কিছু মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মানুষ স্বপ্নটা সত্যি করার জন্য ঘুম থেকে জেগে উঠে। জীবন আপনার কাছে সেভাবেই ধরা দিবে আপনি যেরকম থাকবেন।
মুন্নি বদনাম হইতেসে এটা নিয়ে ইদানিং এটা নিয়ে বেশ তোলপাড়। যেসব মেয়েদের নাম মুন্নি তারা সবাই সালমান খান এর দাবাং সিনেমার একটা গান দিয়েই বদনাম হয়ে গেছে।
তবে সব থেকে মজার ব্যাপার হল এই গানটার বিরুদ্ধে মুন্নিদের কোন আপত্তি না থাকলেও ঝান্ডুবাম ওয়ালাদের নাকি বিরাট আপত্তি। মুন্নিরা ঝান্ডু বাম হয়ে যাবে এটাতে ঝান্ডুবাম ওয়ালাদের বেশ আঁতে ঘা লাগসে। ঝান্ডুবাম একটা জনপ্রিয় বাম কোম্পানি। এদের কাজ হল মানুষের মাথা ব্যাথা কমানো। তা মুন্নির হাতের পরশে যার আবার গাল গোলাপি, চোখে মাদকতা, হাটা চলা রাজা বাদশাদের মত সে যদি হেটে যায় তাহলে সবার মাথা ব্যাথা নাকি এমনিতেই কমে যায়।
যাই হোক আমার একটা স্বভাব হইল সব হিন্দি গান বাংলা গান পাইলেই সেটাকে ইংলিশ করে ফেলা। মুন্নি বদনাম হুয়ি, ডারলিং তেরে লিয়ে, মুন্নি কি লাল গোলাপী, নেইন শারাবী, চাল নোয়াবী রে, লে ঝান্ডু বাম হুয়ি ডারলিং তেরে লিয়ে এইটারেও আমি ইংলিশ বানায় ফালাইসি………
Munni goes infamous, for u o darling,
Munni has pink cheeks, drunk eyes, a royal walk,
became Zandu Balm, for u o darling
জগতের বেশিরভাগ হিন্দি সিনেমাই হলিউড থেকে ইন্সপায়ার্ড। দাবাং সিনেমার শুরুতে সালমান খানের গায়ে যে ড্রাম থেকে তরল পদার্থ গায়ে লাগে যাতে মারমারি করতে সুবিধা হয় সেটা ইংলিশ ট্রান্সপোর্টার থেকে নেওয়া। অন্যদিকে বাংলা সিনেমা আবার পুরাপুরি হিন্দি সিনেমার নকল হয়। আমাদের শাকিব খান তো থ্রী ইন ওয়ান।
শাহরুখ খানের বাংলা কপিতেও সে থাকে, আমির খান এরটাতেও থাকে, সালমান খানেরটাতেও থাকে। যাই হোক তার সামনের সিনেমাতে মুন্নি গানটার কপি করা হবে আমি না হয় একটূ আগে ভাগেই তাকে সাহায্য করি।
মুন্নির বদনাম হইসে, সজনী তোমার জন্য
মুন্নির গালডা গোলাপী, চোখটা শারাবী, হাটা কাবাবী
আমি মিল্লাত বাম হইসি, সজনী তোমার জন্য
ও মুন্নিরে ও মুন্নিরে ওলিতে গলিতে খালি তোর কথাবার্তা রে।
কেউ কি একটা ব্যাপার খেয়াল করসেন? মালাইকা ছাইয়া ছাইয়া (দিল সে ১৯৯৮) তে যেমন ছিল এখনও তেমন ও আসে। তাদের মেইনটেইন করার ব্যাপারটা আসলেই দারুন।
