অবিস্মরণীয় নৈপুন্যে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা নতুন ইতিহাস লিখলো আজ। বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় নতুন উচ্চতায় আসন পেলো। সাকিব বাহিনীকে প্রানঢালা অভিনন্দন জানাই।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে একটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় খেলা হলো চারটি। চারটিতেই বাংলাদেশ জিতে কোন স্বীকৃত ক্রিকেট দলের বিপক্ষে শুধু প্রথম সিরিজই জয় করেনি সাথে তাদের হোয়াইটওয়াশও করেছে।
প্রথম ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে হিসাব নিয়ে আপত্তি করেছিলো কিউইরা। এরপরের ম্যাচ গুলোতে সরাসরি জিতে এর প্রকৃত জবাব দিলো টাইগাররা। বাংলাদেশ দলের আনুষ্ঠানিক প্রশংসা করলেও ঘুরিয়ে ভেট্টরী বলার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ নিজ মাঠের কন্ডিশনের সুযোগ নিয়ে জয় পেয়েছে। প্র্যাকটিস ম্যাচ না খেলায় তারা বাংলাদেশ কন্ডিশনের সাথে খাপ খাইয়ে নেবার সুযোগ পাননি-এ কথাও বার কয়েক বলেছেন। বেশ বিরতি দিয়ে অনুষ্ঠিত ম্যাচের পর ম্যাচ খেলার পরও যদি তাদের কন্ডিশন আত্মস্থ না হয় তাহলে তাদেরকে বড় দল বলার যৌক্তিকতাই থাকে না।
এই সব জয়ের ভেতর দিয়ে আমরা বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের সাবালক হয়ে ওঠার কিছু চিহ্ণ পেলাম। আমরা বাংলাদেশের কাছে এগুলোই প্রত্যাশা করে আসছিলাম। সেগুলো হলো-
ম্যাচের পর ম্যাচ ভালো খেলার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
জেতার অদম্য মানসিকতা।
জেতার জন্য সবাই মিলে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
বিশেষ কোন খেলোয়াড়ের ভালো খেলার বদলে সবার এক সাথে ভালো খেলার চেষ্টা।
একজন না পারলে আরেক জন হাল ধরা।
যে কোন অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে খেলে যাওয়া। যেমন-তৃতীয় ম্যাচে টসে হেরে বৈরি অবস্থায় ব্যাটিংয়ে নেমেও ঘাবড়ে না গিয়ে ভালো খেলার চেষ্টা এবং শেষ পর্যন্ত জয়ী হওয়া।
যে কোন টোটালকেই ডিফেন্ড করার মানসিকতা।
আজ ১৭৪ রান চেজ করতে পারবে না এটা নিউ জিল্যান্ড স্বপ্নেও ভাবেনি। কিন্তু বাংলাদেশ এটাই ডিফেন্ড করা সম্ভব ভেবে তাই করার চেষ্টা করে সফল হয়েছে । এটাই পেশাদারী মনোভাবের পরিচায়ক।
চলতে চলতে কোন কারণে খেই হারালেও আবার ফিরে আসার মানসিকতা। এই সিরিজে বেশ কয়েকবারই বাংলাদেশ খেই হারিয়ে আবার খেলায় ফিরেছে।
এটা অনেক বড়ো অর্জন।
ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচে তা আর না করা।
খেলার মাঝে যে কোন ভাবে অংশ নেবার মানসিকতা। ব্যাটিং ভালো না হলে ভালো ফিল্ডিং করা, বোলিং ভালো না হলে দুর্দান্ত ফিল্ডিং বা ব্যাটিং দিয়ে সেটা পুষিয়ে দেওয়া।
এইগুলো হলো অর্জন।
কিন্তু কথা হলো ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নেবার ক্ষেত্রে টিমে ম্যানেজমেনেটর জঘন্য গেম প্ল্যান বাংলাদেশের জয়রথে সব চেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠেছিলো। কোন প্লেয়ারের খারাপ খেলার পর বারবার চান্স না দিয়ে বদলী কাউকে সুযোগ দেওয়া। বিশেষত: রাকিবুলের জায়গায় শেষ ম্যাচে জহুরুলকে একটা চান্স দেয়া যেতো। শুভ বা নাফিস ভাগ্যগুনে দলে ফিরে দারুন অবদান রেখেছেন। এখানে টিম ম্যানেজমেন্টের সুচিন্তার কোন ছাপ বা ভূমিকা নেই ইনজুরীর কারণে বাধ্য হয়ে ওদের দলে নেয়া হয়েছে।
টিম পর্যায়ে গেম প্ল্যানের এই দুর্দশার শেষ না হলে বিশ্ব কাপে এর জন্য মাশুল গুনতে হবে।
জয়ের আনন্দে আমরা যেন এই ছোটখাট বিষয়গুলো শুধরে নেবার কথা ভুলে না যাই। কারণ বিশ্ব কাপে দলগুলোর মধ্যে ব্যবধান খুব কম থাকে। ছোট একটা ভুলই দলের জন্য সেখানে কাল হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশ এইসব বিষয় ভেবে যেন পরের ম্যাচগুলোর পরিকল্পনা করে।
তাহলে এই জয়ের ধারা যেমন অব্যাহত থাকবে তেমনি ঘরের মাঠে বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের ঘরে সোনার ফসল ফলবে।
ওয়েল ডান টাইগার্স। কিপ ইট অন..... !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।