আমি রুষে উঠে যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া | ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া।
ইন্টারনেটে পত্রিকা পড়ার স্বভাব আমার বাসায় ইন্টারনেট নেওয়ার শুরু থেকেই। পত্রিকা পড়ার ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করতাম, কোন পত্রিকার ফন্ট দেখতে সমস্যা হলে সেই পত্রিকার ওয়েবসাইট থেকে ফন্ট ডাউনলোড করার সুবিধা। ফন্ট ডাউনলোড করে ইনষ্টল করুন, আর নির্বিবাদে পত্রিকা পড়ুন। ব্যাস! তবে, এই সময়টাতে একটা ভাবনা মাথায় ঘুরপাক খেতো, সবগুলো পত্রিকা আলাদা আলাদা ফন্ট ব্যাবহার না করে যদি একটি ফন্ট ব্যাবহার করতো, তাহলে আর এক একটা পত্রিকার জন্য একাধিক ফন্ট ইনষ্টল করতে হতো না।
কিন্তু সমস্যা দেখা দিলো ফেইসবুক নিয়ে। কিছু কিছু বন্ধুদের দেখতাম ফেইসবুকে বাংলায় স্টাটাস আপডেট করতে। আমি বিজয় দিয়ে বাংলা লিখে ফেইসবুকে স্টাটাস দিয়ে দেখলাম, লেখার পরিবর্তে কতগুলো স্কয়ার দেখাচ্ছে। আমি ভাবলাম, হয়তো কোন সমস্যা হয়েছে। তাই মাইক্রোসফট্ ওয়ার্ডে লিখে আবার স্টাটাস দিলাম।
এবারেও ঘটনা একই। এখানে উল্লেখ করা দরকার, আমি তখনো অভ্র সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। কিন্তু বাংলায় স্টাটাস দিতে আমার খুব ভালো লাগতো (এখনো লাগে)। আর বাংলা ব্লগিং / ব্লগিং সম্পর্কেও আমার কোন ধারণা ছিলো না।
ফেইসবুক স্টাটাস নিয়ে আপাতত তখন ক্ষ্যান্ত দিলাম।
ভাবলাম, আমার দ্বারা বোধহয় অনলাইনে বাংলা লেখা সম্ভব হবে না। এর কিছুদিন পরে ক্যাম্পাসের এক বড় ভাইকে বাংলা স্টাটাস দিতে দেখে উনাকে মেইল করে কিভাবে ইন্টারনেটে বাংলা লিখতে হয় তা জানতে চাইলাম। ভাইয়া শুধু এটুকু বললেন, Avro লিখে সার্চ দে, তারপর পেয়ে যাবি। এই পর্যায়ে আমি অমিক্রনল্যাবের ওয়েসাইটে ঢুকতে সক্ষম হই। কিন্তু আমি এত বড় গাধা ছিলাম যে, মুল অভ্র সফটওয়্যারটি বাদ দিয়ে আমি ‘অভ্র কনভার্টার’ ডাউনলোড করি।
তারপর যা হলো তা আরও হাস্যকর। আমি বিজয় দিয়ে লিখে তারপর প্যারা প্যারা করে কনভার্ট করতাম। তবে, এতেই খুশি যে আমি ইন্টার্নেটে বাংলা লিখছি। একদিন একটি প্যারা কনভার্ট করার পর লক্ষ্য করলাম, দু’তিনটা জোড়া শব্দ ঠিকমত কনভার্টেড হয় নাই। আমি বার বার চেষ্টা করেও সেগুলোকে কনভার্ট করতে পারি নাই।
এবারে আমি খুব হতাশ হয়ে গেলাম। এতদিন পর যদিও একটু বাংলা লিখতে পারছি, তাতেও এত সমস্যা। খুবই মন খারাপ হয়ে গেলো। আমার মায়ের ভাষা আমি ইন্টারনেটে ব্যাবহার করতে পারবো না জেনে, প্রচন্ড মন খারাপ হতে লাগলো। কিন্তু উপায়ান্তরহীন হয়ে এবার আমি সত্যি সত্যিই ক্ষ্যান্ত দিলাম।
আর, বাংলা লেখার চিন্তা মন থেকে পুরোপুরি বাদ দিলাম।
ঘটনার পরের অংশে ক্যাম্পাসের আরেক ভাইয়া, ছন্দ ভাইয়ার বেশ অবদান। ফেইসবুকে উনার দেয়া একটা লিঙ্ক দেখলাম। লিঙ্কের বিষয়টি আমার খুব ভালো লাগলো তাই লিংক ধরে পড়া শুরু করি আর বাংলা ব্লগিং সম্পর্কে একটু ধারণা পেতে লাগলাম। সম্ভবত সেটা সামু ব্লগ ছিলো।
আমি এতবড় গাধা ছিলাম যে, সামু ব্লগে বাংলা লেখার নির্দেশনা থাকলেও আমি সেখানে যাই নি আর পড়িনি। কিন্তু খারাপ লাগতে লাগলো, আমি এখনো বাংলা লিখতে পারিনা!!!
এর মাত্র কয়েকদিন পর আমার ইংলিশ মিডিয়ামে ক্লাস সেভেনে পড়া ছাত্রের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে অভ্র’র কথা শুনি আর তার কাছ থেকে তখনই অভ্র নিয়ে আসি। এবারে ভাগ্য আমার সহায় ছিলো। এটা বলছি এই কারণে যে, ঐ সময়ে আমার পকেটে ‘ফ্ল্যাশ ড্রাইভ’ থাকায় আমি তার কাছ থেকে অভ্র নিয়ে আসতে সক্ষম হই। বাড়িতে ফিরেই ভাইয়ার সেই লিঙ্ক-এ আবারও হানা দেই।
তারপর লিঙ্ক থেকে লিঙ্ক আর আমার বাংলা লেখার হাতে খড়ি (অভ্র দিয়ে)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।