গণমাধ্যমকর্মী, চেয়ারম্যান - উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান, সদস্য সচিব - সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলন।
সন্ত্রাসী অর্থায়ন ও মানিলন্ডারিং
মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসী অর্থায়ন এবং অস্বচ্ছ সন্দেহজনক লেনদেন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশও অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে রয়েছে। 'এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ টাইপোলজি ওয়ার্কশপ ২০১০' থেকে আমাদের সম্পর্কিত এ মূল্যায়ন প্রকাশ করা হয়।
এই এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিপিএসএল) ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন দমনে গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন মনিটরিং করে থাকে।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বাংলাদেশ এ সংস্থাটির সদস্য এবং পরপর দু'বার স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যও নির্বাচিত হয়েছে। প্রতি বছরই এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ টাইপোলজি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ওয়ার্কশপ এ বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেছেন, বাংলাদেশ যে রাজনৈতিকভাবে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এ ওয়ার্কশপ ২০১০। মূলত এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ টাইপোলজি ওয়ার্কশপ ২০১০ ছিল বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে একটি প্রশিণ কর্মসূচি।
এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসী অর্থায়ন এবং সন্দেহজনক লেনদেন প্রতিরোধ করাসহ এ বিষয়ে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিয়ে তা কিভাবে সমাধান করা হবে এ সম্মেলন থেকে তারও একটি অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে জানা গেছে। মোট কথা অন্যসব কিছুর মধ্যে, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে আমাদের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃঢ়চেতা ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা আমরা পেয়েছি। ওয়ার্কশপের আলোচনার ফলাফল থেকে তা বোঝা গেল।
কিন্তু অতিমাত্রায় আত্মসন্তুষ্টির অবকাশ আছে কি? এটা ঠিক সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছার যে ঘাটতি নেই আমরাও তা মনে করি। বাস্তবতা এখনো ভিন্ন স্রোতে রয়েছে বলে কথিত ১০ ট্রাক অস্ত্রের অর্থায়নের উৎস কোথায় তা এখনো অস্পষ্ট এবং রহস্যাবৃত।
এর জন্য ধরপাকড়, জিজ্ঞাসাবাদ কম চলছে না। কিন্তু রহস্যের কিনারা এখনো উদঘাটন করা যায়নি। কিংবা ২০০৫-এর ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী একই সময় যে বোমা বিস্ফোরণ করা হলো, তার উৎসে কারা এবং অর্থায়নের উৎসও বা কোথায় তা আজও বের করা যায়নি। বেশ কিছু ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সন্ত্রাস অর্থায়নের অভিযোগ মাঝেমধ্যে শোনা গেলেও, কাউকেই ধরা যাচ্ছে না। তারা এতই গভীর পানির মাছ এবং উচ্চ প্রশিণপ্রাপ্ত যে, তাদের ধরতে হলে আর্থিক অনুসন্ধানেরও নতুন ডিভাইস উদ্ভাবন করতে হবে।
শুধু তাই নয়, কতিপয় কিনিক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও একইভাবে সন্দেহ করা হয়।
সুতরাং আমরা মনে করি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছায় আত্মসন্তুষ্টির অবকাশ নেই। কারণ সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও মানিলন্ডারিং চক্র কম শক্তিবান নয়। শত্রুকে দুর্বল ভাবা উচিত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর মহোদয়, উঁচুমহলের ভূমিকায় যা-ই বলুন না কেন, আমরা বলব, গোটা প্রতিরোধ ব্যবস্থায় নব নব পন্থা উদ্ভাবনের এবং আরও সতর্কতা থাকার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায়নি।
কারণ এ প্রতিরোধ একটি চলমান প্রক্রিয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।