গাজীপুরে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে জমি দখলের পর হাইকোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ করেছে গাজীপুর সদর উপজেলার দণি ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা রুহুল কুদ্দুস সোহাগের পরিবার। তাঁর (সোহাগ) বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানোর অভিযোগও করেছে তারা। অভিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমএ মালেকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আছে। চলতি বছর ৯ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে । হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বাড়ি নির্মাণ করলেও পুলিশ প্রশাসন কোনো সহায়তা করছে না বলেও অভিযোগ করে তারা।
এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জমি উদ্ধার ও সোহাগের জামিনের আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটির সদস্যরা।
গাজীপুর সদরের দণি ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা রুহুল কুদ্দুস সোহাগের ভাই শাহিন অভিযোগ করে কালবেলাকে বলেন, 'সোহাগ এলাকায় গত বছর ছয় শতাংশ জমি (৩৪৫ নম্বর খতিয়ানভুক্ত আরএস ২৫৪৫) ক্রয় করেন। ২০০৮ সালে পাশের ২২৯৯ নম্বর দাগের সাত শতাংশ জমি কিনেছিলেন এমএ মালেক। কিন্তু আইনজীবী মালেক সোহাগের কেনা জমিতে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। সোহাগ তাতে বাধা দিলে গত ২৫ জানুয়ারি এমএ মালেক সোহাগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন।
সোহাগের বিরুদ্ধে দেশের কোনো থানায় কোনো মামলা বা জিডি না থাকলেও এই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে আরো চারটি মামলা করেন এমএ মালেক। গাজীপুর আদালতের সরকার দলের কয়েক আইনজীবীর প্রভাবের কারণে সোহাগের জামিন করানো যায়নি। '
তিনি বলেন, গত ২৪ মে মালেকের আবেদনের পর গাজীপুর জেলা জজ বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে সোহাগের যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপর সোহাগ সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দেওয়ানি কার্যবিধির ১১৫(১) ধারা মোতাবেক সিভিল রিভিশন দায়ের করলে গত ১০ জুন আদালত জমির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। সিভিল রিভিশন নম্বর ২৬৬৭/১০ ।
যা এখনো বহাল আছে। '
সোহাগের ছোট ভাই সোয়েব অভিযোগ করে বলেন, সোহাগের বিরুদ্ধে করা মামলায় জামিন নিতে না পারায় আতœগোপনে থাকাবস্থায় গত ২৩ আগস্ট পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এর তিনদিন পর থেকেই আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিরোধপূর্ণ জমিতে আবারও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছেন চিহ্নিত রাজাকার আবদুল মালেক। কাজ শুরু করার পর জয়দেবপুর থানার পুলিশকে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কপি দিয়ে বিষয়টি জানাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো পদপে নিচ্ছে না।
' জানা গেছে ক্ষমতাসীন কোন কোন নেতার সহযোগিতায় মালেক দাই সুযোগ নিচ্ছেন।
সোহাগের ভাই শাহিন আরো বলেন, 'সোহাগকে গ্রেফতারের পরদিন পুলিশ যথাসময়ে আদালতে না পাঠিয়ে বিকেলে পাঠান। এ কারণে ওই দিন জামিনের আবেদন করা যায়নি। পরদিন জামিন চাওয়া হলে আদালত জামিন না দিয়ে নতুন করে শুনানির দিন ধার্য করেন। সোহগের নিকটাত্মীয়রা জানান, ২ সেপ্টেম্বর সোহাগ ছাড়াও আরো সাত-আটজনের জন্য একই আদালতে মামলার জামিনের আবেদন করা হয়।
