বাংলায় কথা বলি,বাংলায় লিখন লিখি, বাংলায় চিন্তা করি, বাংলায় স্বপ্ন দেখি। আমার অস্তিত্ব জুড়ে বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ।
গতপরশুর পত্রিকাতে একটি খবর আমাদের অনেকেরই নজর এড়ায়নি। খবরটি হল বাংলাদেশের অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ে। স্বয়ং খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন দেশের লোক সংখ্যা ১৬ কোটি ৪৪ লাখ।
বিরাট এক আতংকজনক খবর। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত। মানুষ যাবে কোথায়?
খবরটি প্রকাশের পর ২/১ টি পোস্ট এসেছে এই ব্লগে তাতে ইনিয়ে বিনিয়ে এটাই বলার চেষ্টা করা হয়েছে যে জনসংখ্যা নাকি বাংলাদেশের কোন সমস্যাই নয়। এটাকে নাকি জন সম্পদে পরিণত করা যাবে!!! বিরাট হাস্যকর ব্যাপার। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের একটি ক্ষুদ্র দেশে ১৭ কোটি মানুষ! হায় হায় !! সামনে তো এদের থাকার মতো ঘরবাড়িও দেশে দেয়া যাবে না।
টিনের ঘরকে করতে হবে ২ তলা। আগেকার কুড়েঘরগুলো থাকলে সেগুলোকেও ২ তলা করতে হত।
কেউ কেউ চীনের উদাহরণ দিয়েছেন। চীনের সাথে তুলনা করতে চাইলে আজ থেকে ৪০ বছর আগের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে যখন জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৭/৮ কোটি। চীনের বর্তমান লোক সংখ্যা তার আয়তনের তুলনায় বাংলাদেশের মতো মারাত্বক অবস্থায় কখনোই ছিল না।
তবু তারা এক সন্তান নীতি গ্রহণ করেছে। ফলে চীনে কিন্তু মানুষ আর বাড়ার কোন সম্ভাবনা নাই। তাদের আছে বিশাল কৃষি জমি। আছে শিল্প। সারা পৃথিবীতে আছে তাদের পণ্যের বাজার।
তারা কোন দেশে বাংলাদেশীদের মতো কামলা খাটতে যায় না। বাংলাদেশে খুব বেশী দেরি নাই যে দিন বলতে হবে লোক সংখ্যা ২৫ কোটি। তখন কোন দেশ আর কামলাও নেবে না। তখন কোথায় যাবে আমাদের এতো সম্পদ।
আজকের প্রথম আলোর খবরে প্রকাশ- বন্ধ বাজারগুলো বন্ধ হয়েই আছে, নতুন বাজারও নেই
জনশক্তি রপ্তানি কমছেই, ধাক্কা প্রবাসী-আয়েও
বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা কেটে গেলেও বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি না বেড়ে উল্টো কমছে।
২০০৯ সালের তুলনায় এ বছরের গত নয় মাসে জনশক্তি রপ্তানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর চেয়েও বড় দুঃসংবাদ হচ্ছে, প্রবাসী-আয়ও (রেমিট্যান্স) কমতে শুরু করেছে।
২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে প্রবাসী-আয় কমেছে প্রায় ২ শতাংশ, অথচ আগের অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী-আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ শতাংশ।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, গত নয় মাসে দুই লাখ ৯১ হাজার ৯০৪ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। অথচ গত বছরের একই সময়ে গিয়েছিলেন তিন লাখ ৫৮ হাজার ১৭১ জন।
অর্থাৎ নয় মাসে আগের তুলনায় ৬৬ হাজার ২৬৭জন কর্মী কম বিদেশে গেলেন।
বিস্তারিত দেখুন:http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-10-24/news/103857
এই বিশাল জনসংখ্যাকে কি ভাবে সম্পদে পরিণত করবেন? তাই যদি পারতেন তাহলে ঘরে ঘরে কেন এতো বেকার? কেন কাজ না পেয়ে মানুষ মাস্তানী আর ছিনতাই বেছে নিয়েছে। এই কি সেই সম্পদ???? দেশে কোন কাজ নেই। বাড়তি জনসংখ্যার জন্য বাড়তি কাজ এখানে কখনোই সম্ভব নয়। দেশের বাইরে যারা আছে তারা প্রায় ৭০ লাখ।
তাদের বেশীর ভাগই অনেক ছোট খাট কাজ করে। কোন রকমে পেটে ভাতে টিকে আছে । এই কি সম্পদের নমুনা?? এই সম্পদ যদি অবাধে বেড়ে ২৫ কোটি হয়ে যায় তাহলে তো আপনাদের খুশী হবার কথা। অবশ্য নেতাদের অনেক লাভ আছে। কারণ এক একটি নতুন মুখ মানে এক একটি নতুন ভোটার।
ভোটার মানেই নির্বাচনে তারা কাজে লাগবে। তাদের কাছেই অতিরিক্ত জনসংখ্যা সম্পদ মনে হতে পারে। আমার কাছে এটা আপাতত আপদ ছাড়া আর কিছু মনে হয়না। তাই জনসংখ্যাকে সহনশীল মাত্রায় রাখার কোন বিকল্প নেই।
নিজের দেশের মানুষকে নিজ দেশে কাজ দিতে না পেরে অন্য দেশে কামলা খাটতে পাঠানো কোন গৌরবের কথা নয়।
পারলে এই ৭০ লোককে দেশে এনে কাজ দিন। দেখি কি ভাবে এরা সম্পদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।