হ্যা আমি সেই সত্যবাদীকে সত্যবাদী মনে করি
ঘটনার পরপরই স্বয়ং মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ (আদীব হুজুর) দামাত বারাকাতুহুম এই লেখককে বলেছিলেন, ‘এখন উদ্ধার তৎপরতায় অংশগ্রহণ জরুরি। ’ সাহায্য-তৎরপতা সম্পর্কে তাদের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, ‘প্রথমে তাঁরা বিভিন্ন হাসপাতালে যেয়ে প্রয়োজনগ্রস্ত আহতদের তালিকা প্রস্ত্তত করবেন। যেখানে তাদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর থাকবে। এরপর সেই তালিকা অনুসারে প্রত্যেককে অর্থ-সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে। ’ তিনি আরো বলেন, ‘সিডরের সময়ও আমরা এভাবে সহায়তা-কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলাম।
এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ-সাহায্য পৌঁছে দিয়েছিলাম। ঐ সময়ের তালিকাও সংরক্ষিত আছে। ’
তো সাভার ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে এ নিয়মেই তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং প্রত্যেকের নামের সাথে তার টিপসইও সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন আহতদের নাম-ঠিকানা, টিপসই ও মোবাইল নম্বর সম্বলিত একটি প্রামাণিক তথ্য-শিট প্রস্ত্তত হয়েছে অন্যদিকে ভবিষ্যতেও এই দুঃস্থ মানুষগুলোর সাথে যোগাযোগের ও সহায়তা অব্যাহত রাখার সুযোগ থাকছে। তাছাড়া এই লিখিত ডকুমেন্ট আগামীতে কোনো গবেষণা-কর্মেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারবে।
তাঁদের সহায়তা-তহবিলে মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়ার ছাত্র-শিক্ষকগণও সাধ্যমত শামিল হয়েছেন। সাভারের রাজফুলবাড়িয়া মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাওলানা আবু জাফর মুহাম্মাদ ইবরাহীম ছাহেবের তত্ত্বাবধানে উদ্ধার ও সহায়তা পরিচালিত হয়েছে। সাভারে তাদের যে ক্যাম্প স্থাপিত হয়েছিল তার একজন দায়িত্বশীল মাওলানা শাহেদ (মোবাইল : ০১৮১৫-৪১৩৪৩২) এই লেখককে বলেছেন যে, ‘তারা কয়েক লক্ষ টাকা আহতদের মাঝে বিতরণ করেছেন। খাবার ও অন্যান্য দ্রব্য-সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। ’
সমাজের দুর্যোগে-দুর্ভোগে কওমী আলেমগণ তাদের সাধ্য অনুযায়ী সবসময়ই অংশগ্রহণ করেছেন, কিন্তু প্রধানত প্রচার-বিমুখতা ও নিঃস্বার্থ সেবার মানসিকতার কারণে তথ্য-সংরক্ষণের গরজ বোধ করা হয়নি।
অথচ ইচ্ছা করলে খুব সহজেই তাঁরা তা করতে পারতেন। মাদরাসার বার্ষিক আয়-ব্যয়ের রিপোর্টে বা বছরান্তে মাদরাসা থেকে প্রকাশিত স্মারকে সামাজিক সহায়তার একটা প্রামাণ্য বিবরণ তুলে ধরা কঠিন কিছু ছিল না। টিভি-ক্যামেরার সামনে সহায়তা-বিতরণের এই যুগে আমাদের আলিমদের এই নিরব কার্যক্রম নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। এদেশের সুশীল-সমাজ, যারা কওমী মাদরাসার ধারে কাছেও না এসে কওমী মাদরাসা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, তারা যদি একটু কাছে আসতেন এবং এই ইতিহাসগুলো শুনতেন তাহলে বুঝতে পারতেন কেন এই ‘হুজুর’দের ডাকে গোটা দেশ জেগে ওঠে। যাই হোক, এখন যেহেতু আমাদের বিপন্নতার আলামতগুলো সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে তাই পূর্বসূরীদের ইখলাস ও লিল্লাহিয়্যাতের পাশাপাশি সময়ের কিছু দাবি পূরণও বিচক্ষণতার চাহিদা।
নিয়ত যদি খালিস থাকে তাহলে মেহেরবান আল্লাহর রহমতের কাছে আশা করা যায়, তিনি আমাদের আখিরাতের বিনিময়ও হ্রাস করবেন না।
সাভার-ট্রাজেডির কিছু দিন পরই আরেকটি মর্মান্তিক, নৃশংসতা ও রোমহর্ষক ঘটনা ঘটে গেল হেফাযতে ইসলামের ৫ মের অবরোধকে কেন্দ্র করে। সারা দিনের হামলা ও গুলি বর্ষণের পর শাপলা চত্বরে সমবেত ঘুমন্ত ও ইবাদতরত মানুষগুলোর উপর চালানো হল এক নির্মম ‘অভিযান’। দেশি-বিদেশি সংবাদ-মাধ্যম ও রাজনৈতিক সূত্র থেকে নিহতের সংখ্যা বলা হয়েছে হাজার হাজার। জানা গেছে, হেফাযতে ইসলামের পক্ষ থেকে আহত, নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি হচ্ছে।
এ কাজ সমাপ্ত হলে প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে। সরকারের তরফ থেকে গণহত্যার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে। সরকারী প্রশাসন একে অবাস্তব প্রচারণা বলে আখ্যায়িত করেছে।
হায়! এসব বক্তব্য যদি সত্য হত! নতুবা এই ভূমি এত মুমিনের খুন কীভাবে শোষণ করবে? এই আকাশ এত আহতের আহাজারি কীভাবে ফিরিয়ে দিবে? হায়! আমাদের এই ক্ষুদ্র ভূখন্ড কীভাবে বহন করবে এত এতিম-
বিধবার অভিশাপ!
এই ঘটনা কওমী ইতিহাসে এজন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, এতে অনেক আলিম-তালিবে ইলম শহীদ বা আহত হয়েছেন। অন্যরাও তো এসেছিলেন হেফাযতে ইসলামেরই ডাকে।
সুতরাং তাঁরাও আমাদের কওমী পরিবারেরই সদস্য।
৭১ পরবর্তী কয়েক বছর এদেশের নিরীহ-নিরপরাধ ঈমানদারদের উপরও যে নজিরবিহীন নির্যাতন চালানো হয়েছিল তা কোনোভাবেই হানাদার বাহিনীর জুলুম-নির্যাতনের চেয়ে কম ছিল না। কিন্তু দুর্ভাগ্য এ জাতির, সেই ইতিহাস প্রচারিত হয়নি। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি রোধ করাই তো ইতিহাস-চর্চার অন্যতম প্রধান সুফল।
৫ ও ৬ মের ঘটনায় আহত-নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সংখ্যা যা-ই হোক না কেন তাদের তালিকা প্রস্ত্তত করা................
পুরো লেখা দেখতে http://www.alkawsar.com/article/918
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।