আমাদের ঢালিউড এর পপি ১৯৯৬ সালে ৪৫ কেজি নিয়া অমর সানি এর সাথে কুলি ছবিটা করতে আসছিল। ১৯৯৮ সালেই তার ওজন হয়ে যায় ৭০ কেজি। আফসুস। জাতিগত ভাবেই যে কোন কিছুতে আমরা কষ্ট একটু কম করি। ভাল কিছু করতে গেলে কষ্ট করতে হয়।
যাই হোক বাংলা সিনেমার ব্যাপক বিনোদোন থেকে আমি নিজেকে খুব একটা বিরত রাখিনা। আর তাই একবার ফারুক এর একটা সিনেমা দেখে বেশ অবাক হইসিলাম। আমার ধারনা এই জিনিশ বলিউড হলিউড কোথাও দেখাইতে পারবেনা। সেটা হল ফারুক প্রথমে সম্ভবত মারমারি করতে গিয়ে গুলি টুলি কিছু একটা লেগেছে। সেটা কিভাবে হল জানিনা বাংলা সিনেমার শেষের আগে কেউ গুলি খায় এমনটা দেখিনাই।
তাকে হাস্পাতালে রাখা হল। তাকে স্যালাইন দেওয়া হল। ঠিক এই অবস্থায় সে জানতে পারল গুন্ডারা কোন এক স্বজ্ঞাত জায়গায় আছে। সে তখন ইয়া ইয়া বইলা উঠতে লাগল। ডাক্তার বলল উঠবেননা প্লিজ।
আপনাকে স্যালাইন দেওয়াটা জরুরি। এরপরের ঘটনা ভয়াবহ। ফারুক গুন্ডাদের সাথে মারমারি করতেসে। তার স্যালাইনটা ঐ পাশ দিয়ে ধরে আছে নায়িকা। নায়িকাটা যে কে ছিল আমি পুরাই ভুলে গেসি।
চাঁদের আলো সিনেমা দিয়ে চিত্র জগতে প্রবেশ করা ওমর সানি এর আমি ব্যাপক ভক্ত ছিলাম কিন্তু। ওমর সানি আর সানি দেওল এদের ব্যাপার স্যাপার ই আলিদা। সানি দেওল গাদার সিনেমায় নলকুপ টুথপিক এর মত টান দিয়া তুইলা নিয়া মারামারি করে। ওমর সানি অবশ্য প্রেমিক পুরুষ। কবে জানি কোন সিনেমায় দেখলাম মৌসুমি আপা তার বিশাল দেহ নিয়ে ব্যাটমিন্টন খেলতেসিলেন।
সানি ভাই সেখানে আসলেন। কি যে হইল বুঝুনাই সম্ভবত ওমর সানি গরীব মৌসুমী বড়লোক এই জাতীয় ঝামেলা। অমর সানি যে গরীব এটা বুঝানোর জন শার্টের তিনটা বোতাম খুলা। মৌসুমি ব্যাট দিয়ে অমরসানির বুকে বাড়ি দিল। অমর সানি মৌসুমির হাতে কিস করল।
রোমান্টিক সিন হওয়ার কথা কিন্তু ব্যাপার দেখি হেভি সিরিয়াস। অমর সানির ডায়লগ, “ ম্যাডাম, আমি গরীব হয়ে আপনার হাতে কিস করেছি ম্যাডাম। আপনি আপনার হাতটা এখন কেটে ফেলুন ম্যাডাম”। ভাল কথা অমর সানি কিন্তু ডায়লগ দেওয়ার সময় তার মাথা ১৩৫ ডিগ্রি কোন এ বাঁকিয়ে রাখে। এইটা কেন হয় ঠিক বুঝিনা।
এম্নিতে সে ৯০ ডিগি এঙ্গেল এই থাকে। ডায়লগটা দেয় বাঁকিয়ে। আর বেশির ভাগ সিনেমাতেই সে গরীবেরন্ধু অসহায়ের সহায় থাকে কিন্তু চৌধুরী বংশ পাইলেই হইল। তার মাথা ঠিক থাকেনা। চৌধুরী বংশের নামে কলঙ্ক দেওয়ার জন্য সেই বংশের মেয়েদের হাতে কিস (!!) করে।
