় দাতাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা থাকলেও সেই সরকারি আদেশ এলাকায় অকার্যকর এখনও।
�
কাঠচোর সিন্ডিকেট সদস্যরা অসাধু পুলিশ ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের �ম্যানেজ� করেই রাতের আঁধারে সংরতি বনাঞ্চলের সেগুনসহ মুল্যবান প্রজাতির গাছ কেটে কাঠ সংগ্রহ করছে। রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকেও কাঠচোরের দল নানাকৌশলে সড়ক ও নদীপথে প্রকাশ্যেই সংরতি ও অশ্রেণীভূক্ত বনাঞ্চলের কাঠ সংগ্রহ করে পাচার করছে। থানছি ও বলিপাড়া এলাকা থেকেও একই ভাবে কাঠচোরের দল রাতের আঁধারে নদীপথ ও ট্রাকযোগে সেগুনসহ মুল্যবান প্রজাতির কাঠ পাচার করছে দীর্ঘদিন ধরে। বন বিভাগ,নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের বিশেষ দলগুলো সময়ে সময়ে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ কাঠ আটক করলেও থামেনি কাঠচোরদের অপতৎপরতা। সংঘবদ্ধ কাঠচোরের দল বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে সম্প্রতি।
আন্তাহা পাড়ায় চোরাই কাঠ আটক করতে গিয়ে কাঠচোর ও সন্ত্রাসীদের হাতে ৪ঘন্টা জিম্মিদশায় থাকতে হয়েছে কাপ্তাই পাল্পউড বন বিভাগের সহকারী বন সংরক হারুণ-উর-রশিদসহ ১০ বন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। �
সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন মহলে পাঠানো অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, জেলা সদরের বালাঘাটা ভিত্তিক কাঠ পাচারকারী চক্রের সিন্ডিকেটধারী ব্যবসায়ী আবু ,আবু সৈয়দ, খায়রুল,লিটন,মুসুা ও সাধু গং। তারা পাহাড়ের ভেতরের পথে আন্তাহা পাড়া ও বাগামারা এলাকা থেকে রাতের আঁধারেই অবৈধ কাঠ পাচার করছে। বালাঘাটা, কালাঘাটাসহ বিভিন্ন লোকালয়ে সংরক্ষিত এলাকা থেকে সংগৃহিত অবৈধ সেগুন কাঠগুলো মজুদ রাখা হয়। পরে সেইসব অবৈধ কাঠ �স� মিলগুলোতে নিয়ে রাখা হয়।
নানাকৌশলে সেখান থেকে চিরাইসহ রদ্ধা ও গোলকাঠ বিশেষ ব্যবস। তায় টিপির আওতায় এনে কথিত কৈধতা দেয়া হয়। তবে বনবিভাগের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গেলেই পরিচালিত হয় অভিযান এবং জব্দ করা হয় অবৈধ কাঠ। �
জেলার বলাঘাটা, কালাঘটা, বাগমারা ও আন্তাহা পাড়া এলাকা পরিদর্শনকালে জানা গেছে, বালাঘাটা ভিত্তিক কাঠচোরের দল তাদের নিয়োজিত মিয়ানমারের মুসলিম রোহিংগা শ্রমিকদের দ্বারা বিক্ষিপ্তভাব অবৈধ কাঠ পরিবহণ করা হয়। এ কাঠচোর সিন্ডিকেটভুক্ত ৮ কাঠ ব্যবসাী প্রতিরাতে গড়ে প্রায় ১ হাজার ঘনফুট অবৈধ সেগুন কাঠ পাচার করে।
রাতে কাঠ পাচারের সময় বালাঘাটা এলাকার কয়েকটি স্থানে বিদ্যুত লাইনের বাল্ব� গুলোও নিভানো হয়। কেবল বালাঘাটা ভিত্তিক ৮ ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মিদশায় রয়েছে বাগমারা-আন্তাহাপাড়া, ফাড়�য়া অঞ্চলের সংরক্ষিত সরকারি বিশাল বনাঞ্চল। পাহাড়ের নির্ঝনপথে কায়িকশ্রমেঅভ্যস্ত শত শত রোহিংগা সেগুন কাঠের বিশাল রদ্দা ও গোল কাঠ কাঁধে বহন করে নির্দিষ্টস্থানে নিয়ে যায়, সেখান থেকেই সুযোগ বুঝে অন্যত্র পাচার কিংবা অন্য বৈধ কাঠের স্তুপে মিশিয়ে রাখা হয়। এ ভাবেই চলছে বালাঘাটা ভিত্তিক অবৈধ কাঠ পাচার কার্যক্রম। �
এদিকে জেলার রুমা উপজেলার রুমা বনরেঞ্জের আওতায় বন বিভাগ সৃজিত সংরতি বনবাগানের সেগুন ও বাঁশ কাটার মহোৎসব চলছে।
অসাধু বন কর্মকর্তারা কাঠ চোরদের সহায়তা দিচ্ছে অবৈধ সেগুন কাঠ সংগ্রহে। �
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রুমা বনরেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মতিনের সহায়তায় সরকারি সংরক্ষিত বনবগানের মুল্যবান সেগুন গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে। দীর্ঘ চার বছর ধরে এভাবে সরকারি বনবাগানের সেগুন কাঠ ও বাঁশ বনের বাঁশ উজাড় হচ্ছে। �
