অন্ধকার দেয়ালে তোমার আলো জন্ম দেয় মিথ্যে ছায়াকে.....
আমেরিকা থেকা আগত এক বন্ধু কইলো, থ্রিডি মুভি দেখুম,দেশে নাকি খুব চলতাসে?? আমি কইলাম, থ্রিডি তো আমরিকাতেও চাইলে পাইবা, আমাগো দেশে এরচেও বড় ডি আছে। বন্ধু কইলো, এইটা কিতা?? আমি কইলাম, স্যার অনন্ত জলিলের মুভি। এই ঈদে সে আমগোরে উপহার দিয়াছেন অইত্যান্ত হাই তাকনোলুজির কমেডি,যা জগতে বিরল বা নেই বললেই চলে। বন্ধু রাজি হইয়া গেলু আর আরও কয়েকজনরে জুটায়া মোটমাট ৬ জন মিলা গেলুম সিনেপ্লেক্সে কথিত “হাইটেক” কমেডি স্যার অনন্ত জলিলের ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা-ওয়াট ইজ লাভ’ দেখিতে।
মুভি শেষে বন্ধু কইলো, “দোস্ত, দেখতে আইসা ভুল করি নাই।
হাসতে হাসতে চাপার ব্যায়াম-পেটের ব্যায়াম-দুই-ই হইয়াছে। ” আসলেই তাই। এই মুভি বানাইয়া জলিল আজ মহাজলিলে পরিণত হইয়াছেন।
কাহিনী বলার আগে দুইটা কথা বলে নিই। প্রথমত, কেউ যদি খোঁজ দ্য সার্চ মার্কা ডায়লগ নির্ভর নির্মম কমেডি দেখার আশা নিয়া যান তাইলে ভুল করবেন।
এখানে জলিলের কোনো ‘পম গানা’-টাইপ ডায়লগ নেই। তয় আছে দৃশ্য নির্ভর নির্মম কমেডি। প্রায় প্রতিটা সিনই আপনাকে দিবে নির্মম জলিলীয় বিনোদন। ‘টেকনোলজির’ এহেন দয়াহীন প্রয়োগ দেইখা মনে হইতে পারে, জলিলের কাছে টেকনোলজি নিরাপদ নহে।
আরেকটা কথা, জলিল ভাই ভয়ঙ্কর নাচ শিখিয়াচেন।
বেদম নাইচা আকাশে বাতাসে হাহাকার সৃষ্টি করতে তিনি এখন সক্ষম।
এদিকে নায়িকা বর্ষার ভক্তদের জন্য দুঃসংবাদ। যেকোনো নায়িকার জন্য দুঃস্বপ্নের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বর্ষা। সেদিক থেকে বর্ষা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তিনি নেগেটিভ কিসিমের রোলে ঠিকই সাহস কইরা ‘এক্টিং’ করসেন।
কিন্তু জলিল সাব সেই একই ‘এ.জে গ্রুপ অভ ইন্ড্রাসট্রিজ’ এর মালিক ছাড়া আর কিছু হইতে পারলেন না।
তয় একদিক দিয়া সেই কম্পনশীল সিনেমা ‘খোঁজ – দ্য সার্চ’ ই ভালো ছিলো। খোঁজ দ্য সার্চের কোনো কাহিনীই ছিল না। সেই তুলনায় জলিলের পরের সব গুলা মুভিতেই হালকা কাহিনী থাকলেও খুবই প্রেডিক্টেবল আর সেই AJI গ্রুপ ভিত্তিক ঘটনার গন্ডির ভেতরেই সীমাবদ্ধ। প্রেডিক্টেবল কাহিনীর চেয়ে কাহিনীহীন মুভিই ভাল।
ঘটনা হইতেসে, মেঘলা (বর্ষা) নিতান্ত গ্রামের মাইয়া। ঢাকায় মডেল হইতে আসছে। কিন্তুক মডেল হওয়া সোজা ব্যাপার না। গিভ এন্ড টেক পলিসি সর্বত্র। কিন্তু মেঘলা অনলি টেক পলিসিতে বিশ্বাসী হওয়ায় মডেলিং জগতে সুবিধা করতে পারছিলো না।
মধ্যখান দিয়া ব্যাবসায়ী জামিলের সাথে মদ্যপান করতে করতে ধোকায় পতিত হয় মেঘলা (বর্ষা) ।
বুদ্ধিমানের মতন জামিল সাহেব ৩ মাস বর্ষারে লইয়া আনন্দ ফূর্তি করিয়া জাপানে ভাইগা যায়। বর্ষা জাপানে ফোন কইরা জানতে পারে ঐখানে জামিলের এক বউ আছে। এভাবে বর্ষা খাইলেন “স্মরনকালের শ্রেষ্ঠ ধোলাই” তথা কঠিন ছ্যাকা।
ছ্যাকা খাইয়া মডেল হইবার জন্য নানা জায়গায় ধরনা দিতে লাগলেন।
শেষ মেষ পাইলেন স্যার অনন্ত জলিলকে। জলিল সাহেব যথারীতি মাল্টি ট্যালেন্ট,অল ইন অল। AJI Group তো আছেই, সাথে সাথে তিনি বিশিষ্ট মডেল, যার ছবি দেইখা মাইয়ারা ছবিতেই চুম্মা দেয়। তাছাড়া তিনি ছিনেমার বিশিষ্ট নায়ক। আবার তিনি ‘Hard rock’ –গায়ক- যিনি গাইয়াছেন ‘ঢাকার পোলা’-নামক মারদাঙ্গা গানা।
তয় যে নৃত্য তিনি দিয়াছেন তাতে বোঝা যায়, পাবলিকের প্রতি তার কোনো দয়া মায়া নাইকা। ঢাকার পোলা গানে পোলা কিসিমের শুধু অনন্তরেই দেখলাম। আর সব এক্সট্রা মাইয়া। মাঝে মাঝে তাদের মধ্য থিকা অনন্তকে আলাদা করা কঠিন হইয়া যাইতেসিলো।
ঢাকার পোলা ভেরি ইস্মার্ট-১।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।