উইম্বলডন জয় ছিল তাঁর আশৈশব স্বপ্ন। সেই স্বপ্নটাকে সত্যি করেছেন। অঘটনে ভরা এবারের উইম্বলডন জিতে মারিওন বারতোলি চমকে দিয়েছেন গোটা টেনিস-বিশ্বকেই। মাস দেড়েক আগের কথা, উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টের দাগ হয়তো এখনো মোছেনি। কিন্তু ফরাসি মেয়ে উপহার দিলেন আরও বড় বিস্ময়।
একেবারে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই ঘোষণা দিলেন অবসরের। যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটি মাস্টার্সের দ্বিতীয় রাউন্ডে রোমানিয়ার সিমোনা হালেপের কাছে হারের পরই পরশু ছলছল চোখে বারতোলি বলে দিলেন, আর টেনিস নয়!
হারের পর যখন মাঠ ছাড়লেন তখনো বোঝা যায়নি, ৪৭তম গ্র্যান্ড স্লামে প্রথম শিরোপার স্বাদ পাওয়া মনের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছেন এমন কিছু। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে এসেই বজ্রাহত করলেন সবাইকে, ‘ব্যাপারটা সহজ নয়। আর এটা বলার সঠিক সময় কি না, সেটাও জানি না। তবে সত্যটা হচ্ছে, এটাই ছিল আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
দুঃখিত। ’ কেঁদেকেটে একাকার হয়ে আরও যোগ করলেন, ‘অবসরের ও ক্যারিয়ারের ইতি টানার এটিই সময়। সত্যি বলতে, আমার মনে হচ্ছে চলে যাওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। ’
জার্মানির সাবিনা লিসিকিকে হারিয়ে জিতেছেন উইম্বলডন। বারতোলির দীর্ঘ ১৩ বছরের ক্যারিয়ারের শিখরে উঠেছেন এই ২০১৩ সালেই।
এটা সত্যি, বছরের শুরু থেকেই চোটের সঙ্গে লড়তে হয়েছে ২৮ বছর বয়সী ফরাসিনীকে। একিলিস, কাঁধ, নিতম্ব, কোমর—বারতোলির শরীরের কোথায় হানা দেয়নি চোট! খেলার সময় সারাক্ষণই যন্ত্রণায় ভোগা বারতোলি তাই আর পেরে উঠলেন না, ‘আমার শরীর আর পারছিল না। বছরের শুরু থেকেই একাধিক চোট পেয়ে বসেছিল। এসব নিয়েই উইম্বলডন খেলেছি। ’
স্বপ্ন সত্যি করতে উইম্বলডনে ঢেলে দিতে হয়েছিল সামর্থ্যের সবটুকু।
কাল হয়েছে সেটাও, ‘আমি মনে করি, আমার শরীরে যতটুকু শক্তি ছিল তার সবটুকুই খরচ করে ফেলেছিলাম। স্বপ্নটাকে আমি সত্যি করেছি। চিরকাল এটা আমার সঙ্গেই থাকবে। কিন্তু এখন আমার শরীর সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না। ৪৫ মিনিট বা ঘণ্টা খানেক খেলার পর সারা শরীরে ব্যথা চলে আসে।
অনেক দিন ধরেই এভাবে চলে আসছে। আমি আর পারছি না। ’
উইম্বলডন জয়ের স্বপ্নপূরণ হওয়াতেই সিদ্ধান্তটা এত সহজে নিতে পারলেন। উইম্বলডন জয়ের পর আর মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছেন ২০০০ সালে পেশাদার টেনিসে নাম লেখানো বারতোলি। গত সপ্তাহে টরন্টোতেও দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরেছেন।
সিনসিনাটিতে প্রথম রাউন্ডে পেয়েছিলেন বাই। এএফপি, রয়টার্স।
এক নজরে
পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু ২০০০ সালে।
ডব্লুটিএ শিরোপা জিতেছেন মাত্র ৮টি। দ্বৈতের সাফল্য যোগ করলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১১।
২০০৬ সালে অকল্যান্ডে প্রথম ডব্লুটিএ শিরোপা জিতে প্রথম র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ২০-এ।
গত উইম্বলডন জিতে ৪৭তম টুর্নামেন্টে এসে প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা।
এর আগে গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনাল খেলেছেন একটিই, ২০০৭ সালে উইম্বলডনেই।
ক্যারিয়ার প্রাইজমানি প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।