জানা গেছে, রুমা উপজেলার ৩৬৬ নং সেঙ্গুম মৌজার ৩ হাজার ৮শ একর বন ভূমিতে ১৯৮৩-৮৪ অর্থ বছরে বন বিভাগের উদ্যোগে সেগুনের বনায়ন করা হলেও বাঁশ প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠে। �
রুমা উপজেলার যুব নেতা লুপ্র� মার্মা জানান, গত তিন বছরে রুমা রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মতিনের সহায়তায় কাঠ চোরের দল ক্যৈংঝিড়ি এলাকার রুমা বনরেঞ্জ ও পুলিশ ফাঁড়ির পাশে অবস্থিত সরকারি বনবাগান থেকে প্রায় কোটি টাকার সেগুন গাছ ও বাঁশ কেটে পাচার করেছে।
চট্রগ্রামের সাতকানিয়ার আবু ছালেহ,রুমার ক্যৈংঝিড়ি বাজারের খালেক সওদাগর এবং মাঝি আবু ছিদ্দিকসহ কয়েকজন প্রভাবশালী কাঠ পাচারকারী রোহিংগা শ্রমিক দিয়ে সরকার বনাঞ্চলের মুল্যবান সেগুন কাঠ সংগ্রহ করে পাচার কাজে লিপ্ত রয়েছে। রুমার ক্যৈংঝিড়ি বনবাগান থেকে সাঙ্গুনদী ও রুমা- বান্দরবান সড়ক পথে এই কাঠ পাচার হচ্ছে বলে জানা গেছে। �
মাঝি আবু ছিদ্দিক তার বনউজাড় এবং কাঠ পাচার কাজে মিয়ানমারের প্রায় ৫০ জন রোহিঙ্গাকে নিয়োজিত রেখেছে বলে জানা গেছে। মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গা রাজু জানান,তারা কৈক্ষ্যংঝিড়ি এলাকার সরকারি বনবাগান থেকে প্রতিটি বাঁশ কেটে নদীতে পৌঁছে দিতে পারিশ্রমিক পান দশ টাকা হারে। সরকারি বাগানে গাছ কাটার সময় তারা অতি গোপনে কাজ করেন বলে রাজু জানায়।
প্রতিদিন উক্ত রোহিঙ্গারা সরকারি বনবাগান থেকে প্রকাশ্যে বাঁশ কাটে এবং রাতের আঁধারে সেগুন গাছ কেটে সাঙ্গু নদী পথে পাচার করছে।
এসব অবৈধ কাজে প্রতিবাদ করতে গিয়ে মিথ্যা বন মামলায় ৪ মাস জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পান ২জন উপজাতীয়। রুমার ক্যৈংঝিড়ি বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী বাথোয়াই মং মারমা এবং ওই মৌজা হেডম্যানের ছোট ভাই লুপ্র� মার্মা জানান, রাতের আঁধারে সরকারি বনবাগানের মূল্যবান সেগুন গাছ ও বাঁশ উজাড়ের দৃশ্য দেখে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিট কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বন মামলা দায়ের করেছিলেন। এতে তারা আর্থিক ও সামাজিক ভাবে তিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা ােভ প্রকাশ করে আরো বলেন, আসল কাঠ পাচার কারীদের রা করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়।
তারা আরো হয়রানি মূলক মামলায় শিকার হতে পারেন বলেও আশংকা করছেন। �
রুমার মুরুংগু বাজার ব্যবসায়ী মোঃ হারুন জানান,ক্যৈংঝিড়ি বাজারের স্থানীয় প্রভাবশালী আবুল খায়ের ওরফে জমিদার ও মেম্বার খালেকের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রুমার ফাল্যিং,গঙ্গা,চাকমা ঝিড়ির বিপরীতে ও ডলুঝিড়িতে ১৫ পরিবার রোহিঙ্গা বসবাস করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বান্দরবানে ১২শ রোহিঙ্গার তালিকা করা হলেও উক্ত তালিকায় তাদের নাম নেই,তারা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরতে কোন উদ্যোগ নিচ্ছেনা। স্থানীয়রা গভীর অরণ্যের কাঠ কাটতে ভয় পেলেও তারা নির্ভয়ে সরকারি বন উজাড় করে যাচ্ছে। �
রুমার ক্যৈংঝিড়ির বনরেঞ্জ অফিস বড় তালা ঝুলিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফলে ওই অফিসের কর্মকর্তাদের কোন মতামত জানা সম্ভব হয়নি। রুমা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল মুহিতসহ কর্মকর্তারা জেলা সদরে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে। তাদরেই সহায়তায় সরকারি বন উজাড়কারীদের সাথে সখ্যতা রয়েছে বলেও গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে। �
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আর এম এম মরিুল ইসলাম জানান,জেলায় কাঠ পাচার রোধো বনবিভাগের কর্মীরা সদা সর্তক রয়েছে। অভিযোগ পাওয় গেলে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।