একখান চাবি মাইরা দিচে ছাইরা জনম ভইরা চলতে আছে.।
ব্লগারদের পীড়নের ব্যাপারে ইরান সরকার কেবল বিশ্বমানের নয়, একই সাথে এ ব্যাপারে তারা অসংখ্য রেকর্ড সৃষ্টি করেছে: ইতিহাসে তারাই প্রথম কোন রাষ্ট্র যারা প্রথম কোন ব্লগারকে জেলে দিয়েছে, এদেশেই প্রথম জেলের মধ্যে কোন ব্লগার মারা গেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে, ইরানে ব্লগার পীড়নের তালিকায় এবার এক নতুন রেকর্ড যুক্ত করা যেতে পারে: আর তা হল, সবচেয়ে কম বয়সী কোন ব্লগারকে বন্দি এবং তাকে বিচারের সম্মুখীন করা।
সীমান্ত বিহীন সাংবাদিকের দল (রিপোটার্স উইদাউট বর্ডার বা আরএসএফ) নামক প্রতিষ্ঠান লিখেছে, কারাগারে আটক বিশ্বের সবচেয়ে তরুণ ব্লগার, ১৮ বছর বয়স্ক নাভিদ মোহেব্বিকে সম্প্রতি ইরানের আমল শহরের বিপ্লবী আদালতে গোপনীয়তার মাধ্যমে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়েছে। এই বিচার কার্যে তার আইনজীবীকে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
১৪ নভেম্বর তার বিচার শুরু হয়েছে। আরএসএফের সূত্রানুযায়ী মোহেব্বির বিরুদ্ধে বিদেশী প্রচার মাধ্যমের দ্বারা “জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে পরিচালিত কর্মকাণ্ড” এবং “ইরান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের স্থপতি এবং বর্তমান নেতাদের অপমান করার” অভিযোগ আনা হয়েছে (…),”।
চেঞ্জ ফর ইকুয়ালিটি একটি ওয়েবসাইট, যা নারী অধিকারকে সমর্থন করে। এটি বলছে যে ২৫০ জনের বেশি ব্লগার এবং নারী ও নাগরিক অধিকার আন্দোলন কর্মী এক বিবৃতি জারী করেছে। সেখানে তারা নাভিদ মোহেব্বির দ্রুত এবং নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে।
তরুণ এক ব্লগার হিসেবে নাভিদ ব্লগে তার জীবন এবং চিন্তার কথা সবাইকে জানায়। ২০০৯ সালে, সে খেলাধুলা, স্কুলে যাওয়া এবং এমনকি তার নাকে যে ছোট্ট একটা অপারেশন হওয়ার কথা জানায়। “এটা সামান্য একটু বিচ্যুতি, কিন্তু এর ফলে বিষয়টি খানিকটা সুন্দর হতে পারে”। নাভিদ লিখেছে যে, সে আর তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিল এবং সে ‘নাগরিক অবাধ্যতা’, ‘গণতন্ত্রের’ উপর বিভিন্ন বই পড়ে এবং একই সময়ে সে সিমন দ্য বোভোয়ার ‘দি সেকেন্ড সেক্স‘ নামক বইটি পাঠ করে।
অবশেষে সে তেহরানের আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবার সুযোগ পায়।
এখন সারি নামক শহরের কারাগারের এক গণ কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
মার্চ,২০০৯-এ নাভিদ তার ব্লগে লিখেছে [ফার্সী ভাষায়]:
” “… অমলের গোয়েন্দা ভবন থেকে আমার পিতাকে ডাকা হয় এবং আমাকে হুমকি প্রদান করা হয়। এই ভাবে ডেকে নিয়ে যাওয়া আসলে অবৈধ। আমাদের দেশের সকল নিরাপত্তা বিভাগের মূলত কাজ হচ্ছে নাগরিকদের রক্ষা করা, কিন্তু এখানে তারা ঠিক বিপরীত কাজটি করছে।
গত শীতকালের একটি পোস্টে নাভিদ লিখেছে যে, কোন কারণ ছাড়াই তাকে রাস্তায় গ্রেফতার করা হয়।
কয়েক ঘন্টা পরে, ইমেইল এবং ব্লগের পাসওয়ার্ড প্রদান করার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও ডাকার সাথে সাথে যে কোন মূহূর্তে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তাকে তৈরি থাকার জন্য আদেশ প্রদান করা হয়।
নাভিদ লিখেছে [ফার্সী ভাষায়]:
এখানে আইন, জিজ্ঞাসাবাদকারীর সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। আপনার চূড়ান্ত বিচার দেশটির বিচার বিভাগের বদলে, গোয়েন্দা পরিদপ্তরের আদেশের উপর নির্ভর করে… এরপর আমি ঘরে ফিরে এলাম এবং নিজেকে প্রশ্ন করলাম, কখন তারা তাদের আচরণের মান উন্নত করবে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে নাভিদের প্রশ্নের উত্তর খুব একটা সহসাই পাওয়া যাবে না।
ব্লগারদের হয়রানি করা এবং তাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য জেলে পোরার ক্ষেত্রে ইরানের ইতিহাস বেশ লম্বা-এবং একজনের ক্ষেত্রে চাবুক দিয়ে প্রহার করা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।