ফকিরাপুল থেকে গাড়ি ছাড়বে আড়াইটায় কিন্তু বাসায় জানিয়ে দিলাম দুইটায় ছাড়ার কথা। মহিলাদের নিয়ে আমার রাজ্যের টেনশন, কোথাও যেতে হলে দুইঘন্টা আগে থেকেই সিগন্যাল বাজাতে হয়, এর পরেও যথা সময় পৌঁছানো ভাগ্যের ব্যপার। বিয়ের অনুষ্ঠানে আধাঘন্টা পরে গেলেও তি নাই কিন্তু ট্রেন বা বাস জার্নির ব্যপারে আমার থিওরি একটু ভিন্ন, প্রয়োজনে বাসস্টান্ডে আধাঘন্টা পূর্বে পৌঁছাব তা-ও ভাল কিন্তু রিকসায় টেনশনে থাকতে রাজী নাই। একবার আমার জনমের শিা হয়ে গেছে আর পেতে চাই না।
সেবার ঈদে ঠিক হল আমি, কবির এবং এয়ার আলি (আমার দুর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই) একসাথে বাড়িতে যাব।
যেহেতু দণি বঙ্গের ছেলে আমরা কপাল পূর্ব থেকেই মন্দ ! ঢাকা টু বাগেরহাট ২২০ কিঃমিঃ পথ অথচ যেতে সময় লাগে আট ঘন্টা ! লাগবেই না বা কেন, মাঝ পথে যে আমাদের বরণ করে পদ্মা নদী ! সেখানে ফেরীরর অপোয় যদি তিন ঘন্টা অপো না-ই করা লাগল তাহলে পদ্মার মর্ম বুঝবে কজনা ? মাওয়া ঘাটে টাটকা ইলিশ মাঝ ভাজির মৌ মৌ গন্ধ নাকে না গেলে যে পুরা জার্নিটাই আজন্মের মতো মাটি হয়ে যাবে ! একেতে আজন্মের পোড়া কপাইল্যা তার উপর এতো সুন্দর কন্টিনিওয়াস সেন্ট থেকে কে চায় নিজেকে গুটিয়ে রেখে জার্নি মাটি করতে ?
পনের দিন পূর্বেই টিকিট কেটে রেখেছি কারন ঈদের সময় বাসষ্টান্ডের দৃশ্য আমাদের সবারই জানা। গাড়ি সকাল নয়টায়, আমরা তিনটেক্কা ঢুলতে ঢুলতে নয়টা দশ মিনিটে হাজির ! আক্কেল গুড়–ম !! গাড়ি ছেড়ে গেছে ! দুশো টাকার টিকিট কিনেছি তিনশ টাকায় তার উপর ঈদের বাজার ! ছুটলাম লোকাল গাড়ির পানে, আমরা তিন টেক্কা। মাওয়া ঘাটে নিশ্চয়ই দেখা পাব আমাদের হারিয়ে যাওয়া বুকে ধনের ! অবশেষে পেয়ে গেলাম ঠিকই তবে কিছু বাড়তে পয়সা গেল এই যা; ওদিকে সুপারভাইজার সাহেব সিট খালিপেয়ে ঈদের বাজারে টু-পাইস কামানোর উদ্দেশ্যে মাওয়া যাবার আগেই বিকল্প লোক তুলে নিয়েছে বিনা টিকিটে। যাত্রী বেচারা আমাদের দেখে সুপারভাইজারের সাথে প্রায় হাতাহাতির দশা। সে অভিজ্ঞতার কথা চিরজীবনের খোরাক হয়ে থাকবে।
চলবে.................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।