প্রচারণার এই যুগে গোয়েবলসীয় ধারণা ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করেছে। মিথ্যে কথাকে সত্য বলে বার বার প্রচার করলে মিথ্যাটিও একসময় সত্য বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মিথ্যা চিরদিনই মিথ্যা এবং সত্য সবসময়ই সত্য। তারপরও সত্যকে সত্য হিসেবে প্রচার করা এবং মিথ্যাটিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করার একটা প্রয়োজন আছেই। কারণ অর্ধসত্য বা বিকৃত তথ্য কখনো ভয়াবহ অবস্তার সৃষ্টি করতে পারে।
সাইদীকে চাদে দেখা গেছে এমন একটি বিকৃত তথ্যকে বা ডাহা মিথ্যাকে প্রচার করে কি কান্ডটাই না ঘটলো সারা দেশে? আবার ৫ মের হেফাজতের সমাবেশ সরানোর ঘটানো নিয়েও চলছে মিথ্যাচারের রাজনীতি।
হাইতির গণআত্মহত্যার ছবি, ডাকতের হাতে অটোরিক্সা চালকের খুনের ছবিকে ৫ মে কথিত গণহত্যা হিসেবে চালানোর চেষ্টাও আমরা দেখেছি। ওইদিন ঘটনায় কতজন মৃত্যুবরণ করেছেন সেটা নিয়েও একটি রাজনীতি। বিরোধী দল বলছে হাজারে হাজার, সরকার বলছে মাত্র কয়েকজন। আসলে কতজন মারা গেল সেটা দিয়ে কি রাজনিতি করার প্রয়োজন আছে।
মৃত্যু যদি একটিও হয়ে থাকে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। দেখা দরকার ঐ মৃত্যু ছাড়া ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা যেতো কিনা। কারণ যে পরিবারের মানুষ মারা যায় তারাই বোঝে এর প্রকৃত মর্মবেদনা।
আর যদি ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য এমনতর অবস্থা অনিবার্য হয়ে ওঠে তখন কি সংখ্যা গোনার কোনো প্রয়োজন আছে?
আসলে যেটাই হোক না কেন সঠিক তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। কিন্তু এই তথ্যটি নিয়েই রাজনিতি করছেন সবাই।
বলা যায় তথ্য সন্ত্রাসের মতো ঘটনা ঘটছে। এই সব প্রচার বা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকেই সচেতন করা প্রয়োজন।
ইন্টারনেটে, ফেসবুকে বা ব্লগে তথ্য বিকৃতির হার বেশি। কারণ এক্ষেত্রে কোনো জবাবদিহিতা নেই। তথ্য যারা বিকৃত করেন তারা কেবল বিকৃত রুচির মানুষই নন, বরং তারা অপরাধীও।
পিতা- কন্যার আনন্দময় সময়টিকে তারা বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করে। একছবির সাথে অন্য ছবি বা ঘটনা জুড়ে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। পারভার্টেট মানুষ এতে আনন্দ পায়, এটা নিয়ে রাজনিতি করে। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে সঠিক ও অবিকৃত তথ্য কিভাবে প্রদান করা যায় সেটি ভাবার সময় এসেছে।
ইন্টারনেটভিত্তিক অপপ্রচার ও তথ্যবিকৃতি রুখে দাড়ানোর পাশাপাশি অপরাপর গণমাধ্যম ব্যবহার করা জরুরি।
প্রাম পর্যায়ে এই সব বিকৃত তথ্য সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করার জন্য প্রচারপত্র, প্রমাণসহ পুস্তিকা, পোস্টার এবং সাংস্কৃতিক তৎ'পরতা জোরদার করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ধর্মভীরু। তাদের মনোজগতকে ব্লাকমেইল করে যে সব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে সে বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করতে না পারলে এর মাশুল শিক্ষিত সমাজকেই দিতে হবে। তথ্য পৌছাতে হবে তৃণমূল পর্যন্ত। তৃণমূলে তথ্য সরবরাহের বাহন কি হতে পারে তা নির্ধারণ করতে হবে সৃজণশৗলতার সাথে।
আমাদের দেশের সাধারণ ও সরলমতি মানুষ অপপ্রচারের ফাঁদে পা দিক, এটা আমরা প্রত্যাশা করি না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।