আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিথুয়ানিয়ার লোককথা-২

আকাশ ছুঁব...
লিথুয়ানিয়ার লোককথা-২ লুথেরানরা এল কিভাবে? অদ্বিতীয়া সিমু অনেক অনেক আগের কথা। এখানে বাস করত এক ধনী জমিদার। তার ছিল প্রচুর সম্পত্তি। আর ছিল রাজকন্যার মত সুন্দর এক মেয়ে। মেয়েকে খুব ভালবাসতো জমিদার।

ফুটফুটে মেয়েটি একদিন বড় হল। তার বিয়ের বয়স হয়েছে। কত জায়গার কত সুন্দর ছেলেরা তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়, মেয়ে কিছুতেই রাজী হয়না। তার নাকি কাউকেই পছন্দ নয়! কত জমিদারপুত্র, বণিকপুত্র,কত রাজার ছেলেদেরও ফিরিয়ে দিল মেয়ে! জমিদার চিন্তায় পড়লেন। এদিকে নিজেরও বয়স বেড়ে যাচ্ছে, বুড়ো হচ্ছেন।

মেয়েকে বোঝান। মেয়ে বুঝতেই চায়না! শেষে জমিদার মেয়েকে রাগ করে একদিন বললেন,“ কাউকে তোমার পছন্দ হয়না! তুমি কি শয়তান এলে পছন্দ করবে! শয়তান-কে বিয়ে করবে!...” মেয়ে খুব দুঃখ পেল। ঠিকইতো বাবা বুড়ো হচ্ছে! সে এবার ঠিক করলো যে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবে তাকেই বিয়ে করবে। এবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এল এক যুবক। দেখতে খুবই সুন্দর।

কিন্তু পরিচয়! সে জানাল, তার দেশ সীমানা পেরিয়ে অনেক দূরে। জমিদারের চিন্তা হলো। কিন্তু মেয়ে রাজী। বাবার মন কিছুতেই সায় দিচ্ছে না। এ ছেলে বিয়ে করে মেয়েকে সীমানার ওপারে নিয়ে যাবে।

মেয়ে জিদ্ ধরলো। শেষপর্যন্ত মহাধুমধামে বিয়ে হল জমিদারকন্যার। এবার এল বিদায়ের পালা। বাবা বারবার মেয়েকে বললেন বিপদ এলে চলে এস। বাবাকে কথা দিল মেয়ে।

গাড়ি-ঘোড়া সাজিয়ে বিদায় নিল কন্যা। বাবার বাড়ি ছেড়ে অনেকদূর, সীমানা পেরিয়ে স্বামীর ঘরে এল জমিদারকন্যা। সুখের সংসার। চারদিকে সুখ, আর সুখ! আরও সুখ সে মা হচ্ছে। কিন্তু কোথায় যেন অশুভরা ভীড় করেছে।

কোথায়! সে খেয়াল করল তার স্বামী সারাদিন বাড়ি থাকে। আর বের হয় গভীর রাতে। সকালে মুরগী ডাকার আগেই ফিরে আসে ঘরে। চিন্তায় পড়লো জমিদারকন্যা। হঠাৎ সে আবিষ্কার করল, বাবার কথাই সত্যি হয়েছে! তার স্বামী আসলেই ’শয়তান’।

কি করবে সে? পালাবে, তাকে পালাতেই হবে! তক্কেতক্কে রইলো জমিদারকন্যা। বাইরে তৈরী করে রাখলো ঘোড়া। গভীর রাতে স্বামী যেই বের হলো জমিদার কন্যা ঘোড়ায় চড়লো। কষে চাবুক মারলো। পিছনে কি ঘটছে একবারও তাকলো না।

সীমানা পেরিয়ে চলে এল বাবার কাছে। আবার নতুন করে জীবন শুরু। কোল জুড়ে এল ছোট্টছেলে। গত হলেন জমিদার। ছোট্টছেলেও একদিন বড় হল।

অনেক জ্ঞানী হয়ে উঠলো। গির্জার যাজক হলো। কিন্তু শয়তানের রক্ত তার শরীরে! সে তার বিশ্বাস হারাতে আরম্ভ করলো। সে প্রচার শুরু করলো প্রুশীয়দের মধ্যে লুথার মতবাদ। আর এভাবেই এল লুথেরানরা।

(লুথার মতবাদ একটি ভিন্ন মতবাদ, যা প্রটেস্টান্ট মতবাদ বলে পরিচিত। লিথিওনিয়ায় এই মতবাদের জন্ম নিয়ে এ গল্পটি প্রচলিত। এটা জাস্ট গল্প বলেই ধরবেন। কারণ কোন ধর্মকে অবমানা আমার উদ্দেশ্য নয়। ) [সূত্র :ইন্টারনেট]
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।