গণমাধ্যমকর্মী, চেয়ারম্যান - উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান, সদস্য সচিব - সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলন।
মায়ানমারের নির্বাচন কতোটুক গ্রহণযোগ্যতা পাবে?
অবশেষে দণি-পূর্ব এশীয় দেশ মায়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ ৭ নভেম্বর। বিভিন্ন কারণেই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে এই ভোট প্রক্রিয়ার দিকে।
বলা হচ্ছে যে বহু-দলীয় ব্যবস্থায়ই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু কথা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে পরিচিত রাজনীতিবিদ এবং তার দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না।
মায়ানমারের শেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ বছর পূর্বে ১৯৯০ সালে এবং সেই ভোটপূর্বে যিনি এবং যার দল জয়ী হয়েছিল সেই গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সুচি নির্বাচনের মাঠে নেই।
তাহলে এই নির্বাচন যে কতোটুকু বহুদলীয় এবং গণতান্ত্রিক সেটা সহজেই অনুমেয়। তা সত্ত্বেও কথা হলো মায়ানমারে একটি নির্বাচন হচ্ছে এবং সেটা দীর্ঘ দুই দশক পর। সে কারণে হলেও এই ভোট বিশ্বে কিছুটা আগ্রহ ও কৌতূহল সৃষ্টি করেছে নির্বাচনের গতি-প্রকৃতি নিয়ে।
কারা এই ব্যালটের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তা নিয়ে তেমন আগ্রহ পরিলতি হচ্ছে না দেশে এবং বহিঃর্বিশ্বে।
বরং কিভাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তা নিয়েই কৌতূহল বেশি। বলাবাহুল্য, গণতান্ত্রিক বিশ্ব এবং মানবাধিকারের বিভিন্ন সংস্থা মায়ানমারের নির্বাচনকে অনেকটা ‘প্রহসন’ বলেই বিবেচনা করছে এবং ধারণা করছে যে দেশটির শাসক সামরিক জান্তা এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি বেসামরিক অবয়বের অন্তরালে নিজেরাই তাদের শাসন অব্যাহত রাখবে। অর্থাৎ তাদের সমর্থকরা ভোটের পরে দেশের শাসন মতায় অধিষ্ঠিত থাকবে। দেশের সামরিক জান্তা নিজেদের রাষ্ট্রীয় শান্তি ও উন্নয়ন কাউন্সিল (State Peace and development Council) অর্থাৎ SPDC পরিচয় দিয়ে দেশ শাসন করছে। সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল থান শিউ হলেন এই কাউন্সিলের প্রধান এবং মায়ানমারের রাষ্ট্রপ্রধান।
২০০৮ সালে একটি সংবিধান আরোপ করা হয় এবং সেই সংবিধানের অধীনেই বর্তমান নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের একটি দ্বিকবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিধান করা হয়েছে। নিম্নকরে জন্য ৩৩০টি আসন এবং উচ্চকরে জন্য ১৬৮ আসনে নির্বাচন হবে। মায়ানমারের ৫৭ মিলিয়ন জনগণের মধ্যে ২৭ মিলিয়ন নিবন্ধনকৃত ভোটাররা নির্বাচনে তাদের অধিকার প্রয়োগ করবেন। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিভাগেও নির্বাচন হবে- যার আসন সংখ্যা হলো ৬৬৫টি।
সবমিলিয়ে ১,১৬৩টি আসনে ভোট নেয়া হবে। এখানে যা উল্লেখ করা প্রয়োজন, তা হলো পার্লামেন্টের উচ্চকে ৫৬টি আসন সামরিক বাহিনীর জন্য সংরতি থাকবে এবং নিুকে তাদের জন্য ১১০টি আসন সংরতি রয়েছে।
মায়ানমার বর্তমান বিশ্বে একটি বিচ্ছিন্ন দেশ হিসেবে পরিচিত। উত্তর কোরিয়ার মতোই অনেকটা বহিঃবিশ্বের সঙ্গে সংযোগহীন। শাসক গোষ্ঠী স্বীয় কর্তৃত্ব আরো শক্ত করতেই ব্যস্ত।
দণি-পূর্ব এশীয়ায় অনেক দেশই পূর্বে অগণতান্ত্রিক থাকলেও সা¤প্রতিক বছরগুলোতে গণতন্ত্রকে শাসন পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া এদের অন্যতম।
মায়ানমার কর্তৃপ আন্তর্জাতিক চাপে অনেকটা বাধ্য হয়েই যেন ২০১০ সালের এই নির্বাচন দিয়েছে। কিন্তু এমনভাবেই এই নির্বাচনের পরিকল্পনা করা হয়েছে যে তাদের সমর্থকরাই যেন আগামীতে দেশ শাসন করতে পারে। জান্তার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে।
অনেক সিনিয়র সামরিক অফিসাররা স্বীয় পদে পদত্যাগ করে এই সংগঠন থেকে নির্বাচন করছেন। নির্বাচন আইন অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীকে ৫০০ আমেরিকান ডলারের সমপরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে। কতোজন প্রার্থী এটা দিতে পারবেন? সরকারি সমর্থকদের জন্য তো সমস্যা নয়। তাছাড়া নির্বাচনে বিদেশী গণমাধ্যমকে ভিসা দেয়া হচ্ছে না। জান্তা অনেক কিছুই বিশ্বকে জানতে দিচ্ছে না।
তাই স্বাভাবিকভাবইে প্রশ্ন আসে- এই নির্বাচন কতোটুকু গ্রহণযোগ্যতা পাবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।