সরাসরি টেলিভিশন সম্প্রচারে দেখা গেছে, মসজিদের মিনারে অবস্থান নিয়ে একজন বন্দুকধারী সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের লক্ষ করে গুলি ছুড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও পাল্টা গুলি ছুড়ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানান, মসজিদের ভিতরে অবস্থান নেয়া মুরসি সমর্থকরাও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি করছে।
এদিকে মিশরের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হাজেম আল-বেবলায়ি মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেছেন বলে শনিবার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখপাত্র শেরিফ শায়োকি বলেন, ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আগের দিন মিশরজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মুরসি সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুড কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ১৭৩ জন নিহত হয় বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে দেশটিতে বিক্ষোভ-সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটশ’তে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার সংঘর্ষের পর কায়রোর রামসিস স্কয়ারের আল ফাতেহ মসজিদে অবস্থান নেন ব্রাদারহুডের কয়েকশ’ কর্মী। এরপর থেকে তাদের ঘিরে রাখে নিরাপত্তা বাহিনী।
শনিবার ওই মসজিদ থেকে ব্রাদারহুড কর্মীদের বের করার উদ্যোগ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী।
এরপর উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
গণবিক্ষোভের মুখে গত ৩ জুলাই প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী। এরপর থেকে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে আসছে মুসলিম ব্রাদারহুড।
তারা কায়রোর রাব্বা আল আদাবিয়া মসজিদ প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে মুরসিকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষোভ দমনে ২৭ জুলাই সেখানে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী, যাতে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
ওই ঘটনার পরেও অবস্থান ছাড়েনি মুরসি সমর্থকরা। এরপর তারা আদাবিয়া মসজিদ প্রাঙ্গণের পাশাপাশি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আরেকটি স্থানে অবস্থান নিয়ে লাগাতার বিক্ষোভ করতে থাকে।
এ দুই জায়গা থেকে তাদের সরিয়ে দিতে গত বুধবার অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। ওই অভিযানে অন্তত ছয়শ’ ৩৮ জন নিহত হয়।
এর প্রতিবাদে শুক্রবারকে ‘ক্ষোভ দিবস’ ঘোষণা করে বিক্ষোভের ডাক দেয় মুসলিম ব্রাদারহুড।
ওই দিন জুমার নামাজের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে কায়রো ও আশপাশের এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করে মিশরের অন্তর্বর্তী সরকার।
কিন্তু জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে জুমার নামাজের পর ব্রাদারহুডের কয়েক হাজার নেতাকর্মী রাজপথে নামলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়, যাতে নিহত হয় একশ’ ৭৩ জন। এদিন গ্রেপ্তার করা হয় এক হাজার চারজনকে।
এর প্রতিবাদে সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দিয়েছে ব্রাদারহুড।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।