প্রয়াত জাম্বুর একটা সিন মনে পড়ে গেল। জাম্বু চম্পাকে আটক করেছে। ঘটনার তীব্রতা বোঝানো কঠিন। চম্পার সময়োপোযোগী ডায়লগ, “ শয়তান দেহ পাবি, কিন্তু মন পাবিনা”। জাম্বুর তার টাকএ হাত বুলিয়ে আমার দেখা বাংলা সিনেমার সব থেকে স্মার্ট ডায়লগটা দিল।
“ ওতেই চলবে”।
ইতিহাস না পাতিহাস নামে একটা সিনেমা ছিল। কাজী হায়াত এর সিনেমা। নায়ক তার ছেলে কাজী মারুফ। লেখাপড়া করতে গিয়ে কিছু একটার স্বিকার হয়ে বিপথে যাওয়া ছেলে।
এই ছবিতে খুব হৃদয় বিদারক একটা সিন ছিল। কাজী হায়াত এর মারা যাওয়ার দৃশ্য। মারা যাওয়ার আগে কাজী মারুফ বলেন, বাবা তুমি আমাকে একতা চুমা দাও বাবা, আমার কপালে একটা চুমা দাও বাবা, কতদিন তোমার চুমা খাইনা। কাজী হায়াত কাজী মারুফ এর কপালে চুমা দিতে গিয়ে মইয়ার গেল। কেউ মরা যাওয়াতেও যে এত বিনুদুন পাইতে পারি আগে বুঝিনাই।
ভাল কথা কাজী মারুফ এত চিল্লাপাল্লা করত কেন সিনেমাটাতে সেটা ঠিক বুঝতে পারিনাই। আমার কাজিন এর সাথেই ছেলেটা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে পরত। বেশ শান্ত শিষ্ট ছেলে বলেই জানতাম।
যাই হোক তাই বলে বাংলা সিনেমার ডায়লগ নিয়ে এত হাসার কিছু নাই। বাংলা সিনেমার ডায়লগ ইংলিশ করলেই সেটা অনেক ভাবের কথা হয়ে যাইত।
There are so many stars in the sky but only one moon. Oh yeah!!
এই যে ভাবের কথাটা বললাম। এইটা কিন্তু বাংলা সিনেমার আউয়ুব বাচ্চুর গান মাইরা দিলাম।
আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ মাত্র একটা রে। ইয়াআআহ। ইয়াআআহ।
চিত্র জগতের এক নায়ক কিন্তু আমার দুলাভাই। আমার খালাতো বোনের জামাই। খালাতো বোন ডাক্তার জিনাত অবশ্য সিনেমা জগতের কেউ না। তবে তার বাসায় খুব একটা যাওয়া আসা হয়না। এটা নিয়া আমার ভাইগ্না জিবরাল এর বেশ আপত্তি।
কেন তার বাসায় যাই না। যাই হোক শেষ যেবার গেসিলাম সেইবার শুনে আসছিলাম ডিপজল নাকি অমিতাভ এর থেকে ভাল অভিনেতা। এরপর আর যাওয়া হয়নায়।
ডিপজল এর দুইটা ডায়লগ দিয়া লেখা শেষ করি।
পানি ডুবাইয়া মারে, আগুন পুড়াইয়া মারে, আর এই ডিপজল কেড়বেড়া কইরা মারে।
Water kills by dissolving, fire kills by burning, and this Dipjol kills by kerabering.
সিল লাগাইয়া দিমু।
Seal you down.
নাহ শেষ করার আগে আরেকটা ডায়লগ মনে পরসে। ছবির নাম বুকের ভিতর আগুন।
“আমার বুকের ভিতর যে আগুন আসে তা মিটানোর মত কোন দমকল তোমার কাছে নেই। “
(এইটার সাব টাইটেল দিমুনা)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।