সোহাগ ছাড়া অন্যদের শুনানির তারিখ পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে ধার্য করা হলেও সোহাগের শুনানির দিন ধার্য করা হয় দীর্ঘ ২৭ দিন পর। দীর্ঘদিন পর শুনানী শেষে ২টি মামলায় জামিন হলেও একটি ত্রুটিপূর্ণ আইনে দায়ের করা মামলায় তার জামিন হয়নি। এবিষয়ে কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, যে মামলায় বর্তমানে সোহাগ জেলহাজতে আটক আছে সেটি (সি.আর ১৬৭/১০) জাল জালিয়াতির মামলা। অথচ সোহাগের কোন দলিলাদি নিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা হয়নি এবং কোন আদালত তার কাগজপত্র জাল ঘোষণা করেনি। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৫(৩) ধারার বিধান মতে জাল জালিয়াতির মামলা করার পূর্ব শর্ত দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে জাল ঘোষণা হওয়া।
এছাড়া জামিন হওয়া ২টি চাঁদাবাজির মামলা দীর্ঘদিন পূর্বের ঘটনা। দীর্ঘদিনেও মামলা না করার কারণ হিসাবে মালেক দাই বলেছেন, তিনি স্বাভাবিকভাবে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে ভেবে মামলা করেননি। ফৌজদারি আইনে একই বিষয়ে একই রকমের একাধিক এক বছরের মধ্যে সংগঠিত অপরাধের অভিযোগে একটি মামলা করার বিধান থাকলেও একাধিক মামলা করে আসামীদের হয়রানী করার ষোলকলা পূর্ণ করেছেন।
শাহিন বলেন, 'এর আগে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২০ হাজার টাকা বেইল বন্ডে সোহাগের অন্তবর্তীনকালীন জামিন মঞ্জুর করলে এমএ মালেকের হয়ে অন্য আইনজীবীরা হৈচৈ শুরু করেন। পরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওই আদেশ প্রত্যাহার করেন।
শোয়েব আরো বলেন, 'ইতিমধ্যেই এমএ মালেক সোহাগের জায়গার সীমানা দখল করে উঁচু দেয়াল তোলে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন করছেন ছাদ ঢালাইয়ের কাজ। দিন-রাত বিরামহীন চলছে কাজ। এর আগে দলিল অনুযায়ী জমির সীমানা চিহ্নিত করে দিতে সোহাগ গাজীপুর পৌরসভার মেয়রের কাছে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্যে আট মাস আগে একটি আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জমির কাগজপত্র অথবা কোনো আপত্তি থাকলে উপস্থিত হয়ে শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য আইনজীবী আবদুল মালেককে ২০টিরও বেশি নোটিশ প্রদান করেন পৌর মেয়র।
কিন্তু একটি নোটিশেরও জবাব দেননি তিনি, উপস্থিতও হননি। পরে গত জুন মাসে পৌরসভার সাভের্য়ার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সোহাগের জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেন। এতে দেখা যায় আইনজীবী আবদুল মালেক যে জায়গায় বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন সেটি সোহাগের কেনা জমি (৩৪৫ নম্বর খতিয়ানভুক্ত আরএস ২৫৪৫)। অথচ মালেকের কেনা জমির দাগ নম্বর ২২৯৯। '
অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট এমএ মালেক ওরফে মালেক দাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও রয়েছে।
গত আগস্ট মাসে গোপালগঞ্জে দায়ের করা এক মামলার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে মালেক দাই একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন। মামলায় এম এ মালেককে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মুজাহিদ ও মালেক উভয়ে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার অধিবাসি।
বর্তমানে গাজীপুরে বসবাস করলেও এমএ মালেকের পৈতৃক নিবাস গোপালগঞ্জে। ২০০৮ সালে তৈরি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কোটালীপাড়া ইউনিটের সশস্ত্র রাজাকারদের তালিকার ১৮৭ নম্বরে তাঁর নাম রয়েছে।
আগ্রহী পাঠক ডা. এমএ হাসানের নেতৃত্বাধীন ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিংস কমিটির প্রদত্ত তালিকা দেখে নিতে পারেন। এছাড়া উইকিপিডিয়া, বিভিন্ন ব্লগসাইট ও ওয়েব সাইটে রাজাকারের তালিকায় যেসব রাজাকারের তালিকা রয়েছে তাতে মালেক দাইয়ের নাম রয়েছে।
তবে এমএ মালেক কালবেলাকে বলেন, 'আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই গাজীপুর জেলা জজ সোহাগকে জমিতে যেতে নিষেধ করেছেন। উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থার কথা আমার জানা নেই। '
