আমি কেমনে তারে দেখি, তারই কাছে যাইতাম উইড়া- হইতাম যদি পাখি। । তার লাগিয়া পরান কাঁন্দে- জলে ভেজে আখি, কাছে পাইলে রাখতাম বুকে- করতাম মাখামাখি। । তার কারনে সব হারাইলাম- আর নাই কিছু বাকি, শায়খ বেধা পাখির মত- একা পড়ে থাকি।
। কেন এত পাষান সেযে- দেয় যে শুধুই
পালকির কথা মনে হলে এখনও গা শিউরে ওঠে অনেকের। বিয়ের আগে কনেপক্ষের প্রথম দাবি ছিল পালকি আসবে কার। গান ভালো না হলে মেয়ে যাবে না ওই বাড়িতে। ওই পালকি আজ স্মৃতির অন্তরালে প্রায়।
ওই পালকিই এক সময় বর-কনের একমাত্র বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কালের বিবর্তনে এখন আর গ্রামগঞ্জে পালকির ব্যবহার নেই বললেই চলে। পালকি বর্তমান প্রজন্মের কাছে কাল্পনিক বা রূপকথার কাহিনীর মতোই অনেকটা। যেখানে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি বা গাড়ি চলাচলের কোনো ব্যবস্থাই নেই_ এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন পালকি দেখা যাবে কি-না সন্দেহ। সেকালে পালকি ছাড়া বিয়ের বর ও কনের নেওয়ার জন্য বিকল্প কোনো বাহনের কথা ভাবাই যেত না।
কখনওবা জোড়া পালকিতে বর-কনেকে আলাদা বহন করা হতো।
পালকি বহনকারী বেয়ারাদের 'উহুমনা উহুমনা' এবং 'আল্লাহ বল, সামনে চল' শব্দে এলাকা মুখরিত হতো। বেহারারা বর-কনে পালকিতে ধারণ করে বর এবং কনের বাড়ির প্রত্যেক ঘরের সামনে গিয়ে সম্মানী পাওয়ার জন্য বিভিন্ন মনকাড়া সারি গান গাইতেন। মান না দিলে সারিগানের মাধ্যমে অপমানও করতেন। এ কারণে বেয়ারারা ঘরের সামনে আসামাত্রই ঘরের ভেতর থেকে চাচা-চাচি জেঠা-জেঠি, দাদা-দাদি, টাকা বা মান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
বর ও কনে নিয়ে বরের বাড়িতে আসামাত্রই বিভিন্ন অনুষ্ঠানিকতা নিয়ে মহিলাদের ভিড় পড়ে যেত। সে সময় বিয়ের কথা উঠলেই পালকির কথা উঠত আগে। অনেক সময় মেয়ের বাবা বায়না ধরতেন, 'আমার মেয়েকে তুলে নিতে হলে জোড়া পালকি লাগবে। ' বর্ষা মৌসুমে পালকি নৌকার ব্যবহার ছিল। বিভিন্ন কারুকাজে তৈরি করা হতো নৌকা।
পালকি নৌকায়ই সানাই বাজনো হতো। সানাইয়ের সুর সবাইকে মাতিয়ে তুলত।
আধুনিক এবং যান্ত্রিক সভ্যতার এ যুগে ওই সুর এখন আর নেই। আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছে ময়ূরপঙ্খী ওই পালকি আর পালকিতে বসে শোনা প্রথম প্রণয়ের সুর। যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পালকি এখন বিলপ্তির পথে।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় পালকি ছেড়ে এখন নামি-দামি গাড়ি নানা রঙের ফুল দিয়ে সাজিয়ে বর-কনের বাহন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বুধবার মতলব উত্তর উপজেলার চরকাশিমপুর গ্রাম থেকে পালকিতে করে নতুন বউ নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্লভ ছবিটি ক্যামেরা বন্দি করা হয়।
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির একটি অংশ। পালকি হয়তো একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। হয়তোবা পেশা বদলাবে পালকির বাহক বেয়ারাদের।
আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির ইতিহাস থেকে পালকি হয়তো হারাবে না কোনোদিন। কারণ পালকিই তো প্রথম এবং ভ্রাম্যমাণ বাসর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।