আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামী দলগুলো নিয়ে এরশাদের জোট

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের বাইরের ইসলামী দল ও অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠনগুলো নিয়ে নতুন একটি জোট গঠন করার কথা ভাবছেন মহাজোটের প্রধান শরিক দল জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ লক্ষ্যে তিনি নিজেই ইসলামী দল ও সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। আর শেষ মুহূর্তে জোট-মহাজোট থেকেও কয়েকটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দল বের হয়ে এরশাদের জোটে যোগ দিতে পারে এমন প্রত্যাশাও জাতীয় পার্টির।

জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, যেসব দল ও সংগঠন ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন স্যারের (এরশাদ) সঙ্গে তাদের সবসময় ভালো সম্পর্ক বজায় ছিল। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ সম্পর্ককে সক্রিয় বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

স্যারের সঙ্গে সরাসরি দল ও সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এ ব্যাপারে স্যারই যথেষ্ট ভালো বলতে পারবেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক সচিব অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ জানান, দুই জোটের বাইরের বিভিন্ন ধর্মীয় রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা স্যারের (এরশাদ) সঙ্গে জোট করার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। স্যার নিজেই সরাসরি বিষয়টি দেখছেন। স্যার এরই মধ্যে ঘোষণা করেছেন একক নির্বাচন করবেন।

আমরা এ লক্ষ্যেই পার্টিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

জানা যায়, জোট-মহাজোটের বাইরে থাকা পীর চরমোনাইর নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফল মজলিস, জাকের পার্টিসহ দেওয়ানবাগ দরবার শরিফ, কুতুববাগ দরবার শরিফ, আটরশির পীর, সায়েদাবাদী হুজুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পীরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এরশাদ। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চলতি বছরের গোড়ার দিকে গণজাগরণ মঞ্চের যাত্রা শুরুর পর আলোচনায় আসা হেফাজতে ইসলাম ছাড়াও মহাজোট ও ১৮ দলীয় জোটের বাইরে থাকা দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে নতুন জোট গড়ার পরিকল্পনা এঁটেছেন। জাপা নেতারা জানান, ঈদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও প্রবল।

আর এমনটি হলে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতি মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে বলেই বিশ্বাস এরশাদের। তাই এ সুযোগটিকেই কাজে লাগাতে উঠে-পড়ে লেগেছেন তিনি। সাবেক এ রাষ্ট্রপতি মনে করছেন, হেফাজতে ইসলামের সারা দেশে বিশাল জনসমর্থন রয়েছে। হেফাজত নিয়ন্ত্রিত মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্ররা এলাকাবাসীর কাছে সুপরিচিত। নানা কারণে তাদের সঙ্গে এলাকাবাসীর রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।

তারা যদি ভোটের প্রচারে নেমে পড়েন, তাহলে পরিস্থিতি বদলে যাবে। হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে জাতীয় পার্টির রয়েছে আদর্শিক মিল। অন্যদিকে আওয়ামী লীগকে কোনোভাবেই সহ্য করবে না হেফাজত। আবার জামায়াতের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকায় হেফাজতে ইসলাম বিএনপিকে সমর্থন করবে না। জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীকে হেফাজতে ইসলাম সমর্থন করে না।

হেফাজত নেতারা মনে করেন, জামায়াতের সঙ্গে ওঠা-বসা ও সংশ্রব রাখা মুসলমানদের জন্য জায়েজ নয়। এসব সমীকরণের কারণে হেফাজতে ইসলামের সমর্থন জাপার দিকেই থাকবে বলেই মনে করছেন এরশাদ। তাই সাবেক এ রাষ্ট্রপতি হেফাজতে ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এরশাদের প্রতিটি সভা-সমাবেশ, এমনকি দলীয় ফোরামে এরশাদের বক্তব্যের খানিকটা অংশ জুড়েই থাকছে হেফাজতে ইসলাম এমনকি আলেমদের ওপর হামলার কারণে সরকারের সমালোচনা করে কঠোর বক্তব্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, স্যারের নেতৃত্বে ধর্মীয় দলগুলো নিয়ে আলাদা জোট হতে পারে।

এ জোটে হেফাজতে ইসলামও থাকবে। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। সময় যত গড়াবে, অনেক কিছুই ঘটতে পারে। হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দল নয়, ইসলাম রক্ষার জন্য তাদের পাশে ছিলাম। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির পাশে হেফাজত থাকবে।

তিনি বলেন, দুই দফায় ঢাকায় আসা হেফাজত কর্মীদের পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে পার্টির পক্ষ থেকে। এরশাদ নিজেও রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে হাজির থেকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন হেফাজত কর্মীদের মধ্যে। গত ৫ ও ৬ মের সহিংসতার জন্য সরকার হেফাজত কর্মীদের দায়ী করলেও এরশাদ বিরামহীনভাবে হেফাজত নেতা-কর্মীদের পক্ষে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। বলছেন, হেফাজত কোনো সন্ত্রাসী দল নয়। সহিংসতার জন্য হেফাজতের কোনো কর্মী জড়িত নয়।

এরশাদের নির্দেশে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৫ মে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা হেফাজতের পক্ষে অংশ নেয়। এতে পার্টির দুজন নেতা নিহত হন।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.