সোহাগ পরিবারের লোকজন বলেন, এমএ মালেক প্রভাবশালী আইনজীবী হওয়ায় সোহাগ দীর্ঘদিন আইনজীবীদেরও পাশে পাচ্ছিলেন না।
'গত জানুয়ারি মাসের আগে পর্যন্ত দেশের কোনো থানায় সোহাগের নামে মামলা তো দূরের কথা, একটা সামান্য জিডি পর্যন্ত ছিল না। অথচ একজন যুদ্ধাপরাধীর অপকর্মে বাধা দেওয়ার কারণে চার-পাঁচটি মামলার দীর্ঘদিন ধরে জেলের ঘানি টানতে হচ্ছে । অনেকদিন পর আইনজীবী নিয়োগ করলেও ক্ষমতাশালী আইনজীবীদের প্রভাবে আইনগত সুযোগ পাচ্ছে না। প্রথমে একজন আইনজীবী তারপক্ষে জামিনের চেষ্টা করলে তাকে বারের নেতারা সতর্ক করে দেওয়ার কারণে ওই আইনজীবী পিছু টান দেন।
যুদ্ধাপরাধী এম এ মালেকের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সি.আর মামলা নম্বর ২৯৩/২০১০ করা হয়েছে।
এতে ১৯৭১ সালের ১৪ জুন কোটালীপাড়া থানার হরিণাহাটি-মধুরনাগ্রা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহিম খানকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার চামুরখী গ্রামের বাসিন্দা মো. রতন খান মামলাটি করেন। মামলায় বলা হয়, বাদীর চাচা মুক্তিযোদ্ধা মো. ইব্রাহিম খাঁ ১৯৭১ সালে হেমায়েত বাহিনীর অধীনে লড়াই করেন। একাত্তরের ১৪ জুন গভীর রাতে মালেক দাইয়ের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর একটি দল ইব্রাহিম খাঁকে হরিণাহাটি গ্রাম থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে রাজাকাররা তাঁকে গুলি করে এবং বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে।
এমএ মালেক কোটালীপাড়ার উলাহাটির প্রয়াত আব্দুল গফুর দাইয়ের ছেলে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রমের বাহিনী আরো অনেক রাজাকারের সঙ্গে মালেক দাইকেও অস্ত্রসহ আটক করেছিল। তবে পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এম এ মালেক কালবেলাকে বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে আনা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে হেমায়েত অস্ত্রসহ আটক করেননি।
' যুদ্ধের সময় আপনার ভূমিকা কী ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। ' তবে তার মুক্তিযোদ্ধার সনদ আছে কিনা সেটা তিনি বলতে পারেননি, এমনকি সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বচনে তার নাম ভোটার তালিকায় ছিল কিনা সেটিও বলতে পারেননি।
যোগাযোগ করা হলে মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম কালবেলাকে বলেন, 'মালেক দাই শুধু রাজাকারই নয়, সে নারী নির্যাতনকারী ও লুটপাটকারীও ছিল। তার সাহসের পুরস্কার দিতে পাকিস্থানি বাহিনী তাকে আলবদর বাহিনীরও সদস্য বানায়। ' হেমায়েত উদ্দিন জানান, তাঁর বাহিনী ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জের ঘাঘর থানা ক্যাম্প থেকে মালেক দাইকে আটক করে।
'এ রকম একজন যুদ্ধাপরাধীকে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাপোর্ট করা ঠিক হয়নি' বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু হেনার ভাই প্রিন্সিপাল আবু হোসেন কালবেলাকে বলেন, গাজীপুরের আইনজীবীরা রাজাকারকে কেন এখনো বহিস্কার করেনি এটা বুঝা গেল না। যাকে গোপালগঞ্জবাসি বিতারিত করেছে, তাকে ওই এলাকার মানুষ শেল্টার দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে এটি খুবই দুঃখজনক। বাংলার মাটি থেকে ওই গণদুশমনদের চিরদিনের মতো বিতারন করতে হবে।
গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. আবদুস সোবহান কালবেলাকে বলেন, 'সোহাগের পে আইনজীবী দাঁড়ানোর ব্যাপারে সমিতির কোনো লিখিত বাধা নেই।
মালেক মিয়া যুদ্ধাপরাধী কি না, সে ব্যাপারে আমাদের কাছে লিখিত কোনো ডকুমেন্ট নেই। '
