আমি বিলাত থাকি, কামলা খাটি
শহিদ ভায়া একজন মহান প্রেমিক পুরুষ। কিন্তু বেচারা প্রেম করার আগেই ছ্যাকা খাইয়া চিৎ হইয়া পড়িয়া যায়। সি.এন.জি মানিক তো কইয়াই দিছে: হালায় বিয়ার আগে তালাক পাইবো। অদ্যবদি সরকারী হিসাবে শহিদ ভায়া তিনখানা বিশাল ছ্যাকার অধিকারী হইয়াছে। তারপরও শহিদ ভায়া থামিয়া নাই।
প্রেম বিষয়ক তাহার অভিযান এখন অব্দি চলিতেসে। একদা আমারে কহিলো : "ওরে আমার মায়ের পেটের আপনা খালাতো ভাই, দুনিয়াদারী ফাকা ঠেকিতেসে, মনে লয় কিসু একটা বন্দোবস্ত কর। একখানা সুশীল কন্যার মুঠোফোন নাম্বার জোগাড় করিয়া দে। " আমি কহিলাম: ভ্রাতে, তুমার তো হ্যাট্রিক ছ্যাকা খাইবার রেকর্ড আছে, এই ব্যাপারে আমি তুমার তুলনায় শিশুতূল্য। তুমি বরং সি.এন.জি মানিকের চান্দি মাথায় হাত বুলাইয়া কুনু নাম্বার জোগাড় করিতে পারো কিনা চেষ্টা করো।
তাহার সংগ্রহশালায় নাকি অতীব সুশীল কন্যাগনের বায়োডাটা আছে। অপর একদিন পরিকল্পনামাফিক শহিদ ভায়া জামান হোটেলে সি.এন.জি মানিককে আধখানা পরটা দিয়া আধখানা চা খাওইয়া চান্দি মাথায় হাত বুলাইয়া তাহার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিলো। সি.এন.জি মানিক তাহাকে অর্ধ পরটার কসমের দরুন একখানা নাম্বার দিলো। কন্যার নাম মিস্টি। সি.এন.জি পই পই করিয়া বলিয়া দিয়াছে তাহারা বড়ই উদার মানসিকতার পরিবার।
টেলিফোন তাহার বাপ/ভাই যেই ধরুক মিস্টিকে চাহিবামাত্রই ডাকিয়া দিবে। শুনিবা মাত্রই শহিদ ভায়ার পরাণে পিরীতের ডুগডুগি বাজিতে লাগিলো। পরদিন সাঝের বেলায় শহিদ ভায়া বিয়াফক খানাপিনার আয়োজন করিলো। অনেক রিকুয়েস্ট করা স্বত্ত্বেও সি.এন.জি কাজের বাহানায় আসিতে পারিলো না। যাহা হউক শহিদ ভায়া গা শরীর ধুইয়া, পরিস্কার বস্ত্র পরিধান করিয়া, শরীরে খুশবু মাখাইয়া, বিসমিল্লাহ করিয়া মুঠোফোনের নাম্বার ঘুরাইলো।
এক ভরাট কন্ঠের অধিকারী পুরুষ হ্যালো কহিবা মাত্রই শহিদ ভায়া বিনয়ে গলিয়া গিয়া সালাম দিয়া নিম্নরুপ বাক্যালাপ করিয়াছে:
শহিদ ভায়া: (চক্ষু বন্ধ করিয়া)আসসালামুআলাইকুম।
পুরুষ কন্ঠ: ওয়ালাইকুম আস্সালাম।
শহিদ ভায়া: (মস্তকে চুলকাইয়া) জ্বি, মিস্টি আছে?
পুরুষ কন্ঠ: হ্যা আছে।
শহিদ ভায়া: (ভীত কন্ঠে)জ্বি, দয়া করে একটু কি দেয়া যাবে?
পুরুষ কন্ঠ: কেন দেয়া যাবে না? অবশ্যই দেয়া যাবে।
শহিদ ভায়া: জ্বি, মানে তাহলে একটু দেন।
পুরুষ কন্ঠ: আপনার কতটুকু দরকার?
শহিদ ভায়া: (গদ গদ হইয়া)জ্বি, মানে আমার অনেক দরকার। খুব বেশী দরকার।
পুরুষ কন্ঠ: কোনো অসুবিধা নাই। দেয়া যাবে। তো আপনার কত কেজি দরকার?
শহিদ ভায়া: (উৎসুক হইয়া) জ্বি, মানে।
আমি কিসু বুঝি নাই।
পুরুষ কন্ঠ: (বিরক্ত হইয়া) মানে আপনি বলসেন আপনার খুব দরকার, তাই জিগ্গাসা করসি আপনার কতকেজি দরকার।
শহিদ ভায়া: (উদ্বিগ্ন) এইটা মিস্টির নাম্বার না?
পুরুষ কন্ঠ: (ততোধিক বিরক্ত হইয়া) ঐ মিয়া, মিস্টির দোকানে ফোন দিয়া মিস্টি চাইলেন আবার বলতেসেন এইটা মিস্টির নাম্বার কিনা। এইটা বনফুল মিস্টির দোকান। কি পাগল-ছাগল জুটসে।
এইরুপ গালি বর্ষণ করিয়া পুরুষ কন্ঠ ফোন রাখিয়া দিলো। শহিদ ভায়া'র চেহাড়াখানা দেখিবার মতো হইলো। মনে হইতেছিলো তাহার মাথায় আকাশ ভাংগিয়া পড়িয়াছে। সে নাকি পূর্ব রাত্রিতে মিস্টিকে নিয়া স্বপনও দেখিয়া ফেলিয়াছে। সমুদ্দুরের হাওয়ায় মিস্টির খোলা চুলের সুবাস খাইতে খাইতে নাকি গানও গাহিতে ছিলো।
আহারে বেচারা! প্রেমের পূর্বেই হাই ভোল্টেজ ছ্যাকা খাইলো।
পরে সকলেই অবগত হইয়াছিলাম, সি.এন.জি ইচ্ছাকৃতই এমন ফাইজলামি করিয়াছে আর অনাকাংখিত ঘটনা এড়াইবার জন্য কাজের বাহানা করিয়া কাটিয়া পড়িয়াছে। হয়ত সি.এন.জি সেইদিন শহিদ ভায়া'র সম্মুখে থাকিলে শহিদ ভায়া তাহাকে ভোঁতা দাও দিয়া কোপাইতো।
পরে পরে শহিদ ভায়াকে দেখিলে সকলে শুধাইত: "ভায়া মিস্টি কত টাকা কেজি?"
অফটপিক: সাধু-চলিত মিশ্রন দুষনীয় জানিবার পরও ব্যবহার করলাম বিয়াফক মজার জন্য। পরবর্তীতে ফুরসত পাইলে শহিদ ভায়া'র হাইভোল্টেজ ছ্যাঁকার কাহিনী বর্ণণ করিবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।