আমার কোনো কিছু ই ভালো লাগে না । সব কেমন যেনো তিতা তিতা । :(
মানবতাবিরোধী অপরাধে ৯০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারী নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ।
এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, রোববার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে জানান তুরিন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে শনিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে বাংলানিউজকে তিনি এ কথা জানান।
turin20সংস্থাটির এমন বিবৃতি কতটা যৌক্তিক জানতে চাইলে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ আরও বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এমন বিবৃতি ভিত্তিহীন, মনগড়া। এ বিবৃতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক আইনের শিষ্টাচারও লঙ্ঘন করেছে। বিচারিক কোনো বিষয় তো নয়ই, রায় নিয়ে কোনো সংস্থা বা কারও প্রশ্ন তোলারই সুযোগ নেই।
তাই এ বিষয়ে সংস্থাটির বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।
বিবৃতিতে যে পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তার ভিত্তি কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তুরিন আফরোজ বলেন, ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ, বিতর্কিত করতেই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে এসব প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এসব তথ্য সংস্থাটি কোথায় পেয়েছে? কার কাছ থেকে পেয়েছে? বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে তারা পর্যবেক্ষণ করেছে?
তুরিন আফরোজ মনে করেন, আসামিপক্ষের লবিংয়ের সূত্র ধরেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এমন বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
human-1একই বিষয়ে প্রসিকিউটর অ্যাডেভোকেট রানা দাশ গুপ্তের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কোনো মামলা আইনসঙ্গত হয়েছে কি হয়নি, সে বিষয়টি বিবেচনার জন্য রায়ের পর মামলাটি এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন।
আর বিচারাধীন মামলার বিষয়ে প্রশ্ন তোলা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিচার ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপের শামিল।
তিনি বলেন, বিবৃতিতে যে বক্তব্য বেরিয়ে এসেছে তাতে আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এ বিবৃতিটি কেবল পক্ষপাতদুষ্টই নয়, আমাদের বিচারিক নথিতে যা আছে তার সম্পূর্ণ বিপরীত।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর যাদের বিচার হয়েছে বা চলছে তাদের অনেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছেন। এই লবিস্টরাই নানাজনকে দিয়ে কতগুলো বিভ্রান্তিকর বই প্রকাশ করিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বেশ কিছু সংবাদ প্রচার করেও বিচার ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
রানা দাশগুপ্ত মনে করেন, লবিস্টদের অর্থানুকূল্য হয়েই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর ও আদালত অবমাননাকর বিবৃতি দিয়েছে।
গোলাম আযমের মামলার রায়ের পর উভয় পক্ষই যেহেতু আপিল করেছে, তাই এ বিষয়ে সম্ভবত ট্রাইব্যুনালের কিছু করার নেই বলে মনে করেন তিনি।
human-22
তাই অবকাশকালীন ছুটির পর রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলেও আশা করেন তিনি।
তাছাড়া সাপ্তাহিক বন্ধের পর ট্রাইব্যুনালে নিযুক্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সম্মিলিতভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন বলেও জানান এ আইনজীবী।
রানা দাশগুপ্ত আরও জানান, নলেজ অব কমনসেন্সের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল স্বপ্রণোদিতভাবে কোনো মামলার বিষয়ে অনুসন্ধান করতে পারবে। আইনেই ট্রাইব্যুনালকে সে অধিকার দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া গোলাম আযমের মামলা সংক্রান্ত এমন কিছু নেই, যা রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে প্রদান করেনি।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধে ৯০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে এক বিবৃতি প্রচার করে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
গত শুক্রবার এইচআরডব্লিউ’র বিবৃতিতে বিচার প্রক্রিয়ায় পাঁচটি ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়।
এইচআরডব্লিউর দৃষ্টিতে বিচার প্রক্রিয়ায় পাঁচটি ত্রুটির মধ্যে রয়েছে, বিচারকরা সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে তদন্ত করেছে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও বিচারকদের মধ্যে গোপন সহযোগিতা ও পক্ষপাতিত্ব, আসামিপক্ষের সাক্ষীদের নিরাপত্তায় ব্যর্থতা, বিচারক প্যানেলে পরিবর্তন এবং সন্দেহাতীতভাবে দোষ প্রমাণ করতে তথ্যপ্রমাণাদির অভাব এবং সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে বিচারকদের তদন্ত করা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক প্রধানের বিচারে গুরুতর ত্রুটি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার মান রক্ষা করা হয়নি
বিস্তারিত জানতে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।