গাজীপুর বার সূত্রে জানা গেছে, মালেক দাই সর্বসম্প্রতি আওয়ামী (পাওয়ার পলিটিক্স) রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছেন। বারের বিগত নির্বাচনে মালেক দাই আরো দুয়েকজনের সাথে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদে যোগদান করেন। এবিষয়ে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের গাজীপুর বার শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পিয়ার আলী নিশ্চিত করে বলেছেন, যদি মালেকের যুদ্ধাপরাধের মামলায় চার্জশীট হয় তবে তাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুর বারের একজন আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০০৫ সালে গাজীপুর বারে বোমা হামলার সময় যে দুয়েকজন আইনজীবী জেএমবি’র কার্যক্রমকে স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করতেন তাদেরই একজন আব্দুল মালেক দাই।
তিনি আরো জানান, মালেক দাই বরাবরই নিজেকে রাজাকার ভেবে গর্বিত বোধ করেন। এটি আনেকেই জানলেও হয়তো স্বীকার করবেন না। গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাতেম আলী জানিয়েছেন, একজন রাজাকার এই সময়ে আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে ওই দলে যুদ্ধাপরাধী দেশদ্রোহীদের অনুপ্রবেশের অভিযোগকে প্রমাণ করে দিয়েছেন। গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সাবেক এমপি কাজী মোজ্জাম্মেল এজাতীয় ঘটনায় উদ্বেগ ও বিরক্ত প্রকাশ করে বলেছেন, আবর্জনাকে দলে আনলো কে?
এদিকে গাজীপুর বারের কর্মকর্তারা একাধিকবার সাধারণ সভা করে রাজাকার মালেকের পক্ষে কোন আইনজীবী মামলা পরিচালনা করবেনা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল যা বারের সভাপতি অস্বীকার করেছেন। বারের আরেকজন কর্মকর্তা মালেকের পক্ষ অবলম্বন করে বলেন, গোপালগঞ্জে যে মামলা হয়েছিল তাতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়েছে।
তাতে মালেক নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। কিন্তু কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজাকার মালেকের নামে দায়ের করা মামলায় আদালতের আদেশ মোতাবেক কোটালিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিগত ১৪/০৮/১০ইং তারিখে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তাতে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের স্মারক নম্বর ৩০১৭(৮৫) তারিখ: ২১/০৭/১০ইং, ঢাকা রেঞ্জ পুলিশ বিভাগের স্মারক নম্বর ৮৭৯(১৭)/০১/অপরাধ, তারিখ: ২২/০৭/১০ইং এবং গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এর বার্তা নম্বর ১১৮০ তারিখ: ২৩/০৭/১০ এর আলোকে অভিযোগটি সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করায় এজাতীয় যাবতীয় অভিযোগ ও বিচার তদন্তের ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুনালের হওয়ায় রাজাকার মালেক দাইয়ের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থার সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও প্রসিকিউটর সেলের আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম জানিয়েছেন, ওই অভিযোগসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক অভিযোগ তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এই মূহুর্তে বিগ ভলিয়ুমের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু হওয়ায় এবিষয়গুলি বিষয়ে তারা যথেষ্ট সময় দিতে পারছেনা। তবে কাউকে বিচার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবেনা।
নিরীহ ব্যবসায়ী সোহাগ ও তার পরিবারকে আইন আদালতের সুযোগ খাটিয়ে হয়রানীর নিন্দা করেছেন মুক্ত ও শুভবুদ্ধির মানুষ। অচিরেই যেন ওই রাজাকারের বিচার শুরু হয় তারও দাবি জানিয়েছেন অনেকে। অনেকেই অপেক্ষায় আছেন আইনের নিজস্ব গতির বেগ দেখার জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।